আমি ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। আমার কাছে জীবনের মানে হচ্ছে ঘুরে বেড়ানো। এটার মূল হ্যাপাটা সইতে হয় আমার কাছের মানুষদের। ভালোবাসার মানুষটাও এই অত্যাচার থেকে রেহাই পায় না। আমার অত্যাচারে তাকে আমার সাথে কক্সবাজার রাঙামাটি হিমছড়ি চট্টগ্রাম কাপ্তাই সাগর পাহাড় বন জঙ্গল লেক সব ঘুরেতে হয়েছে।
আমি ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। আমার কাছে জীবনের মানে হচ্ছে ঘুরে বেড়ানো। এটার মূল হ্যাপাটা সইতে হয় আমার কাছের মানুষদের। ভালোবাসার মানুষটাও এই অত্যাচার থেকে রেহাই পায় না। আমার অত্যাচারে তাকে আমার সাথে কক্সবাজার রাঙামাটি হিমছড়ি চট্টগ্রাম কাপ্তাই সাগর পাহাড় বন জঙ্গল লেক সব ঘুরেতে হয়েছে।
ভালোবাসা দিবস নিয়ে আমার কোন চুলকানি নাই। একটা দিন আয়োজন করে আমি কাউকে আই লাভ ইউ বলতেই পারি। এজন্য কোন অপরাধবোধ হয়না। যতক্ষন আমি কোন অন্যায় করছিনা ততক্ষন কারো কথায় আমার কিচ্ছু আসে যায় না। লাইফটা আমার। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই ভাবতে লাগলাম ভ্যালেন্টাইনস’ডে তে কই যাওয়া যায়। একবার ভাবলাম বান্দরবান যাই। আমি একাধিকবার বান্দরবান গেলেও সে কখনোই যায় নাই। তিন্দু বগালেক অভিযানে যাওয়া যায়। ট্রেকিং করে কেওক্রাডং এর চূড়ায় উঠে তাকে একটা চুমু খাওয়া যায়। চিৎকার করে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বলা যায় আই লাভ ইউ। এটা তার জন্য নিশ্চই ভালো ভ্যালেন্টাইন গিফট হবে। তাকে বান্দরবান যাওয়ার কথা বলতেই সে নাকচ করে দিলো। কারণ এপ্রিলের মাঝামাঝি বিজু/সাংগ্রাই উত্সবে আমাদের এমনিতেই বান্দরবান যাওয়ার কথা। তখন বগালেক কেওক্রাডং যাওয়া যাবে। তাছাড়া নাকচ করার অন্যতম কারণ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আবার পূর্ণিমা। আমরা নদীতে জোছনা দেখবো। সিলেটের হাওড়ে অথবা কুয়াকাটা যাওয়া যায়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে আমরা দুজন সময় বের করতে পারবো মাত্র একদিন। একদিনের জন্য কাছেধারে কোথাও ঘুরতে যাওয়াই ভালো। ঠিক হল নদীতে জোছনা দেখার জন্য চাঁদপুর যাবো। নদীর পাড়ে ইলিশের শহরে।
যাবো বললেই যাওয়া যায়না। মফস্বল শহরগুলোতে হোটেল নেওয়া সমস্যা । দুজন ছেলেমেয়েকে ঘুরতে দেখলে অনেকেই নাক গলাতে আসে। তারপরও যা হওয়ার হবে, পরিস্থিতি অনুযায়ী সামাল দিবো এই সাহস নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম চাঁদপুর যাচ্ছি। কিছু গাঁড়ল মানুষের জন্য জীবনটা বাক্সবন্দী করে রাখতে পারিনা।
আমরা দুইজন দুই যায়গা থেকে রওয়ানা দিবো। আমি চিটাগাং থেকে সে ঢাকা থেকে। টাইমিংটা এমন ভাবে মিলাতে চাচ্ছিলাম যেন তার অন্তত ঘন্টাখানেক আগে আমি চাঁদপুর পৌঁছাতে পারি। আমি দুপুর একটার ভিতরই চাঁদপুর পৌঁছে গেলাম। কিন্তু সে আর আসেনা! একই সময়ে রওয়ানা দিয়েও সে আসতে আসতে বিকাল চারটা বাজছে! প্রথম হ্যাপাটা হচ্ছে হোটেল নেওয়া। কিছুক্ষন বিশ্রাম নেওয়া, ফেশ হওয়া, এটলিস্ট বাথরুমে যাওয়ার জন্য হলেও হোটেল দরকার। মফস্বলে এটা বড় রকমের সমস্যা। যতটা ঝামেলা হবে ভাবছি তার কিছুই হয় নাই। সহজেই একটা হোটেলে রুম নেওয়া গেল। যাক মাথা থেকে একটা ঝামেলা নেমে গেলো। হোটেলে ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লাম শহরটা ঘোরার জন্য। ততক্ষনে বিকেল পাঁচটা।
দুপুরে কিছুই খাই নাই। সেও খায় নাই। ক্ষিদায় মরি মরি অবস্থা। একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে কিছু খেয়ে নিলাম। তারপর রিকশায় বড় ইস্টিশন। পদ্মা মেঘনা ডাকাতিয়া তিনটা নদী এখানে মিশে গেছে। পড়ন্ত বিকেলে তার হাত ধরে ঘুরে বেড়িয়েছি বিস্তৃর্ণ নদীর পাড়ে। নদী পাড়ে বসে রং চা’ও খাওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় নৌকা নিয়ে ঘুরছি পদ্মা ডাকাতিয়ায়। তারপর রাতের লঞ্চের টিকেট কেটে ফিরে এলাম হোটেলে। কিছুটা বিশ্রাম দরকার ছিলো। সারাদিনের ক্লান্তি ছিলো, সারারাত জাগতে হবে এটা মাথায় ছিলো। হোটেলে গিয়ে কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নিবো। হোটেলে যাওয়ার আগে তার আড়ালে একগুচ্ছ ফুল কিনে তাকে দিয়ে বললাম হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে। বিনিময়ে পাওয়া মিষ্টি হাসিটার দাম অমূল্য। ঘুমানো আর হল কই। লাস্ট বলে শেষ হওয়া বাংলাদেশের টি টুয়েন্টি দেখতেই সময় কেটে গেছে। তারপরও কিছুক্ষন ঘুমানোর বৃথা চেষ্টা করে রাত পৌনে এগারোটায় হোটেল থেকে চেক আউট করে বেরিয়ে পড়ছি। রাতের খাবার খেয়ে সাড়ে এগারোটার ভিতর উঠে গেলাম লঞ্চে। বারোটায় লঞ্চ ছাড়বে, গন্তব্য ঢাকা।
পূর্ণিমায় সেরা আলোটা হয় রাত পৌনে একটার পর। পদ্মা মেঘনার বুক চিরে ভেসে চলে আমাদের তেতলা লঞ্চ। ফাল্গুনের শুরুতেই পূর্ণিমা। ডেকে দাঁডিয়ে আমরা দুজন জোছনা দেখি, জোছনা গায়ে মাখি, জোছনা খাই। নদীর বুকে একেবারে থইথই জোছনা। আকাশের দিকে তাকালেই নেশা ধরে যায়। আমি সিগারেট ধরাই, সে মৃদু বকা দেয়। অনেক অনেক দূরে বিন্দু বিন্দু আলো দেখা যায়। অন্য কোন ডিঙি নৌকার। সবকিছু মিলিয়ে সময়টাকে মনে হচ্ছিলো স্বপ্নে পাওয়া। কোনো সময় দ্বিতীয়বার পাওয়া যায় না। হয়তো কোন একদিন আবার ফাল্গুনের শুরুতেই পূর্ণিমা থাকবে। ভালোবাসা দিবসও হবে ঐদিন। সেদিন আমরা আবার চাঁদপুর আসবো চাঁদ দেখতে। কিন্তু আজকের দিনটাতো আর ফিরে আসবে না। প্রতিটা মূহুর্ত জীবনে একবারই আসে। রাত বাড়ে জোছনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। বিশাল জলরাশির বুক চিরে ভেসে চলে আমাদের লঞ্চ।
পড়লাম। ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা
পড়লাম। ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা লেখককে।
(No subject)
🙂
বুঝায় যাচ্ছে স্বর্গে ছিলেন
বুঝায় যাচ্ছে স্বর্গে ছিলেন প্রেয়সীকে নিয়ে ।। দোয়া করি এইভাবে থাকুন সারাজীবন ……
অনেক ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ 🙂
বাহ আপনিই তো সবচেয়ে সুন্দর
বাহ আপনিই তো সবচেয়ে সুন্দর ভালবাসা দিবস পালন করেছেন।
অন্তত আমার দিক থেকে বলতে পারি
অন্তত আমার দিক থেকে বলতে পারি 🙂
(No subject)
:গোলাপ: :গোলাপ: :গোলাপ: