Author: হাসান মেহেদী
সৌন্দর্য্যের বিষন্নতা,মৃত জীবন,নিষ্ঠুরতা
১।সৌন্দর্য্যের বিষন্নতা একদিন চাঁদ দেখে আমি না খেয়ে ছিলাম, কেউ বলেনি,খেতে এসো। যে দিন আত্মহত্যা করতে গিয়ে তুমি ফিরে এলে, সে দিন ভরা পূর্ণিমা ছিলো। সমুদ্রে, নীল জল আর জোৎস্নার সঙ্গম; জলের নিচে চাঁদের ছলছলানি, চারপাশে কি এক বিষণ্ণতা,মলিনতা। এরপর এক পূর্ণিমায় জেনেছি, চাঁদ কাঁদতে জানে না,জানে কাঁদাতে। ২।মৃত জীবন…
যেখানে পথ নেই কিঙবা যাদের আকাশ নেই
১। মহাদেবের মদের দোকান, আমি আজন্ম পিপাসী। শায়লা নগ্ন, তাঁর কামুক দৃষ্টি, কিন্তু আমার চোখে রাজ্যের ঘুম। ২। ফুটপাতে দাড়িয়ে সিগারেটের কাব্যিক ধোঁয়া ছেড়ে, মানুষটা বৃষ্টি দেখে। এই ফুটপাতে আজ কেউ ঘুমোবে না। তবে তাঁরা কোথায় ঘুমোবে? মাঝরাতে বৃষ্টি দেখতে দেখতে তাঁরা তখন কি ভাববে? ৩। অনামিকা। সবার অলক্ষ্যে যেই…
দূরত্ব
কফির পেয়ালা এগিয়ে দেওয়ার দৃশ্যটা এঁকেছি তোমাকে না বলে, এরপর, দূরত্বের রেখা টেনে দিলে হঠাৎ’ই, ভাবনায় শূণ্যতা, ঘুট-ঘুটে অন্ধকার ভেতরে,বাহিরে… ভ্যন্টিলেটরের ভাঙা কাঁচ গলে যেদিন তামাটে জোৎস্না ঢুকে পড়ল, তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে প্রেমের ঝুনঝুনি বাজিয়ে তুমিও এলে সেদিন… মুখ থুবড়ে থাকা কথা, তোলপাড় করা আবেগ, খুজে পেলাম না কাউকেই, দূরত্বের কাঁটা…
মোহগ্রস্থ প্রেম
যদি দূরে উড়ন্ত ক্ষুদ্রবিন্দু চিল দেখে অবাক হও, যদি কাশবনের আকাশে শাদা মেঘের ভেসে যাওয়ায় চোখ স্থির হয়ে থাকে। যদি ঝুম বৃষ্টিতে তোমার খুব ভিজতে ইচ্ছে করে, যদি জোৎস্নায় তুমি হেটে যেতে থাকো দূর থেকে দূরে বেখেয়ালী ভাবে… তবে তুমি মোহগ্রস্থ, এই মোহ কোনো নারীর প্রতি না, এই মোহ অডেল…
রহমত চাচা
দেখা হলেই রহমত চাচা গালভর্তি হাসি দিয়ে কথা বলেন। কাঁচা-পাকা দাড়ি গোপ।আর কপালের কাটা দাগটার মত প্রৌঢ় বয়সি মানুষটার ভাগ্যটাও কেমন যেনো! সারা দিন অন্যের জমিতে খেটে দিন শেষে বস্তা ভর্তি গাল-মন্দ, দু সের চাল আর এক হালি ডিম নিয়ে বাড়ি পিরে।বাড়ি বলতে একচালা একটা ঘর। পাশেই নারিকেল পাতার চাউনিতে…
স্বরলিপির সরলতা
১. ত্রিচক্রযান কুয়াশা কেটে কেটে এগিয়ে যায়, ঘাপটি মেরে বসে থাকে বিড়াল, ঘুমঘুম চোখে রাত থেকে দিন হওয়ার সময়টা দেখে, ভাবে গাছ গুলো এতো দৌড়ায় কেনো! ত্রিচক্রযানের দৌড়ে বিড়াল গর্ভগৃহে এসে পড়ে, যেখানে কত সহস্র শৈশব খেলা করে… ২. ছাইদানিতে ছাই জমে থাকে, জানালার ওপাশে কুয়াশার মিছিল, জমে থাকে পৃষ্ঠা…
প্রেম- দুর্ভেদ্যতা
সন্তানের মুখে স্তন গুঁজে দিয়ে শুয়ে আছে মিলি।হৃদয়ে শুনশান নীরবতা।বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে।ঝুম বৃষ্টি।জানালা খোলা।জানালা পেরুলেই ঘন পাহাড়ি জঙ্গল।জঙ্গলের কোল ঘেষে পাহাড়ি ঝর্ণা।বিকেলবেলা মিলি দাড়িয়ে থাকে জানালায়।ঝর্ণায় বৃষ্টির রিনিঝিনি শব্দ খোজে।বৃষ্টি খুব ভালো লাগে মিলির।বৃষ্টি এলে সংসারের পিছুটান ভুলে যায় সে।খিটখিটে মেজাজ এক নিমেষে উধাও হয়ে যায়।একটা কালো বিড়াল দরজার নিচ…
চন্দ্রবিন্দুতে বিসর্গ
প্রতি পূর্ণিমারাতে জাফর তার আধা পাকা বাড়ি ছেড়ে দূরে খোলা মাঠে সিদ্ধি নিয়ে বসে।সিদ্ধিতে টান দিয়ে সে তার মায়ের কথা ভাবে।বছর দশেক আগে বিএ পড়া অবস্থায়,মায়ের গয়না চুরি করে সে মিতুকে নিয়ে পালিয়েছিল। গয়না চুরির লজ্জায় গত বছর মায়ের মৃত্যুতেও জাফর বাড়ি ফিরেনি। ইশ্বরদিতে পৈত্রিক ভিটা ফেলে বন্ধু জাহিদের সহযোগীতায়…
১ টাকার কয়েন, একটা পেয়াজু
হাতের সিগারেটটা পেলে দেয় অমল।বড় রাস্তার দুপাশে চোখ বুলায়।সন্ধ্যা নেমে আসছে। মানুষজন তেমন নেই।যেই দেয়ালটার সামনে সে দাড়িয়ে ব্যাচেলরদের রুমমেট আবশ্যক টু-লেটে তা পুরোপুরি ঠাশা। ‘পড়াতে চাই’ উল্লেখ করেও কয়েকটি কাগজের টুকরো দূরত্ব বজায় রেখে এখানে-ওখানে লাগানো।তার নিচে ফোন নাম্বার দেয়া। অমল মৃদু হাসে।পকেট থেকে কলম বাহির করে।ঐ নাম্বারটার নিচে…
শব্দময় মৃত্যুঘুম
ফেলে এসে লাটিম কাটাকাটির শৈশব, আঙ্গুলে হিসেব করি বেঁচে থাকার দৈর্ঘ্যপ্রস্থ। চাঁদ হাটতে জানে না শুনে ব্যাথা পেয়েছিলাম খুব, কেউ শুনতে পায়নি। নাকের নিচের গোঁফ রেখায় দেখতে পেয়েছি পবিত্রতার শেষ সূর্যাস্ত। কৈশরের পুরোনো এক প্রেমিকা আমাকে শেষবার কাঁদিয়েছে, শিখিয়েছে জ্যামিতিক কান্নার সূত্র। এরপর কতকাল চলে গেলো, এখন আমি মানুষ খুঁজি,মানুষের…
কু ঝিক ঝিক