কি নাম দেই তার? মিতু মিতা বা মিতে!না, নাম হিসেবে মিতে নামটা বড্ড বেমানান। মিতা বা মিতু, হ্যাঁ তা দেয়া যেতে পারে। মিতু-ই ভাল, মিতার শেষ আকারের উচ্চারন টা দীর্ঘয়িত হয় বলে দম দিতে হয় বেশি, তার চাইতে মিতুই থাক। তো, আমার গল্পের নায়িকার নাম মিতু রাখাই সাব্যস্ত হল যদিও তাকে আমি একান্তে নিরলে মিতে বলেই ডাকি।
কি নাম দেই তার? মিতু মিতা বা মিতে!না, নাম হিসেবে মিতে নামটা বড্ড বেমানান। মিতা বা মিতু, হ্যাঁ তা দেয়া যেতে পারে। মিতু-ই ভাল, মিতার শেষ আকারের উচ্চারন টা দীর্ঘয়িত হয় বলে দম দিতে হয় বেশি, তার চাইতে মিতুই থাক। তো, আমার গল্পের নায়িকার নাম মিতু রাখাই সাব্যস্ত হল যদিও তাকে আমি একান্তে নিরলে মিতে বলেই ডাকি।
মিতু একালের মেয়ে, ফিটফাট স্মার্ট এবং শিক্ষিতা তো বটেই সে তুলনায় আমি তার সাথে বড় বেমানান। আমি গ্রামে মানুষ আর ও শহরের উচু তলায় জন্ম নেওয়া বনেদি ঘরের মেয়ে। লেখাপড়ায় আমার মাথা ভাল নয় কিন্তু ও ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ালেখা করা মেয়ে, বাইরে লেখাপড়া শেষ করে সে এখন উচ্চ বেতনে চাকুরী করে। না না, চাকুরী বলতে শখের বসে চাকুরী, কিছু একটা করে সময় পার করতে হয় তাই করা। আমি নিম্নবিত্তের মানুষ, মাঝারী মাপের চাকুরীজীবী। মাস শেষে নানা খরচের হ্যাপা। বাবার ওষুধ, মায়ের মাস কাবারি টাকা, ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ আর বোনের বিয়ের চিন্তায় মাসের প্রথম থেকেই চ্যাংদোলা হয়ে অফিস যাত্রা। মেস খরচের বাইরে আর কোন বাড়তি না থাকায় বিলাস ব্যসনের চিন্তা মাথায় ঢোকে না। মিতু নিজ গাড়ি করে অফিস আসে বাসায় যায়, তবুও একদিন ওর সাথে মিলে গেল!
আমি কিছু বাড়তি টাকার আশায় চাকুরী টা পাল্টাতে চাইছি, যা হোক যেটুকুই বাড়তি পাই সেটাই আমার জন্য অনেক। আমি জানি, টাকার পরিমান যে হারে বাড়বে তার চাইতে অনেক উচ্চ গতির জ্যামিতিক হারে টেনশনটা কমতে থাকবে আর সেটা বলাই বাহুল্য। অফিসে এ নিয়ে দেন দরবার করেও লাভ নেই, পরপর কয়েক দফায় এ নিয়ে কথা বলেও লাভ হয়নি। এখন ভালোয় ভালোয় একটা নতুন চাকুরী জুটিয়ে নিতে পারলেই বাচি। আমার কোনও ঘনিষ্ঠ বন্ধু নেই, বন্ধুত্ব আমার ধাতে সয় না। অফিসের কয়েকজন কলিগ আমাকে সম্ভবত গোবেচারা ভাবে আর আমার টানাটানি-র খবরটা তারা আড়চোখে দেখে হয়তো কিছু করুনাও করে থাকে। একদিন সেই কলিগের একজন আগ বাড়িয়ে বলল
ঃ যদি কিছু মনে না করেন, আপনি সবসময় এতো গুটিয়ে থাকেন কেন?
ঃ এমনি, হটাত এমনটা মনে হল কেন?
ঃ না, মানে আপনাকে তেমন কারো সাথে কথা বলতে দেখি না, আবার সবসময় কেমন জানি মনমরা হয়ে থাকেন।
সেদিন শুরু। ক্রমে সে’ই আমার বন্ধু হয়ে ওঠে। আস্তে আস্তে আমরা পরস্পরকে চিনতে শিখি, ও আমার মতোই একজন। শুধু পার্থক্য এই যে ও প্রান খুলে হাসতে পারে, আমি পারিনা। ও শত যন্ত্রণা মাথা পেতে নিতে পারে, সইতে পারে এমনকি দিনের পর দিন বইতেও পারে কিন্তু কিছুতেই দমিয়ে যায় না। এ কারনেই তার প্রতি একটা সম্মানবোধ তৈরি হতে শুরু করে। তার ইতিহাস আমি যত শুনতে থাকি আমার নিজের উপর আমার তত আত্মবিশ্বাস বাড়তে থাকে। তার মতো সর্বংসহা, তার মতো ধীর স্থির আর হাস্যজ্জ্বল হয়ে ওঠার প্রানান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকি। আমি তাকে অনুসরন এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে একেবারে অনুকরন করার চেষ্টা করছি দেখে সে’ও আমাকে সম্মানের সাথেই দেখতে থাকে।
মিতু আমার অফিসের উপর তলায় একটা কর্পোরেট হাউজে চাকুরী করে। কালেভদ্রে কখনও ওঠার সময় বা নামার সময় লিফটে দেখা হয়ে যায়। দেখার উদগ্র বাসনা থাকা সত্ত্বেও নিম্নবিত্ত মানসিকতার কারনে চোখ তুলে তাকাবার সাহস হয়নি কোনদিন। আড়চোখে দেখা সে তন্বী দেহের দিকে ক্ষনকালের চোখ চলে গেলেও ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বুকে সাহস থাকা চাই, মনে জোর থাকা চাই। দোহারা চেহারা, লম্বা মেয়েলি মুখ, আঁটসাঁট শরীরের বাঁধুনি টপকিয়ে ছাব্বিশ বছরের যৌবন যখন উচ্ছল ভঙ্গিমায় সামনে এসে দাঁড়ায় তখন স্বয়ং মুনি ঋষির ধ্যান ভঙ্গ হতে বাধ্য। আমি নিজেকে শাসন করি, বুভুক্ষু মনের আয়নায় এক নিরাশক্ত মানুষের ছবি আঁকি। হয়তো বা মাঝেমধ্যেই ধরা পড়ে যাই।
একদিন আমার ফ্লোরের লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে মিতু।আমি অফিস থেকে বেরিয়ে মাত্র এসে দাঁড়িয়েছি, ঘাড় একটু বাঁকিয়ে অবহেলায় আমার দিকে একটিবারের জন্য তাকাল বোধহয়। ছলকে একদলা রক্ত যেন মাথায় এসে ধাঁ ধাঁ আগুন ধরিয়ে দিল, চিবুকের শিরা দপ দপ করছে বুঝতে পারলাম। আমার দিকে এভাবে কেউ তাকায়নি কখনও।
ঃ এ ফ্লোরেই আপনার অফিস বুঝি? প্রথমটা ঠিক খেয়াল করিনি। আমি তখন ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত। আবার শুনতে পেলাম
ঃ আপনি তো এ অফিসেই আছেন, নাকি? আমি এবার সাহস করে মাথা তুললাম, পিছে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম কেউ নেই!
ঃ আমাকে বলছেন? – ক্ষনকাল স্তব্ধ হয়ে জিগ্যেস করলাম আমি।
ঃ আশ্চর্য মানুষ তো আপনি? আর কেউ কি আছে এখানে?
ঃ দুঃখিত, আমি খেয়াল করিনি। হটাত একটা আলোর ঝিলিক দেখলাম তার মুখে, ঠোট দুটো কি একটু হলেও বেঁকে গিয়েছিল? হবে হয়তো!
ঃ না না, সেটা বলিনি। এবার ঠিক মাথা সোজা করে তাকালাম তার দিকে। একেবারে মুখোমুখি। বললাম- এর আগে তো কখনও কথা হয়নি আমাদের তাই ভাবলাম বুঝি অন্য কাউকে বলছেন আপনি।
ঃ যদি আপনার সাথেই কথা বলতে চাই তবে কি কোন সমস্যা?
আমার চিরায়ত বিনয়, কখনও সেটা ভাঁড়ামির পর্যায়ে যায় কিনা কে জানে!আমি স্মিত হেসে মাথা অনেকটা সামনে ঝুকিয়ে বো করার স্টাইলে বললাম
ঃ আমি সেটা বলিনি, সচরাচর আমি আনমনা থাকি বলেই হয়তো আপনাকে খেয়াল করিনি, সেটা আমার ব্যর্থতা।
ভ্রুকুটি করল একটু খানি, স্বভাবসুলভ চটুলতা প্রকাশ পেল। চাপা হাসির রেখা দেখা দিল ওষ্ঠদ্বয়ের কিনারা ঘেঁষে। ভাবল কিছুক্ষণ তারপর অনেকটা পূর্বরেশ ছাড়াই কথা বলা শুরু করল
ঃ আপনি নিজেকে খুব ভদ্র ভাবেন, এইতো? মেয়েদেরকে সম্ভবত চেনা হয়নি আপনার। বেশ কয়েকদিন ধরে খেয়াল করছি আপনি আমাকে দেখলেই চঞ্চল হয়ে ওঠেন, আপনার ব্যবহারে অসংলগ্নতা বিকটভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে। এই যে, আজ আপনি লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যাগ গোছাবার ভান করলেন, এটা কতটা প্রয়োজনীয় ছিল? এটা নিশ্চয় আমাকে অভারলুক করার জন্য নয় কি?
আমি ধরা পড়ে গেলাম। এতদিন এতো যত্ন করে নিজেকে গুছিয়ে রেখে গুটিয়ে নিয়ে যে অতিরিক্ত উদাসীনতার ভান করেছি সেটা নারী মাত্রই যে পরিষ্কারভাবে ধরে ফেলবে সেটা বুঝতে পারিনি। এতদিন পর যখন সে লুকোচুরি যখন এক ঝটকায় প্রকাশ হয়ে গেল তখন আমার আর কোন আব্রু রইল না। আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম। বললাম
ঃ আমি সম্ভবত ততটা ভদ্দ্রস্থ হতে পারিনি আর মেয়েদেরকে চেনার মতো সময় এবং সুযোগ আমার হয়ে ওঠেনি। আমি ঠিক আপনাকে দেখলেই যে চঞ্চল হয়ে উঠি এটাও কখনও বুঝতে পারিনি। তা কি রকম চঞ্চলতা প্রকাশ পায় বলে আপনি মনে করছেন?
হাসল এবার, প্রান খুলে একটু খানি স্বশব্দে হাসল। ঝর্ণাধারা যেমন রিনিঝিনি শব্দে গড়িয়ে চলে, মনে হল সে হাসি যেন দুরান্ত থেকে আমার কানে এসে বাজতে লাগল। আমি সত্যিই এবার চঞ্চল হয়ে উঠলাম। আমার চঞ্চলতা আমার বয়সকে ছাপিয়ে একেবারে যৌবনের প্রারম্ভে দাঁড় করিয়ে দিল, আমি যেন এ হাসির দাম দিতে লাল পট্টি বেঁধে বুনো ষাঁড়ের সামনে দাঁড়িয়ে যাবার মতো সাহসী হয়ে উঠলাম।
ঃ আপনি সম্ভবত লক্ষ্য করে থাকবেন যে আমিও আপনাকে বেশ কয়েকদিন ধরে ফলো করছি- বলল মিতু।- আপনার অতিরিক্ত উদাসীনতা অন্য রকম কিছু মিন করে, জানেন আপনি?
ঃ না তো! আর আপনাকে দেখে উদাসীনতা দেখাব এতটা ধৃষ্টতা কোথায় আমার?
ঃ চমৎকার গুছিয়ে কথা বলতে পারেন তো আপনি! শুনুন, আপনি আমাকে যেমনটি ভাবছেন ঠিক সেরকমটি নয় আমি। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, কোনদিন আমাকে দেখতে ইচ্ছে করেনি আপনার, কথা বলতে ইচ্ছে করেনি একটি বারের জন্য-ও? অথচ আপনি চান বা না চান আপনার চোখের ভাষাকে বার বার করে পড়ে দেখেছি, সেখানে অন্যরকম কিছু চাওয়ার আকুতি আপনাকে বার বার নিষ্পেষিত করেছে, আপনাকে অবদমিত করেছে। ঠিক নয়?
হাল ছেড়ে দিয়ে তার কথায় আত্মসমর্পণ করলাম। বুঝলাম, কিছুই লুকোয়নি তার কাছে।
সিরিজ?
সিরিজ?
অনেকটা সেরকম-ই। এটা প্রারম্ভ
অনেকটা সেরকম-ই। এটা প্রারম্ভ পর্ব, এর পর পরিচয় পর্ব তারপর…… এভাবেই উপসংহার পর্ব পর্যন্ত।
আশা করি সাথেই থাকবেন।
এতো লিভটুগেদার ক্যারে !!!
এতো লিভটুগেদার ক্যারে !!! live-together is everywhere!!
লিভ টুগেদার নিয়া এতো পোস্ট পইড়া লিভ টুগেদার করার লোভ সামলাইতে পারছি না!!
=P~ =P~ :টাল: :টাল: :টাল: :টাল: :চোখমারা: :চোখমারা: :দিবাস্বপ্ন: :দিবাস্বপ্ন: :দিবাস্বপ্ন:
কোন অজ্ঞান কারণে লিভ টুগেদার
কোন অজ্ঞান কারণে লিভ টুগেদার কেউ ইংরেজিতে লিখলে, আমি সারাজীবন ওইটারে লাইভ টুগেদার পড়ি… :টাল: :টাল: :টাল:
ললয। ইচ্ছা কইরা লিখছি !! মজার
ললয। ইচ্ছা কইরা লিখছি !! মজার ব্যাপার তোর সাথে মিলে গেছে, আমি নিজেও ওটাকে লাইভ টূগেদার পড়ি। :হাসি: :হাসি: :হাসি: :হাসি:
(No subject)
:টাল: :টাল: :টাল: :কল্কি: =P~
লোভ সামলাইতে না পারলে খুইজ্জা
লোভ সামলাইতে না পারলে খুইজ্জা লন, বাইচ্চা লন।
লেখা তো মনে হয় অসমাপ্ত ।এটা
লেখা তো মনে হয় অসমাপ্ত ।এটা কি পর্বাকারে ?
G
G
লিভ টুগেদার কেউ ইংরেজিতে
(ফালাফালির ইমো হবে)
আমারও একই সমস্যা ব্রাদার ।
পরের পর্ব ও কি লিখে ফেলছেন
পরের পর্ব ও কি লিখে ফেলছেন দাদা…
হু…… পরের পর্ব টা তো
হু…… পরের পর্ব টা তো কালকেই দিয়েছি। ওটা পরিচয় পর্ব।