Author: সাদিক আল আমিন
লিপ্সা
লকলকে পাটকাঠির মতো সরু সঙ্গমকামী ধবল হাত ছড়িয়ে পড়তে চাইছে শ্বেতবক্ষভূমে। নিতম্ব থেকে ঢলে পড়ছে রোদ, জোছনার এখনো দীর্ঘকালীন মাসিক ক্রমেই দীর্ঘায়ত হচ্ছে। এসব আমলে নিয়ে অথবা না নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে লিয়াকত রোদ-জ্বলজ্বলে তীব্রতাপ কংক্রিটের ওপর দিয়ে। অভ্যঙ্গ সতর্ক দৃষ্টি মানুষের চোখ এড়াচ্ছে। বালিকার আঙুলে দরজাচাপা লোহার মতো শক্ত করে…
ভ্রুণ
ভ্রুণটা ধীরে ধীরে মাতৃগর্ভ থেকে নেমে এল ধরণীতে। মাতাল ভ্রুণ। ফকফকে চেহারার। দেহটা কালো। শিশ্ন ছোট্ট লাল। খতনা দিয়ে দিলেন ডাক্তার। মায়ের নাভি থেকে কেটে ফেললেন তার নাভির সংযোগ। ভ্রুণটা এখনো কাঁদছেনা। নিস্তেজ হয়ে শুয়ে আছে হাত-পা ছড়িয়ে। মাথার চুল হলুদ। ‘না না ভাবী, বাচ্চা হয়নি। আস্ত একটা ভ্রুণ। পরিস্ফুটনের…
কাঙ্খিত মৃত্যুকে ঘিরে জগতের তাত্ত্বিক আয়োজন
আমি ঘুমিয়ে পড়লে আমার পারিপার্শ্বিক জগৎ জেগে ওঠে। নিত্যকার মতো অফিস যায়, জ্যামে পড়ে, শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘরে ফেরে। যখন আমি ঘুমিয়ে থাকি, অবচেতনে কর্মরত আমার পারিপার্শ্বিক জগৎকে স্বপ্নে দেখি। ওরা শুধু একজন বা কয়েকজন নয়, হাজার হাজার জন। হাজার হাজারটা স্বপ্নের আদলে গড়ে ওঠে তারা। ধীরে ধীরে তাদের…
জালালের গল্প : প্রসঙ্গকথা ও অন্যান্য
‘জালালের গল্প’ চলচ্চিত্রটিকে মূলত চলচ্চিত্র বলা যায়না। বলা যেতে পারে তারো থেকে কিছুটা বাড়িয়ে। একটি সফল, সার্থক মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস বলা যেতে পারে। কিংবা বলা যেতে পারে সহজাত জীবনপ্রবাহের একটি সম্মুখ চিত্র। শিল্পোতীর্ণ আবার একেবারেই সাদামাটা বলা যেতে পারে। আবু শাহেদ ইমনের কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ, সম্পাদনা ও পরিচালনায় জন্মরুপ লাভ করেছে…
এখনো সময় খেলে যায়
নিরবধি জেগে জোছনা এখনও, মনভোলানো রাতে তার শাদারঙা মুখের ওপর ফুটে আছে সতরঞ্চির চাল গেরুয়া প্রজাপতি অবচেতনে খুঁটে খেয়ে মগজ ঢেঁকুর তোলে কৃতজ্ঞ বাসনায়; তার হারিয়ে যাওয়া, হলদে পাঞ্জাবির কলারে লেখে গল্প; হ্যাঙ্কারে ঝোলে সুখ আড়ালে বসে চড়কা কাটে রসিক রহস্যের মানুষ আমি খুঁজি তাকে অনন্ত, বলি দেখা পেলে আড়ালে…
আত্মকথন
আমি মূলত কোথাও নেই; না প্রেমে, না ফ্রেমে এই সর্বোত্তম উত্তমপুরুষ আমি কখনো হাসি ভাঙা পেষণ দাঁতের নিচে ঝোলে আমার ঠোঁট সে, ইদানিং কালোর চেয়ে বেশি কালো হতে চায় আদতে আমি অলস, নিমগ্ন বসে শালিক দেখি; আঁকি আমার পেইন্টিং, কোলাজ রঙ সব শূণ্যে ভাসে ওদের জড় করতে তৎপর হই; গোধূলি…
কবিতা
দশমাস দশদিন পর একটা কবিতা প্রসব করবো আজ তোমার দেওয়া অসংখ্য বর্ণমালা আমার ভেতরে ঢুকে পড়লো, ক্ষণিকের কম্পনে কোনটা শেষমেষ টিকতে পারবে— তুমি কি জানো অনিকেত? কার বেশি ক্ষমতা! তিনমাস পরেই দৌড়োদৌড়ি, ইসিজি, আল্ট্রাস্নোগ্রাফি ডাক্তার-ক্লিনিক, ধীরে পায়চারি আড়ালে থেকে শূণ্য জঠরে বড় হচ্ছে কবিতা অথচ আমার কাব্য-প্রসব-বেদনা উঠলো যেদিন, জানো…
ওদের জন্য দু’টুকরো বেদনা
‘যেভাবেই হোক মুক্তি চাই, আমরা রোহিঙ্গা’ পুনর্বাসনের হাহাকার শুনে শুনে পঁচছে কান অথচ মানবিকতার স্থানটি খোলা করোটির মতো পড়ে আছে এখনও— কাঁটাতারে ঝোলা ছিলো আমাদের বোন, ফেলানী আর বালুচরে চাপা পড়া আইনাল, ছোট্ট শিশুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমাদের অকর্মণ্যতা, অনুভূতিহীন পাশবিককর্ম— বোধের উদয় হলে রাজনীতি, কূটনীতি কদাচিৎ নাফ…
সম্পর্ক
‘কিসের বাতিক আছে ছেলেটার? আলট্রামর্ডান নাকি পুরোপুরি গেঁয়ো টাইপ আবেগ বোঝেনা, নির্ভার কবি হলো কিভাবে? যত্নে কি রাখতে পেরেছে একমাত্র বকুলচাঁপা?’ ‘এ্যাডজাস্টমেন্ট বোঝেনা বোলেই হয়তো প্রাত্যহিক সম্পন্ন লাগাতার কলহ ওদের বউটাও ভীষণ রাগী, ভালোবাসা-আদর এসব চায় পুরনো কথা তুলতেই আগুনের স্পার্ক যেন’ ‘যাই হোক, অতীত তো সবারি আছে, নয়? ভুলে…
আপনার সন্তান কিভাবে বেড়ে উঠছে
একটা শিশুর বেড়ে ওঠা যেমন নিতান্তই যাচ্ছেতাই ব্যাপার নয়, তেমনি পিতামাতার এক্ষেত্রে হাত গুটিয়ে বসে থেকে তার সন্তানকে প্রকৃতিগতভাবে বেড়ে উঠতে দেওয়াটাও কোনো সহজ ব্যাপার নয়। শিশুর মানসিক এবং শারীরিকভাবে বেড়ে ওঠার পেছনে যতোটা না পারিপাশ্বিক পরিবেশ ভূমিকা রাখে, তার চেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে পরিবার। বিশেষ করে পিতা-মাতার কাঁধে শিশু…
কু ঝিক ঝিক