ছেলে হয়ে জন্মেছি । অনেক ভাগ্যবান আমি । এই দেশে মেয়ে হয়ে জন্মানো যে কি কষ্টের তা কেবল একটা মেয়েই জানে । প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটা মেয়েকে অনেক প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয় । ছেলে হয়ে জন্মেছি । অনেক ভাগ্যবান আমি ।
আসলেই ভাগ্যবান । সারাদিন ইচ্ছেমতোন ঘুরে বেড়াই । গলির মোড়ে , চায়ের দোকানে , রাস্তার পাশের হোটেলে বা গার্লস স্কুলের সামনে দাড়িয়ে জমিয়ে আড্ডা দিই । সপ্তাহে পাঁচদিন কলেজে থাকি তো পাঁচ ঘন্টা থাকি বেইলী রোডে । ইচ্ছে হলেই রাত নয়টা দশটা এগারোটার দিক বাসা থেকে বের হতে পারি । আসলেই অনেক স্বাধীন । ছেলে তো , তাই ।
ছেলে হয়ে জন্মেছি । অনেক ভাগ্যবান আমি । এই দেশে মেয়ে হয়ে জন্মানো যে কি কষ্টের তা কেবল একটা মেয়েই জানে । প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটা মেয়েকে অনেক প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয় । ছেলে হয়ে জন্মেছি । অনেক ভাগ্যবান আমি ।
আসলেই ভাগ্যবান । সারাদিন ইচ্ছেমতোন ঘুরে বেড়াই । গলির মোড়ে , চায়ের দোকানে , রাস্তার পাশের হোটেলে বা গার্লস স্কুলের সামনে দাড়িয়ে জমিয়ে আড্ডা দিই । সপ্তাহে পাঁচদিন কলেজে থাকি তো পাঁচ ঘন্টা থাকি বেইলী রোডে । ইচ্ছে হলেই রাত নয়টা দশটা এগারোটার দিক বাসা থেকে বের হতে পারি । আসলেই অনেক স্বাধীন । ছেলে তো , তাই ।
ছেলে বলেই আমি একটা মেয়ের চেয়ে অনেক বেশী স্বাধীন , অনেক বেশী ভাগ্যবান । তাই না ? আসলেই কতখানি ভাগ্যবান ?
আমি ছেলে । তাই আমাকে হতে হবে হৃদয়হীন । আমার কোনো দুঃখ থাকতে পারে না , কষ্ট থাকতে পারে না । থাকলেও সেটা প্রকাশ করার অধিকার নেই আমার । বুঝতে শেখার পর থেকেই শুনতে হয় ‘ছি বাবা , তুমি কাঁদছো কেনো ? তুমি কি মেয়ে মানুষ ?’ যেন কান্না কেবলই মেয়েদের সম্পত্তি ।যেন ছেলেদের কান্না করা পাপ । যেনচোখের জল মানেই দুর্বলতা । যেন ছেলে বলেই আমার দুর্বলতা থাকতে নেই , দুঃখ থাকতে নেই । কাছের কোনোমানুষ মারা গেলেও শুনতে হয় , ‘বাবা তুমিই যদি এমন ভেঙ্গে পরো , তোমার মা বোনদের কে দেখবে ?’ যেন আমার রক্ত মাংসের শরীর নয় । যেন আমার দুঃখ কম । যেন আমি ছেলে বলেই আমার হৃদয় থাকতে নেই , ভালোবাসা থাকতে নেই । ছেলে বলেই যেন আমার কাঁদতে নেই । কাঁদতেই যদি না দিবে বিধাতা, কেনো দিলে এই অশ্রুজল ??
ঠাকুরসাহেব বলছিলেন তেরো চৌদ্দ বছরের ছেলের মত বালাই আর নাই । এই বালাই টা যে ষোলো সতেরো বছরে পৌছতে পৌছতে মহামুসিবত হয়ে যায় , সেটা বলে গেলেন না । সতেরো বছরের একটা মেয়ে বাসার ভেতর ঘুরঘুর করলে জিভ দিয়ে লালা ঝরে আর সতেরো বছরের ছেলেটা গেটের বাইরে দাড়িয়ে থাকলেও চোখ দিয়ে ঝরে আগুন । আজব এই নারীবিরোধী নারীলিপ্সু মানুষ ।
এমন কিছু সময় আসে যখন কাছের মানুষগুলোকেও অনেক দূরের মনে হয় । যে বন্ধুটার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থেকেছি ওর গার্লফ্রেন্ড রিকশায় যাবে বলে , একটা বিড়ি দুজনে মিলে শেষ করেছি সেই বন্ধুটাকেও হঠাত্ অচেনা মনে হয় । পরিবারের সাহায্যটুকু তখন বড় বেশী প্রয়োজন । কিন্তু এমন ছেলে হাতেগোনা যার সাথে তার বাবার সম্পর্ক একটা মেয়ের সাথে তার মায়ের সম্পর্কের মতোন । আমি ছেলে বলে আমি আনন্দের প্রকাশ করতে পারব না , সেটা হবে ন্যাকামি । আনন্দে ওদের জড়িয়ে ধরতে পারব না । শখের বশেও একদিন মা কে বলতে পারব না , ‘ মা আমি তোমাকে সাহায্য করি…? ‘
তবুও আমি একজন মেয়ের চেয়ে ভাগ্যবান । আমার জন্যে মাসে চারটা ড্রেস কেনা হয় না , আপ্রাণ চেষ্টা করেও আমার কাজটা সুন্দর হয় না , স্টেজ কাঁপিয়ে আবৃত্তি করার পরেও আমারটা পারফেক্ট হয় না । অবশ্যই আমি ভাগ্যবান । সবচেয়ে খচ্চর মেয়েটা হয় লক্ষী মা মণী আর সবচেয়ে নিরীহ ছেলেটাও হয় বেয়াদব । চরম ভাগ্যবান আমি । পাঁচটা ভুল করেও একটা মেয়েকে মাইর দুরে থাক , বকাও খেতে হয় না । একটা ভুলের জন্য আমার হাতের ছাল চামড়া উঠে যায় । আমার মত ভাগ্যবান কে আছে ??
ছেলে বলে আমার লজ্জাও থাকতে নেই । ব্যাডা মাইনসের আবার লজ্জা কি ! আমার সে জন্যে অর্ধ উদোম হয়ে ঘুরে বেড়ানো জায়েজ । যেন আমার হায়া থাকতে নাই । ছেলে হলেই বেহায়া হতে হবে । রাস্তার পাশে দাড়িয়ে মূত্র বিসর্জন দিতে হবে ।
মেয়েদেরকে অসম্মান করি না । কিন্তু এই তেরো থেকে বিশ বছরের সময়টাতে আমরাও খুব ভালো নেই । আমি ভালো নেই । প্রতিনিয়ত নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার চাপ । আমার এই ছেলে জন্ম – প্রতিনিয়ত ধুকে ধুকে শেষ হওয়া । প্রতিনিয়ত নিজের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া . . .
কাঁদতেই যদি না দিবে বিধাতা,
কাঁদতেই যদি না দিবে বিধাতা, কেনো দিলে এই অশ্রুজল ??
….বাহ, ভালো লিখেছেন । সামাজিক এই দৃষ্টিভঙ্গি পালটাতে হবে । আবেগ – অনুভূতি ছেলেতে মেয়েতে কম বেশি হবে এই নিয়ম কে করল ? ক্ষমতার কেন্রবিন্দু তে অধিষ্ঠান পুরুষ তার স্বার্থে এইসব চালু করেছে । নারীকে দুর্বল বলে সমাজে প্রচার করে সে তার শোষণ বজায় রেখেছে । কষ্টের কোন জেন্ডার নাই, ছিলোনা কোন কালে ।
বুঝলাম ছেলেমানুষি আবেগ দ্বারা
— এই কথার পর আর কিছুই বলার থাকেনা!!
একটা আইরনিও কি জানেন?
নিজের মেয়ের বা বোনের জন্যে সব করতে পারি কিন্তু অন্যের মেয়ে ঘরে তুলতেই তেঁতুল হয়ে যায় ১০০%… এইটাই আমাদের পুরুষতান্ত্রিকতা… :ক্ষেপছি: :ক্ষেপছি:
(No subject)
:ভেংচি:
কী এক মুশকিল সম্পাদনা করেও
কী এক মুশকিল সম্পাদনা করেও কমেন্ট টা ঠিক মতো পোস্ট হলনা । :দেখুমনা:
একটি ব্রহ্মপুত্রীয় মন্তব্য…
:আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই:
একটি ব্রহ্মপুত্রীয় মন্তব্য… 😉
তারিক ভাই, হাহাহাহাহাহাহাহাহা
তারিক ভাই, হাহাহাহাহাহাহাহাহা … হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হবার যোগাড় । যাক মন্তব্য করেও কেউ বিখ্যাত হয়ে যেতে পারে । আপনার ” ব্রহ্মপুত্রীও ” মন্তব্য কথাটা দারুণ লেগেছে । ব্রহ্ম পুত্র ভাই কিছু মনে না করলে এটা ব্যবহার করা যেতে পারে ।
অন্তত ব্রহ্মপুত্ররে না!
:আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :আমারকুনোদোষনাই: :কেউরেকইসনা: :কেউরেকইসনা: :কেউরেকইসনা: :কেউরেকইসনা: :কেউরেকইসনা: :কেউরেকইসনা: অন্তত ব্রহ্মপুত্ররে না! ব্রহ্মপুত্র আমার প্রিয় নদীর নাম… 😉
আবেগ টা ছেলেমানুষি হোক বা
আবেগ টা ছেলেমানুষি হোক বা মেয়েমানুষি হোক । আবেগ তো !
হুম তা বটে … আবেগ । বেগের
হুম তা বটে … আবেগ । বেগের আগে আ থাকে ।
ভালো লাগলো
:নৃত্য: ভালো লাগলো
হুম, সবচেয়ে খচ্চর মেয়েটা
হুম, সবচেয়ে খচ্চর মেয়েটা লক্ষী মামনি হয়ে থাকে আর তারপর একদিন বয়স ২৩-২৪ হলেই অপরিচিত বাড়িতে পঁচতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কোন ছেলের এই সব কষ্টগুলো মিলেও এই কষ্টের সমান করতে পারবেন না, বুঝেছেন?
আমি কিন্তু তুলনা করি নি ।
ঠিক
আমি কিন্তু তুলনা করি নি ।
ঠিক আমার বয়েসী একজন ছেলে বুঝবে আমি কি বলেছি ।
আর শ্বশুর বাড়িতে পচতে পাঠানোর বিষয়টা দিন দিন নাই হয়ে যাচ্ছে 🙂
চিন্তায় পড়ে গেলাম
চিন্তায় পড়ে গেলাম :চিন্তায়আছি: :চিন্তায়আছি: :চিন্তায়আছি: (একটি ব্রহ্মপুত্রীয় মন্তব্য :আমারকুনোদোষনাই: )
ব্রম্মপুত্রীয় কমেন্টে পরিশ্রম
ব্রম্মপুত্রীয় কমেন্টে পরিশ্রম কম লাভ বেশি … 😀
আপনার লেখাটা পড়ে তসলিমা
আপনার লেখাটা পড়ে তসলিমা নাস্রিনের “আমার মেয়েবেলা”র কথা মনে পড়ল। :আমারকুনোদোষনাই:
পোস্টটি ভাল লাগল। অন্তত এই
পোস্টটি ভাল লাগল। অন্তত এই পোস্ট পড়ে মানুষ বুঝতে পারবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ছেলেদের উন্নত অবস্থান দিতে কতটা শক্ত করে তোলে আর মেয়েদের কতটা ভঙ্গুর করে গড়ে তোলে সেটা দেখিয়েছেন। এই দৃষ্টিভঙ্গির অবশ্যই পরিবর্তন দরকার। ১৩-২০ বয়সটাই এমন। আপনার একটা কথা খুব ভাল লেগেছে-
সাম্যের একটা গন্ধ পেলাম। তবে ভিন্নভাবে খারাপ বা ভাল থাকার চেয়ে একইভাবে বাঁচার মত দৃষ্টিভঙ্গি গড়ার প্রয়োজন।
সেটাই বলেছি মাশিয়াত আপু ।
সেটাই বলেছি মাশিয়াত আপু । বয়ঃসন্ধিকাল সময়টা সবার জন্যেই ভয়ানক