Author: কবিতা তোমায় দিলাম ছুটি
¤ দিকভ্রান্ত ¤
ক্লান্ত-শ্রান্ত দু চোখের পাতায় ঘুম। আমি শুধু ছুটেছি এদিক-ওদিক সাঁঝের বেলা কখন ফুরিয়ে পৃথিবীর শরীর বেয়ে নামে নিশীথ-নিবিড়;খাটের তলায় ইঁদুর – রাতের মাংসে নিক্ষিপ্ত শিশির পৃথিবীর কানে ঝরে যাওয়া সুর দূর-বহুদূর । কখনো ভিতরে কখনো বাইরে ভেঙে-চুড়ে পুনঃ গড়ে তুলি সাজানো গোছানো ঘর থেকে থেকে হঠাত্ মগজের কোষে চারটি শব্দের…
¤ ফাঁসির মঞ্চ ¤
৪২টি হেমন্তের পর আজ ভোরের হৃদয়ে উল্লাস শালিকের হলুদ ঠোঁটে কলঙ্কমোচন সুরের গান ঘাসের শিরায় জমে থাকা হিম ফেঁটে উষ্ণতা;এ মাটির লোমকূপে যে কলঙ্ক পরজীবি হয়ে বেড়ে উঠেছে তার নিধনের সূত্রপাত সূচনা পৃষ্ঠাতে, ছা-পোষা মানুষের ভীরু হিসেবের বাইরে চেতনার মহাবিস্ফোরনে আজ সারাদেশ ফাঁসির মঞ্চ।
¤ মেয়েটির বাংলাদেশ ¤
সেদিন বিকেলে শীত ছিল না রৌদ্র স্নেহসিক্ত লাল সূর্যে মুখরিত উন্মত্ত স্বপ্ন ছিল বর্ণিত। একটি মেয়ে কিছু রং-তুলি চোখে মানুষের,সবুজের, পাখির,ফুলের রক্তের ছবি এঁকেছিল সেদিন; টগবগে ভালোবাসা দিয়ে প্রেমিকের মুখ বুকে চেপে পাথরে এঁকেছিল নাম – বাংলাদেশ।
¤ দু’শ টাকার অর্থনীতি ¤
প্রথম প্রথম শিউরে উঠতাম এখন ওসব ডাল-ভাত! হরতাল-অবরোধ নাম ঝুলিয়ে মোজাম্মেল-মনিরদের নিথর দেহ বার্ন ইউনিটে;নীলমাছি উড়ে ভনভনিয়ে, কত-শত মানুষের আর্তনাদ হাহাকার রাস্তাঘাট-হাসপাতাল করিডরে! এখন ওসবে অনুভূতিশূণ্য রক্তে রক্তে কেমন শীত!
¤ মার্ডার ¤
একটা খুন হবে বলে দিচ্ছি। হঠাত্ কখনো মনের অলিগোলি একটি ধারালো ছুরি কিংবা তিন শিশি সায়ানাইড,ব্যাছ! কোনো এক রাশপূর্ণিমাতে শীত-শীত কাঁথামুড়ি রাতে সকলের অজান্তে ধমনী কেটে পেটে ছুরি গেঁথে নাড়িভুড়ি উল্টিয়ে, মেঝেতে থকথকে রক্ত আর নিথর দেহে নীলমাছির আনাগোনা।
¤ আমি রাস্তায় মা।যাওয়ার চেষ্টা করছি। ¤
– আরে নাস্তাটা তো করে যা। – না।ক্লাসে লেট হয়ে যাবো। – আচ্ছা,দুইটা টোস্ট খেয়ে যা। – ঠিক আছে।দাও। অরুন্ধুতি দেবী টোস্ট এনে দিলেন ছেলেকে। আর টোস্ট হাতে নিয়েই পবন দরজার দিকে এগুলো। – এই টোস্ট খেয়ে জল খেয়ে পরে বেরো। – জল আমার ব্যাগে আছে মা। আমার কিন্তু ফিরতে…
¤ কবির সহিংস বর্ণমালা ¤
অনেকদিন পর আজ কবি বসেছেন তার টেবিল চেয়ারে কালো মলাটের মোটা ডায়েরীটা খুলে একটি সস্তা বলপেন হাতে, একটি প্রেমের কবিতা লিখবেন বলে; বহুদিন হল প্রেমকাব্য হয়না লিখা। আজকের কবিতায় তিনি লিখবেন – লাল চুড়ি সবুজ শাড়ি পড়া এক তরুণীর কথা, নীল পাঞ্জাবী পড়া
¤ চলো মানুষ উড়াই ¤
আরো অনেক কিছুর মতই আমি কখনো দেখিনি আকাশের বুকে ফানুস উড়ানো, একটা-দুটো কিংবা অগুণিত মিটিমিটি আলোয় জ্বলন্ত রং-বেরঙের ফানুস; তরতরিয়ে উঠে যাচ্ছে পৃথিবীর বুক বেয়ে।আকাশেতে। বড্ড শখ;একদিন মনের সুখে ফানুস উড়াই।কোনো এক লক্ষ্মীপূর্ণিমাতে চাঁদের রূপালী আলো ফেলি উড়ন্ত ফানুসে
¤ ক্লান্ত রাত্রি ¤
রাতের গা বেয়ে ঝরে পড়ছে ক্লান্তি পৃথিবী ধীরে ধীরে নিস্তেজে হচ্ছে কোটরবন্দী ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস ফেলছে বৃক্ষছায়াগুলি। ঘরে ঘরে বাতিগুলো নিভে গেছে বহুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি,ধুকছে শুধু জীবন নিস্তব্ধতায় ডুবে গেছে রাতের সাতকাহন। কোনো কোনো ঘরে চলছে শুধু ফিসফাস, দম্পত্তিযুগল মৈথুনসুখ শেষে ঘাম ছেড়ে হাঁপিয়ে নিচ্ছে শ্বাস। বহুদিন নক্ষত্রগুলো নিয়েছে স্বেচ্ছা…
¤ ভিনদেশী – ভুবন ডাঙার হাসি ¤
[ উত্সর্গঃ দ্রুপদ রঞ্জন মিত্র ] তোমরা কি কেউ আমায় দেবে ভুবন ডাঙার হাসি? শারদীয় কাশে আজ ভরে গেছে জলপিয়াসী নদী, গত আশ্বিনেও শুনেছি হৃদয়ভরে প্রেয়সীর আঙ্গুলে হাসি। ঐ যে দেখ ঐ জলপিয়াসীর ঘাঁটে সে থাকতো বসে প্রতি গোধুলি, নিবিষ্ট মনে,স্বপ্নবিভোর চোখে জলে দেখতো আকাশের প্রতিচ্ছবি। বসে থাকতে থাকতে হঠাত্…
কু ঝিক ঝিক