Author: অ্যাডল্ফ বিচ্ছু
ভ্রমণ
ভ্রমণ কর আমাকে। আমার মাঝে যা কিছু আছে যা কিছু অল্প কিংবা বৃহৎ যা কিছু মহৎ সৌন্দর্য কিংবা যা কিছু তড়িৎ আশ্চর্য! ভ্রমণ কর সবকিছুই। সেখানে পবিত্র জ্যোৎস্নার দুধ শুষে নিয়ে কোমল হৃদয় ঘুমিয়ে পড়ে তুলোমেঘ ড্রেসিং করে দেয় রক্তাক্ত পাহাড়ের ক্ষত গায়ক মাঝি বৈঠাকে বানিয়ে নেয় সুরেলা বাঁশি উদ্বাস্তু…
তোমার চুমু
তুমি যে পথেই হেঁটে যাও সে পথেই তোমার মানবতাবাদী ঠোঁট থেকে ত্রাণের মত ঝরে পড়তে শুরু করে অজস্র চুমু। আর সেই চুমুর লোভে শহরের সকল তরুণ তোমার পিছু পিছু হাঁটে শরণার্থীর ছিন্ন বস্ত্র গায়ে ছদ্মবেশে। তাদের জিহ্বা থেকে হিংস্র লোভ কুকুরের জিহ্বার লালার মত ঝরতে থাকে। তারা সেটা আটকে রাখতে…
জার্নি বাই ট্রেন
১ ট্রেন ছেড়েছে দুঘণ্টা লেট করে। এখন আবার এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে আধ ঘন্টা হল। কেন দাঁড়িয়ে আছে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম চারদিকে রাজ্যের অন্ধকার। অনেক দূরে ছোট্ট একটা কুপির মত জ্বলছে। আর কোন জায়গায় আলো নেই। কোন অঁজপাড়া গাঁয়ে এসে পড়লাম কে জানে। রাত তিনটা।…
স্বৈরাচারী
তোমার সরকার একটা স্বৈরাচারী সরকার। যাকে তাকে ধরে নিয়ে যায় হাজতে বিভিন্ন অজুহাতে। ইচ্ছেমত পেটায়। অভিযোগ গুরুতর হলে পিটিয়ে মেরেও ফেলে। চারদিকে সমালোচনা ডানা মেললে তখন মিথ্যা মামলা সাজিয়ে সত্য দড়িতে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। ন্যায়বিচারের বাণী তখন সরকারী পত্রিকা-চ্যানেলে ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়। তারপরও আমি তোমার প্রেমে পড়লাম। লোকে আমাকে…
কবির সাথেই করো প্রেম
প্রেম যদি করতেই হয় তবে করো কোন কবির সাথে। সে তোমার কপালকে বলবে উর্বর জমিন। তারপর সেখানে চুমু খাবে আর বলবে, ভালোবাসার বীজ ছড়িয়ে দিলাম। যতটুকু উঠবে ফসল তার সবটাই আমি তোমাকে দিলাম। প্রেম যদি করতেই হয় তবে করো কোন কবির সাথে। সে তোমার ঠোঁটকে বলবে, সূর্যমুখী। তারপর ভ্রমরের মত…
আমার বান্ধবীরা
আমার বান্ধবীরা প্রত্যেকেই গুণবতী এবং রূপবতী। তারা এতোই গুণবতী যে তাদের পাশে বসলে আমাকে মুখরোচক অপদার্থ মনে হয়। তারা এতোই রূপবতী যে তাদের পাশে বসলে আমাকে রপ্তানিযোগ্য কয়লা মনে হয়! আমার বান্ধবীরা একেকজন একেক কাজে পারদর্শী। কেও গান গাইতে পারে। কেও নাচতে পারে। কেও ছবি আঁকতে পারে। কেও আবৃত্তি করতে…
তোমার যত জিজ্ঞাসা
আমাকে জিজ্ঞেস করো না, ভাল আছি কি না। মিথ্যে বলতে বলতে আজ আমি মৃতপ্রায়। আমাকে বরং তুমি জিজ্ঞেস করো, তোমার কি মন খারাপ? আজ কি ঘর থেকে বেরিয়েছ নাকি সারাদিন ঘরেই ছিলে, চুপচাপ, একান্ত নিরিবিলি? আমাকে তুমি জিজ্ঞেস করতে পারো, গতকালকের ঝড়ে কটা আম তোমার উঠোনে পড়েছিল? কতগুলো ভাল ছিল…
তোমার জন্য আমার যত ঘৃণা
তোমাকে দেখলেই ইদানীং রাগগুলো মেঘের মত জমে যায়। প্রকাণ্ড বজ্রপাতে বৃষ্টির মত ঘৃণা ঝড়ে পড়ে অভিমানের পাহাড় বেয়ে। আমি ঠায় দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকি। আমার ঠান্ডা লাগে না। তোমাকে যে আঙুল একদিন ভালোবাসত মায়ের মমতায় স্পর্শে স্পর্শে ততোধিক কোমলতায় কবিতা লিখত সে আঙুল গভীর বিষাদের ক্ষতে জর্জরিত। নিজেকে ঢেকে নিয়েছে অস্পৃশ্য…
জীবন
জীবন সে তো পাহাড়ের চেয়েও উঁচু উচ্চতর মেঘ ভেদ করে উঁকি দেয় নাক্ষত্রিক দেহ দেখে বিমুগ্ধ হয় এমন সত্ত্বা। জীবন সে তো বৃক্ষের শিকড়ের মত ফুটিয়ে তোলে ভূমিচাদরে নাকশিক ভালবাসা।
সুইসাইডাল নিমন্ত্রণপত্র
তোর বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রের উল্টো পাশে আমি সুইসাইড নোট লিখলাম- আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ডাকপিয়ন। রাষ্ট্র তো তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়নি। সে কেন নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে এলো? আর তুইও তো নির্দোষ। ঈশ্বরের হাতে জন্ম, মৃত্যু এবং বিয়ে। স্কুলে ভর্তির আগে আমার মা বলেছিল।
কু ঝিক ঝিক