বুড়িগঙ্গা নদীকে বাদ দিয়ে ঢাকার ইতিহাস লেখা অসম্ভব। ঢাকা গড়ে উঠেছে, বিস্তৃত হয়েছে বুড়িগঙ্গা নদীকে আবর্ত করে। দুঃখের বিষয় যেই বুড়িগঙ্গা ঢাকাকে জন্ম দিয়েছে, লালন-পালন করেছে, সেই ঢাকাই আজ তাঁর জন্মদাত্রী বুড়িগঙ্গাকে মেরে ফেলছে। কথাটা মনে হলেই দীর্ঘশ্বাস আসে। টেমস নদী যেমন লন্ডন শহরের প্রাণ, তেমনি ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা। আজ কোথায় টেমস আর কোথায় বুড়িগঙ্গা। ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছুই নিয়েছি, কিন্তু নিতে পারি নি ঐতিহ্যের প্রতি তাঁদের ভালোবাসার নির্যাসটুকু।
বুড়িগঙ্গা নদীকে বাদ দিয়ে ঢাকার ইতিহাস লেখা অসম্ভব। ঢাকা গড়ে উঠেছে, বিস্তৃত হয়েছে বুড়িগঙ্গা নদীকে আবর্ত করে। দুঃখের বিষয় যেই বুড়িগঙ্গা ঢাকাকে জন্ম দিয়েছে, লালন-পালন করেছে, সেই ঢাকাই আজ তাঁর জন্মদাত্রী বুড়িগঙ্গাকে মেরে ফেলছে। কথাটা মনে হলেই দীর্ঘশ্বাস আসে। টেমস নদী যেমন লন্ডন শহরের প্রাণ, তেমনি ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা। আজ কোথায় টেমস আর কোথায় বুড়িগঙ্গা। ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছুই নিয়েছি, কিন্তু নিতে পারি নি ঐতিহ্যের প্রতি তাঁদের ভালোবাসার নির্যাসটুকু।
মূল প্রসঙ্গে আসি। আজ আমরা বুড়িগঙ্গার সেকাল-একাল দেখব। ৪০০ বছর আগে আজকের বুড়িগঙ্গা ছিল পদ্মা বা গঙ্গার একটা শাখানদী। নিচে যেই ছবিটি দেখছেন সেটি ১৮৬০ সালের পদ্মা নদীর। এই নদী থেকেই বুড়িগঙ্গার উৎপত্তি হয়।
মোঘল শাসকেরা অবাক হয়েছিলেন বুড়িগঙ্গার তীব্র স্রোত দেখে। আজকে যদিও সেই স্রোতের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। নিচের ছবিটি ১৯২৪ সালের ঢাকা শহরের মানচিত্রের ছবি যেখানে বুড়িগঙ্গা কে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
এই ছবিটি বর্তমান ঢাকা শহরের। বুড়িগঙ্গা ঠিকই আছে কিন্তু সে তাঁর যৌবন হারিয়ে যে ধুঁকছে সেটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে।
বুড়িগঙ্গার পুরাতন সময়ের ফটোগ্রাফ খুবই দুর্লভ। প্রাচীন নিদর্শনের মাঝে কিছু হাতে আঁকা ছবি পাওয়া যায়। ছবিগুলো সংরক্ষিত আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। ছবিগুলো এঁকেছিলেন চিত্রশিল্পী Charles D’oyle এবং Fredrick William Alexander de Fabeck আনুমানিক ১৮০০ সালের আশেপাশে। দেখুন তো বুড়িগঙ্গার তীরের রহস্য নগরীটিকে চিনতে পারেন কি না?
এই ছবিগুলোতে নদীর তীরের বিভিন্ন স্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে যার অনেক কিছুই আজ আর নেই। অনেক কিছু জায়গা পরিবর্তন করেছে। এই যেমন ধরুন আহসান মঞ্জিল। এই হচ্ছে ১৮০০ সালের আহসান মঞ্জিলের হাতে আঁকা ছবি।
এবার আহসান মঞ্জিলের আরেকটি ছবি দেখুন যেটি আঁকা হয়েছিল ১৮৪০ সালে।
এবার আহসান মঞ্জিলের যেই ছবিটি দেখবেন সেটি তোলা হয়েছিল ১৮৬৯ সালে।
এখন অবশ্য নদী বেশ খানিকটা দূরে সরে গেছে। তাই আহসান মঞ্জিলের ঘাটে এখন আর নৌকা ভিড়ে না।
সদরঘাটের কথা আমরা কে না জানি? দেখুন তো চিনতে পারেন কি না? ছবিটা ১৯৩৪ সালে তোলা হয়েছিল।
আর এই হচ্ছে বর্তমান সময়ের সদরঘাট।
ঢাকার এক প্রাচীন ঐতিহ্য ছোট কাটরা। বুড়িগঙ্গার তীরের ছোট কাটরার ছবি উঠে এসেছে Charles D’oyle এর আঁকা ছবিতে।
১৮৮৫ সালের তোলা ছোট কাটরার একটা ছবি পাওয়া যায় যেখানে দেখা যায় যে ছোট কাটরা ধ্বংস হতে চলেছে।
ছোট কাটরার এখন পরিত্যক্ত। তবে কিছু চিহ্ন এখনও চোখে পড়ে। নিচের ছবিটা তোলা হয়েছে ২০০৭ সালে।
মিটফোর্ড হাসপাতালের ছবিও এঁকেছিলেন Charles D’oyle.
মিটফোর্ড হাসপাতালের নিচের ফটোগ্রাফটা ১৮৮০ সালের।
এইবার ২০০৯ সালের বুড়িগঙ্গা তীরের মিটফোর্ড হাসপাতাল।
ব্রিটিশ সৈনিকদের থাকার জন্য একটি ব্যারাক ছিল বুড়িগঙ্গার তীরে যেটির নাম ছিল মিল ব্যারাক। ১৮০০ সালের মিল ব্যারাকের ছবি দেখুন।
এইবার ২০০ বছর পর ঐ একই স্থানের ছবি দেখুন।
এতক্ষণ যেই ছবিগুলো দেখালাম সেগুলো সব নদীর একপাশ থেকে আঁকা হয়েছে। এবার নদীর উপর থেকে বুড়িগঙ্গা কে কেমন দেখায় সেটি দেখুন। ছবিটি এঁকেছিলেন Fredrick William Alexander de Fabeck ১৮৬১ সালে।
ঠিক ১৫০ বছর পর নদীর উপর থেকে বুড়িগঙ্গা কে কেমন দেখায় সেটি দেখুন।
নিঃসঙ্গ বুড়িগঙ্গার আরও একটি ছবি পাওয়া যায় যেটি তোলা হয়েছে ১৮৮০ সালে।
এখন অবশ্য বুড়িগঙ্গা আর নিঃসঙ্গ না। তবে সে এতবেশি সঙ্গ পাচ্ছে যা কি না তাঁকে আর বাঁচতে দিচ্ছে না। বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানোর জন্যই এখন বুড়িগঙ্গাকে একা থাকতে দেওয়া উচিৎ। একটু নিঃসঙ্গতা কে না চায়?
ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা অনেক
ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছুই নিয়েছি, কিন্তু নিতে পারি নি ঐতিহ্যের প্রতি তাঁদের ভালোবাসার নির্যাসটুকু।
– চরম সত্য ।
(No subject)
:ভাঙামন: :ভাঙামন: :ভাঙামন:
দুর্লভ ছবিগুলো দেখতে পেয়ে ভাল
দুর্লভ ছবিগুলো দেখতে পেয়ে ভাল লাগলো। বুড়িগঙ্গা নিয়ে বলার কিছুই নাই। এখন যদিও অবস্থা খুব খারাপ। আশা রাখি যে একসময় আমরা বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা করতে পারবো।
আসলে সরকার যতই চেষ্টা করুক না
আসলে সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন, আমরা নিজেরা যদি আমাদের জাতীয় সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে সচেতন না হই তাহলে নিজেদের এই অমূল্য সম্পদগুলোকে কখনোই রক্ষা করতে পারব না।
ভাল লাগলো খুব।
ভাল লাগলো খুব। 😀 😀 😀
(No subject)
:ধইন্যাপাতা: :ধইন্যাপাতা: :ধইন্যাপাতা:
বুড়িগঙ্গার পানি যেরকম কালো,
বুড়িগঙ্গার পানি যেরকম কালো, এখনও পেট্রোল পাম্প ওয়ালা ভেজাল হিসেবে যে মিশায়ে দেওয়ার কাজে ইউজ করে নাই এটাই সৌভাগ্য।
অসাধারণ কালেকশন ডানা ভাই। এর পরের পর্ব কি ঢাকার যানজটের ইতিহাস নিয়ে দিবেন? 😀
এই পর্বটাই ঢাকার মসজিদগুলোর
এই পর্বটাই ঢাকার মসজিদগুলোর সেকাল-একাল নিয়ে লিখবার ইচ্ছে ছিল। সমস্যা হচ্ছে, ঢাকায় এত এত মসজিদ ছিল যে সেগুলোর বর্তমান অবস্থান আর ছবি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অনেক মসজিদের এখন অস্তিত্ব নেই। আর মসজিদগুলোকে এক পোষ্টে আনতে চাইলে সেই পোস্টের সাইজ এতই বড় হবে যে ইষ্টিশনের যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে যেতে পারেন। কি যে করি। :মাথানষ্ট:
হে হে !! ডানা ভাই! নামটা পড়তে
হে হে !! ডানা ভাই! নামটা পড়তে মজা লাগলো।
(No subject)
:মাথানষ্ট: :মাথানষ্ট: :মাথানষ্ট: :মাথানষ্ট: :মাথানষ্ট:
ভাইরে! খুশি থাকেন যে
ভাইরে! খুশি থাকেন যে শঙ্খচিলের পাখনা ভাই ডাকে নাই!
:হাসি: :হাসি: :হাসি:
(No subject)
:থাম্বসডাউন: :থাম্বসডাউন: :থাম্বসডাউন:
ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা অনেক
মাস্টার সাহেবের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়ে না থাকলে উপরের উক্তিটা উক্তি বক্সে যোগ করা হত বলেই মনে করছি।
ডানা ভাই, আপনি অসাধারণ কাজে হাত দিয়েছেন। ইতিহাসের প্রয়োজনে আপনার এই পোস্টগুলো এক সময় মুল্যায়িত হবেই। আপনি আপনার মত করে কাজ চালিয়ে যান। ঢাকা নিয়ে একটা গবেষনা সংকলন তৈরী হওয়ার সম্ভবনা দেখছি আপনার লেখায়।
উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য
উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দুলাল ভাই। :ধইন্যাপাতা: কাজটা করে খুব আনন্দ পাচ্ছি। এতেই আমি সন্তুষ্ট।
আমার কাছে ঢাকার কিছু পুরাতন
আমার কাছে ঢাকার কিছু পুরাতন ছবি আছে। একটু খুঁজে দেখতে হবে। ব্রিটিশ মিউজিয়াম কালেকশন মনে হয়। আপনি চাইলে খুঁজে দেখতে পারি।
অবশ্যই। খুব ভাল হয় তাহলে।
অবশ্যই। খুব ভাল হয় তাহলে। কালেকশনটা যতই সমৃদ্ধ হবে আমাদের জন্য ততই শিক্ষণীয় হবে ব্যাপারটা।
পইড়া ভাল লাগল যথারীতি…..
পইড়া ভাল লাগল যথারীতি….. কিন্তু একটু সংশোধন আছে, যেগুলোরে আপনে ১৮৪০ এর আহসান মঞ্জিল বলতেসেন, ওইটা রূপলাল হাউজ। এখনো এই অবস্থাতেই আছে।
কি কন? আইচ্ছা, কাইলকা অফিসে
কি কন? :খাইছে: আইচ্ছা, কাইলকা অফিসে গিয়া ঠিক কইরা দিমু নি। সব ছবিগুলান অফিসের পিসি তে কি না। :আমারকুনোদোষনাই:
অসাধারণ একটি পোস্ট।
আপনি
অসাধারণ একটি পোস্ট।
আপনি সত্যি কথাই বলেছেন।ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা ভালো কিছু শিক্ষা নেয়ার পরিবর্তে বেশির ভাগই খারাপটাকে গ্রহণ করেছি।এটা আসলে মানুষের সহজাত প্রবৃতি।মন্দ জিনিসে আসক্ত হয়েই মানুষ মজা পায় বেশী।
ইংরেজদের কাছ থেকে আমরা ভালো
:মনখারাপ: :মনখারাপ: :মনখারাপ:
অসাধারন পোস্ট
অসাধারন পোস্ট