Author: সংশয় রহমান
দোকান খুলে বসে আছি, কারোর দেখা নেই
সকাল থেকে দোকান খুলে বসে আছি, কারোর দেখা নেই। আমার গল্পগুলো বেলা পেরোনোর সাথে সাথে বাসি হয়ে যাচ্ছে। ফিরিয়ে দেব না বলে শরত্চন্দ্রের হাট থেকে কিনে এনেছিলাম গল্পগুলো। ঐ যে আমার গল্পের রাজকুমারী আছে না? লম্বা কালো চুল। আর ঐ যে এক্কা দোক্কা খেলা ছোট্ট পুতুলের মতো মেয়েটা? ওরা এখন…
অবসর
আরো একটা রাত ধুলোয় ঢেকে যাক আমার অভিশাপে ভরা কবিতা গুলো অন্ধকার, গাঢ় অন্ধকার হয়ে নেমে আসুক তোর ঘরে। আমার সুপ্ত, প্রায় লুপ্ত অনুভুতির কথাগুলো তুই অহংবোধ বলে ধরে নিয়েছিলি ধরে নিয়েছিলি ওগুলো স্বপ্রচারণা আমি মিথ্যেবাদী ছিলাম না। আজন্ম আমি সত্যবাদী। মিথ্যে পৃথিবীতে জন্ম হয়েছিলো বলে আমি চিৎকার করে কেঁদেছিলাম।…
হাহাকার
এখনই রাত নেমে যাক কতদিন হাহাকার শুনি না, বুকফাটা আর্তনাদ বাতাস চিড়ে এসে পৌঁছায় না কানে। আজই দূর্ঘটনা ঘটে যাক দুমড়ে মুচড়ে যাক দুইচাকা, চারচাকা, ছয়চাকা ছিন্ন কাঁচের টুকরা বিধুক কারো গালে, চোখে। আমি হাহাকার শুনি না কতদিন! যেন মহাকাল পেরিয়ে গেল আমি আঁচলে লুকানো অন্ধকার দেখি না ক্রুর হাসির…
দাঁড়কাক
সমাধির উপর বসে থাকা দাঁড়কাক আমি অশুভ ভেবে ছিটকে সরে এসেছি অথচ পেটে আমার যখন প্রচন্ড ক্ষিধে, যখন আমার প্রার্থনা মিলিয়ে যায় বাতাসে, যখন সমাধির গোলাপ গুকিয়ে যায় সব; তখন ঐ দাঁড়কাকের সাথে ভাগ করে খেয়েছি এক টুকরো রুটি তারপর হঠাত চারিদিক গমগম করে উঠে অসীম শক্তিধর কে যেন বলে…
বহুদিন পর তোমার ফিরে আসা
বহুদিন পর তোমার ফিরে আসা । দীর্ঘশ্বাস, যেন আগ্নেয়গিরির লাভা যেন দু বাহুর মাঝে আঁটকে পড়া জীবন্ত কিছু । যেন চুবিয়ে রাখা ফুসফুস আমার বিশাল কোন সমুদ্রে । বহুদিন পর তোমার ফিরে আসা। যেন রূপার কৌটায় বন্দী আমার অতীত, আমার বয়স আমার কৈশোরের মুক্তি। যেন আকাশ থেকে ছিঁটকে পড়া আমার…
দৈনিক সংবাদপত্র
দৈনিক সংবাদপত্রে আমার মৃতদেহের ছবি । ইনসেটে কাঁদছে প্রিয়জন, তার আড়ালে কত শত দীর্ঘশ্বাস । খুব অন্তরালে মিশে থাকা কিছু স্বস্তিশ্বাস । আমার শীতল বুকের শীতল রক্তে আছড়ে পড়ে কিছু আক্ষেপ, কিছু অনর্থক উপদেশ, কিছু তর্ক, কিছু বিতর্ক, কাঁধে রাখা হাত গড়িয়ে কিছু সান্ত্বনা, ভেজা চোখে জায়নামাজে কিছু অপ্রয়োজনীয় প্রার্থনা…
আমার মন খারাপ হয়ে যায়
শোক সাধনায় আমার ভিজে যাওয়া অতীতের বালুচর; সেখানে রোদ মেখে তোর বসে থাকা; যেন জমে গেছে বরফ, যেন থেমে গেছে শেষ প্রহরের চন্দ্র আমার মন খারাপ হয়ে যায় আমার মন খারাপ হয়ে যায় । অর্ধচন্দ্রের আকাশে মিটমিট তারাগুলো টিটকেরী দিয়ে হাসে খিলখিল আমার মন খারাপ হয়ে যায় ।
ঈশ্বর তুমি কাঁদবে একা
ঈশ্বর তুমি কাঁদবে অনেক, কাঁদবে একা । শ্বাসহীনতায়, বিশ্বাসহীনতায় । যখন, প্রেমহীনতায় কাঁদবে মানুষ, কাঁদবে একা । যখন উপড়ে যাবে শেকড়গুলো কালবোশেখী, ঘুর্ণিঝড়ে । যখন নরক কথায় হাসবে শিশু, হাসবে যুবক । তুমি স্বর্গটাকেই আঁকড়ে রেখো বুকে । প্রার্থনা করি, একটুখানি সুখ পেয়ে যাও তাতে । ঈশ্বর, তুমি একটুখানি সুখ…
আসুক চিরন্তন
ধর্ষন হোক পাটক্ষেতে ধর্ষন হোক অভিজাত হোটেলে ধর্ষন হোক বিবাহিত ঘরের ঘুণে ধরা চৌকাঠে ধর্ষন হোক সাম্প্রদায়িকতার । সকাল-সন্ধ্যা হিসেব করে নয় ।
পুজো হোক ধর্ষনের
ছত্রিশটা অমাবস্যা পার হয়ে আজ তবে ভোর হোক । বকুল ফুলে সূর্যদেবতার পূজো হোক । পুজোর আগে ধর্ষিতা হোক ফুলগুলো । প্রথম কিরণ দেখুক ধর্ষকের অট্টহাসি । দেবীমাতা আর অসুরের প্রণয়ে পুনর্জন্ম হোক আমার । জাতিস্মর হয়ে আবার জন্মাতে চাই আমি ।
কু ঝিক ঝিক