গত একমাস ধরে নতুন রোগে পেয়ে বসেছে। বাংলাদেশ দলের খেলা দেখার পর প্রতিবারই ভাবি আর খেলা দেখবো না। কিন্তু ব্যাট বল হাতে লাল সবুজের জার্সি পরিহিত মুশফিকদেরকে যখন মাঠে দেখি, নিজের অজান্তেই তখন আবার টেলিভিশনের স্ক্রিনে চোখ আটকে যায়। দল আবারো বাজে খেলে হেরে যায়, আর আমি আবারো হতাশ হই! আবারো মনে মনে পণ করি আর খেলা দেখবো না। এমনটি আগে হত না। গত এক বছরে অনেকগুলো ম্যাচ জিতায় আমার ভেতরে হয়ত জিতার নেশা চেপে বসেছে। তাই তো আবেগ তাড়িত হয়ে উঠি। যদিও জানি ক্রিকেট এমনি এক খেলা যেখানে প্রতি মূহুর্তেই একটা কিছু ঘটতে পারে। মাত্র দুটি বল খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তারপরও সহজ হারগুলোকে এখন আর সহজ ভাবে নিতে পারি না। বার বার মনে হয়, এভাবে হারাটা আমাদের উচিত হয় নি। আমরা এর চেয়ে অনেক ভালো খেলতে পারি। গত মাসেই তো অমুক দলের সাথে কত ভালো খেলেছি। তার আগের মাসে অমুককে দলকে হোয়াইট ওয়াশ করেছি।
একের পর এক ম্যাচ আমরা হেরে যাচ্ছি, এবং অনেক সহজ ম্যাচগুলোতেও হেরেছি। গতকালের (বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান) ম্যাচটির কথাই যদি বলি, এই ম্যাচটি কি আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল? বোলিংটা শুরুতে যতটা ভালো হয়েছে, শেষের দিকে কি ততটা ভালো ছিল? বাজে ফিল্ডিং-এর কথা নাই বা বললাম। শ্রীলংকার বিরুদ্ধেও এমনটি দেখেছি! গতকাল আফগানরা যে ২৫৫ রানের টার্গেট আমাদেরকে দিয়ে ছিল, ওটা কি খুব বড় টার্গেট ছিল? আমরা কি এর চেয়ে ভালো দলের সাথে এর চেয়েও বড় টার্গেট তাড়া করে জিতি নি?
বাংলাদেশ দলটির দিকে যদি ভালো করে লক্ষ্য করুন তাহলেই দেখতে পারবেন কী রকম সমন্বয়হীনতায় ভরপুর! খেলায় হেরে যাচ্ছি, এই দুঃখ তো আছেই। তার চেয়েও বড় কষ্ট হল, চেষ্টা করার মত আমাদের কেউ নেই। সবাই ভাবে, আমি যা করেছি সেটাই সঠিক ছিল। এর চেয়ে ভালো আমি করতে পারবো না। আর এই মাইন্ডসেটটাই আমাদের মূল সমস্যা। চেষ্টা করলে নাসির কি গতকালের ম্যাচটা বের করে আনতে পারত না, তার কি সেই সামর্থ নেই ? আমি তো মনে করি অবশ্যই আছে। এবং শতভাগ সুযোগও ছিল তার সামনে। নাইমকে নিয়ে ভালো একটা পার্টনারশিপও গড়ে তুলে ছিল। প্রয়োজন ছিল শুধু বুঝে শুনে ধৈর্য ধরে খেলার। ঐ যে বললাম মাইন্ডসেট। তা না হলে চার চারটা কেস মিস হওয়ার পরও কেন সে কট আউট হবে?
নিজে না খেললেও খেলা দেখতে দেখতে অন্তত এইটুকু অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিশ্বের ভালো কোনো খেলোয়ারের কেস যদি একবার মিস হয় তাহলে ঐদিন তাকে আর কট আউট করা যবে না। নিকটতম উদহারণ হিসেবে যদি বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বশেষ ম্যাচটিকেই টেনে আনি তাহলে কী দেখতে পাই আমরা? মাত্র একটি কেস মিস করায় সেঞ্চুরী না করা পর্যন্ত কোহেলীকে আর মাঠ থেকে সরানো গেল না। এমন আরো বুড়ি বুড়ি উদহারণ আছে। আর আমাদের খোলয়াররা যেন ঠিক তার উল্টো স্বভাবের। কেস মিস হওয়ার পরের বলেই দ্বিতীয় ক্যাচটি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে! নিজের শটকে রিয়ালাইজ করা তো দূরের কথা মনে হয় যেন চোখ বন্ধ করেই ব্যাটিং করে, বল যেদিকে যাওয়ার যাবে, যা হবার হবে! আর কতকাল খেললে পরে আমরা খেলা শিখবো? বিদেশে কঠিন অনুশীলন ও মেহনত করে আগে খেলোয়ার হয়, তারপরে স্টার। আর আমাদের এখানে খেলোয়ার হউক বা না হউক, ব্যাট বল হাতে মাঠে নামতে পারলেই স্টার হয়ে যায়! খেলতে খেলতে অনেকেই তো অবসর নিয়ে নিয়েছেন, কিন্তু তাদের কয়জনকে আমরা খেলোয়ার বানাতে পেরে ছিলাম আর এভাবে ছেলে খেলাটা আমরা আর কতকাল খেলবো, এসব ভাববার বোধ হয় সময় এসেছে। আমার এই লেখা হয়ত অনেকের আঁতে আঘাত হানবে। বিশ্বাস করুন, কারো আবেগকে ছোট করার জন্য নয়, নিজের আবেগকে মাটিচাপা দিতেই এই লেখা।
ভাই খেলা দেখা বাদ দিছি।
কষ্ট
ভাই খেলা দেখা বাদ দিছি।
কষ্ট পেতে আর ভালো লাগে না। …. 🙁
যখন বিশ্বকাপ পাবে বাংলাদেশ
যখন বিশ্বকাপ পাবে বাংলাদেশ তখন খেলা দেখবো। ধন্যবাদ