Author: দীপঙ্কর বেরা
পলাশ
মাঠে ধারে পলাশ বৃথাই ফুটে আছে। সন্ধ্যের মুখে এখানে প্রায়ই পাঁচ সাত জনের আড্ডা বসে। হুল্লোড় খিস্তি খাস্তা চলে। ডাল ভাঙে। কিছু করতে পারে না। আজ একটু আগে আর্তনাদ, শীৎকার, পাশবিক ঘটে গেল। পাশে বর্ষা আসার মুখে কচি কচি পাট খেতের পাট গাছ লণ্ডভণ্ড। কাদায় মাখামাখি মেয়েটা গড়িয়ে পড়া রক্তের…
মন কাড়া
১লা বৈশাখের সকাল। প্রতিবছরের মতো এবারও সুব্রত আর পৃথা এসেছে মন্দিরে পুজো দিতে। বছরের প্রথম দিনটিতে মায়ের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে পুজো না দিলে মনটা ভালো লাগেনা। আজ মন্দিরে বেশ ভীড়। হঠাৎ পৃথার আঁচলে টান পড়লো। চমকে পিছন ফিরে তাকালো সে। দেখে পাঁচ ছ বছরের একটা মেয়ে। একা। পৃথা জিজ্ঞেস করল…
ভরা থাক
অন্তরসারশূন্য হয় না আধার কিছু না কিছু গুণানুপাতে অস্তিত্ব ভরা থাকে পাঁজরের ভেতর যাত্রায় মহীমা সজ্জা দূর থেকে চেনা জানা পথিক সম্রাট ভেবেছিল কিছু হবে না যা হয়েছে তাতেও দূরদর্শী সমগ্রের মোহ ভোরে সবাই মিলে কত সূর্য।
রূপের আলেয়া
বাস থেকে নেমেই হঠাৎ দেখা নেহার সঙ্গে। মুখ মেলাতে কিছুটা সময় নিলাম। বললাম – তুই এখানে? নেহা একটু মুছকি হাসল। বলল – হ্যাঁ, এখানে। বালি পুকুরের পাশে আমাদের ফ্ল্যাট। সেই একই রকম সাজগোজহীন কেয়ারলেস তবে স্টেডি। বললাম – আমি নন্দীপাড়ার ভেতরে থাকি। ছেলে এগিয়ে গেছে পরে কথা হবে। নেহা হাত…
প্রেমের দ্বিধায়
দ্বিধায় বিভক্তি রেখে নিজেকে মুক্ত করলে আমি তাই খুঁজে পাই না আমার হৃদয় আমার থেকে কোথায় গেল হারিয়ে । দরজা খোলাই ছিল জানলা দিয়ে হু হু ঢুকে পড়ছে কতসব অজানা বাতাস ; প্রখর সূর্যের সাথে ধুলিকণার দাপাদাপি বিপর্যস্ত সবুজের গা বেয়ে মলয় দৃষ্টি আমি খুঁজি আর খুঁজতেই থাকি । শান্তির…
আগামীর ভরসা
পরিতোষ বেশ চিন্তায় আছে । ছেলে রহিশ আর ক’দিন পরেই জীবনের সেরা পরীক্ষা দেবে ? পড়াশুনায় বেশ ভালই । নম্বরও ভাল পায় । সহকর্মী পলাশ বলে ওঠে – তাহলে আর চিন্তা কি ? টিউশন দিস নি ? পারিতোষ নিজেকে পরিস্কার করতে সঙ্গত দেয় – তা দিয়েছি । বেশ নোট ফোটও…
প্রেমের পৃষ্ঠায়
দিন গুনতে গুনতে হেলে পড়েছিল দিন তুমি এসেই ঝিলিক দিলে কোন বার্তা আমার দিনে লাগল রঙ রাত নির্ঘুম আতব স্নানে মুখর কাজ কোনতেই কোন দ্বিধা নেই সবই যেন গোলাপ রাঙানো বাঁচার অভিজ্ঞান । সেই তুমি ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টায় আমি গোলাপ চাষী হতে পারি নি জ্যোৎস্না ভিজিয়ে মন রাখতে পারি…
শীত শিহরণ
রকমারীর ঘুম ভাঙায় শীত অনুভুতির শিহরণ রুক্ষতার নরম রোদে ফোঁটা ফোঁটা খেজুর হাঁড়ি সঞ্চয় করে কষ্টের ভোরে । গরম খুঁজতে খুঁজতে ওম সেই ছেঁড়া কাঁথার করিৎকর্মা জীবনের দুবেলাকে ডাকে কাঁপন সম্বল মুখ মধ্যরাতে পুরোটাই কুকুরকুন্ডলী । বাহারী ফুলকথা ফল বাহুলে গা ভাসায় উৎসব আচরণ ঝরা পাতাতেও বকুল কথা ঢেউ কুয়াশার…
চেষ্টা
তাপস যে পড়াশুনায় খারাপ ছিল তা নয় । খুব পড়ত । জোরে জোরে । সকাল সন্ধ্যে । কিন্তু কেন জানি না কিছুতেই মনে রাখতে পারত না । স্যার জিজ্ঞেস করলে পুরো বলতে পারত না , আমতা আমতা করে বলত । পরীক্ষায় পারত তবে খুব ভাল না । কিন্তু চেষ্টার কোন…
পাশেই আছি
পাশের বাড়ির ভদ্রমহিলার সঙ্গে আলাপ করার খুব ইচ্ছে ছিল । সবে শহরে এসে আশেপাশে কাওকে চিনি না কেউ কথা বলতে চায় না । যদিও বলে এত সংক্ষেপ যে কি বলব ? হাঁসফাঁস করা প্রাণ পাশের বাড়িতে হানা দেওয়ার চেষ্টা করি । সিঁড়ি দিয়ে ওঠার মুখে দেখা – ভাল আছেন ?…
কু ঝিক ঝিক