লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যায় । কতিপয় কিছু অসৎ , কসাই , খুনি , এবং বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী কিছু ডাক্তার নামের নরপিচাশের কারনে পুরো ডক্টর সোসাইটির কপালে লেপ্টে যায় কসাই নামের সিল । ফেসবুক , ব্লগে যেখানেই ডাক্তারদের অহেতুক কসাই নামে অপমান করা হয়েছে সব জায়গায় তীব্র ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছি সব সময় । তাদের বোঝানোর চেষ্টা করিয়েছি যে সব ডাক্তার এক নয় । কিছুদিন আগে একটি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলাম । ভেবেছিলাম তখনি কিছু লিখব । কিন্তু কোন একটি কারনে ভুলে গিয়েছিলাম ।একজন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট হিসেবে নিজের কানে ডাক্তারদের নামে সাধারণ মানুষের এমন জঘন্যতম ধারনার কথা শুনে নিজের কাছে আমি নিজেই অনেক লজ্জিত । ভবিষ্যতে আল্লাহর কৃপায় আমরাও একদিন ডাক্তার হব । পরিবর্তন হবে আমাদের সোশ্যাল স্ট্যাটাস , পরিবর্তন হবে চিকিৎসা বিদ্যার , কিন্তু পরিবর্তন হবে না সাধারণ জনগনের কাছে আমাদের কলংকিত ইমেজ , এমনটা হতে পারেনা ।
আমার এক মামা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউ এর ডাক্তার । আমাদের কাজের বুয়া একদিন আম্মুর কাছে এসে কান্না জড়িত ভাবে হাত জোরাজোরি করা শুরু করে দিল। শুনতে পেলাম তার কোন এক আত্মীয় অসুস্থ । অন্য রুমে থাকায় ভেবেছিলাম হয়ত কিছু টাকা সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করছে । আম্মুর রুমে গিয়ে তাই ঘটনা কি শুনতে গিয়ে নিজেই অপমানিত , লজ্জিত হলাম নিজের বিবেকের কাছে । বুয়ার এক আত্মীয় হার্টের রুগী । ইমিডিয়েট তাকে অপারেশন করতে হবে । বুয়া হয়ত কোন এক ভাবে শুনতে পেয়েছিল যে আমার মামা একজন কারডিওলোজিস্ট ।তাই সে আম্মুর কাছে হাত জোর করে মিনতি করছে কম টাকা নেয়ার জন্য নয় , আর্থিক সাহায্যের জন্যেও নয় , শুধু মাত্র একটু নিশ্চয়তার জন্য যেন অপারেশন করার সময় তার আত্মীয়ের কিডনি , কিংবা অন্যান্য অঙ্গ চুরি করে না নিয়ে যাওয়া হয় । সাধারণ মানুষের কাছে ডাক্তারদের ইমেজ কত টুকুন খারাপ হলে একজন মানুষ তার আত্মীয়ের অপারেশনের আগে এমন কথা বলতে পারে এটা ভেবে নিজেই আমি ‘থ’ হয়ে গেলাম !! হবেই না কেন ? আমাদের দেশে পত্রিকা খুললে এমন ঘটনা হারমেশাই দেখতে পাওয়া যায় । ডাক্তারদের কত বদনাম । সময় মত হসপিটাল এ থাকেন না , অপারেশন করার পর পেটে ব্যান্ডেজ , ছুরি , কাচি ফেলে আসে , সরকারী মেডিসিন বাইরে বিক্রি করে দেয় আরও হাজার অপকর্ম । কিন্তু এই কাজ গুলো কয়জন করে ? হাতে গোনা কয়েকজন । আর এই হাতে গোনা কয়েকজনের কারনেই গোটা দেশের ডাক্তারদের এত বদনাম ।
আজ অর্থপেডিক্স ক্লাসে আমাদের সম্মানিত প্রফেসর ডাঃ হান্নান স্যার একটা ঘটনা আমাদের বললেন । তার কাছে কয়েকদিন আগে এক রোগী এসেছিল যার কিনা কাঁধের ইনফেকশন হয়ে কাঁধের হাড় বের হয়ে গিয়েছে । রোগীর আগের হিস্টোরি থেকে স্যার জানতে পারলেন যে বেশ কয়েক বছর আগে ওই রোগীর FNAC( সুই এর মাধ্যামে কোষ , ফ্লুইড সংগ্রহের পদ্ধতি) করা হয়েছিল । আর ওই সময় যথাযথ জীবাণুমুক্তকরন পদ্ধতি অনুসরণ না করার কারনে ওই স্থানে ইনফেকশন হয়ে বর্তমানে তার এই অবস্থা । আমাদের দেশে এটা হয়েছে বলে ডাক্তার মশায়ের কিছুই হয় নি , বাইরের দেশে হলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হত ওই ডাক্তার অথবা ওই হসপিটালকে ।
সাধারণ জনগনের কাছে ডাক্তারদের কসাই নামক ইমেজ থেকে বের হয়ে আসতে হলে নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজেকেই পরিবর্তন করতে হবে । বর্তমান ডাক্তাররা অনেক বেশি আন্তরিক । প্রাইভেট মেডিক্যাল গুলোতেও এখন ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে । আমাদের কলেজ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য স্যারদের সাহায্যের জন্য গিয়েছিলাম । তারা সবাই পুরো একদিনের প্রাকটিস বাদ দিয়ে আমাদের সাথে গ্রামে যেতে রাজি হয়েছেন । আন্তরিক না হলে তারা এমনটা করতেন না । অনেক প্রাইভেট হসপিটালে পর্যন্ত অনেক ডাক্তারদের চেম্বারের দরজায় লেখা থাকে যে আর্থিক সমস্যা থাকলে বিনা সংকচে জানাতে । ফ্রি সার্জারি,ফ্রি ঔষধ দেয়া হচ্ছে অনেক হসপিটালে । রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির সময় এনাম মেডিক্যালের চিকিৎসকদের আন্তরিকতা নজির তৈরি করেছে । এভাবেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের কসাই নামক ইমেজ থেকে বের হয়ে আসতে হবে । প্রত্যেক ডাক্তারকে মন থেকে তার রোগীদের নিজের পরিবারের সদস্য ভেবে চিকিৎসা করতে হবে । আমাদের মনে রাখতে হবে মানুষের জীবন দান আল্লাহ করেন , আর তার উছিলা হচ্ছে এই ডাক্তার । মানুষের জীবন হেলা খেলা কিছু নয় , খেলবেনই যখন অন্তত মানুষের জীবনটাকে সেই খেলার লিস্ট থেকে বাদ দিয়েই খেলেন ।
(No subject)
:ভাঙামন: :ভাঙামন: :ভাঙামন: :ভাঙামন: :ভাঙামন: :মনখারাপ: :মনখারাপ: :মনখারাপ: :মনখারাপ: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :মানেকি: :মানেকি: :মানেকি: :মানেকি: :মাথাঠুকি: :মাথাঠুকি: :মাথাঠুকি: :মাথাঠুকি:
বাইরের ডাক্তাররা প্রায় সবাই
বাইরের ডাক্তাররা প্রায় সবাই মানুষকে মানুষ মনে করে, আমাদের ডাক্তারদের খুব কম পার্সন রোগিকে মানুষ মনে করে।
এটা ভাই মানতে পারলাম না। বরং
এটা ভাই মানতে পারলাম না। বরং অল্প কিছু ডাক্তার আছে যারা রোগীকে মানুষ না মনে করে কাস্টমার মনে করে।
আতিক ভাইয়ের সাথে সহমত।
আতিক ভাইয়ের সাথে সহমত।
(No subject)
:মাথাঠুকি: :মাথাঠুকি: :মাথাঠুকি: :মানেকি: :ক্ষেপছি: :ক্ষেপছি:
(No subject)
:মাথানষ্ট:
লেখাটা ভালো লাগলো।
লেখাটা ভালো লাগলো। আত্মসমালোচনা আমি সবসময়ই পছন্দ করি। আজকেই আমার প্রোফেসর বলছিলেন, রোগীর চিকিৎসা করার সময় এমনভাবে করবে যেন তুমি তোমার বাবা/মায়ের চিকিৎসা করছ। কিংবা তোমার বাবা/মাকে কোন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তুমি যেরকম চিকিৎসা পাবে বলে আশা করো, সেইভাবে সব রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করবে। কথাগুলো ভালো লাগছে। তাই এখানে উল্লেখ করলাম। তবে সমালোচনা করার সময় অনেকেই ঢালাও ভাবে যখন বলে দেন, ডাক্তার মানেই কসাই, তখন খারাপ লাগে। ভাল-খারাপ সব পেশাতেই আছে। কিন্তু আমরা যেহেতু মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করি, তাই সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আরও বেশী।
একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, মানুষ এমন অনেক কথা আছে যেগুলো হয়ত তার একেবারে আপনজনের কাছেও কখনও শেয়ার করেনা, কিন্তু ডাক্তারের কাছে করে। এই বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে হবে।
(No subject)
:থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ: :bow: :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ:
আমার সাথে এখনো কোনো ডাকু
আমার সাথে এখনো কোনো ডাকু /ডাকিনী যোগীনী ডাক্তারের সাক্ষাৎ হয়নাই।তবে একবার পিজি হাসপাতালের এক ইন্টার্নীর ব্যাবহারে মনে খুব ব্যাথা পেয়েছিলাম।আমি তাকে কফির নিমন্ত্রণ দিয়েছিলাম আর সে আমাকে হাসপাতালের অদ্ভুত একধরনের ঠান্ডা এককাপ চা খাইয়ে বিদায় করেছিলো। ডাগর চোখের সেই চায়ের কথা মনে হইলে আইজো মনে ঝড় উঠে।
হা হা হা…মজা পাইলাম
হা হা হা…মজা পাইলাম
:/ :/ :/
:/ :/ :/