বাংলাদেশে প্রায় জন্মলগ্ন থেকে একটি প্রথা চলে আসছে । সেটি বিভিন্ন স্থানের নামকরণ এবং ক্ষণে ক্ষণে তা পরিবর্তনকরণ । এ প্রথায় যে দেশের কোন উপকারই হচ্ছে না বরং ভিন্নদলীয় মানুষদের মধ্যে রেষারেষি বাড়ছে ।
যেমন ধরা যাক , ঢাকার বিমানবন্দরের কথা ।
বাংলাদেশে প্রায় জন্মলগ্ন থেকে একটি প্রথা চলে আসছে । সেটি বিভিন্ন স্থানের নামকরণ এবং ক্ষণে ক্ষণে তা পরিবর্তনকরণ । এ প্রথায় যে দেশের কোন উপকারই হচ্ছে না বরং ভিন্নদলীয় মানুষদের মধ্যে রেষারেষি বাড়ছে ।
যেমন ধরা যাক , ঢাকার বিমানবন্দরের কথা ।
পাকিস্তান আমলে এর নাম ছিল ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর । স্বাধীনতার অনেক পরে এর নামকরণ হয় , ‘জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ । অনেকে হয়তো এর পেছনের কারণটি জানেন না । কারণটি হচ্ছে , বিমানের পাইলটরা কোন বন্দরে বিমান ল্যান্ড করার আগে সবার উদ্দেশ্যে ঘোষণা করে অমুক বিমানবন্দরে নামছে তবে সেটা সংক্ষিপ্তভাবে । যেমন , Zia International Airport’র নাম সংক্ষিপ্তভাবে বলা হতো ZIA (তিনটি শব্দের প্রথম তিনটি অক্ষর) । পাইলটরা বলতেন , ‘আমরা এখন জিয়ায় ল্যান্ড করছি’ । সেটা শুনতে অবশ্যই বিএনপি সরকারের ভালো লাগত , তাই তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে বিমানবন্দরের নামকরণ করা হয় । এ কাজ অবশ্যই শেখ হাসিনার ভালো লাগেনি , আর তা হয়তো মাত্রা ছাড়াতে অনেক দিন লেগেছে । তাই ২০০৮’র নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসার পর এর নামকরণ করা হয় , ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ হিসেবে । সবাই তখন একবাক্যে ধরে নিয়েছিলেন শ্রেষ্ঠ পীরের নামানুসারে এটার নাম হয়েছে , ভালই তো ! কথা হল আওয়ামী লীগ উনার নামটাই কেন ব্যাবহার করলেন ? মুজিবের নামে এতকিছু , তিনি জাতির পিতা ; তার নামটা কেন ব্যাবহার করা হল না ? ইংরেজিটা দেখুন , HA. Shahjalal International Airport . কিছু কি বোঝা গেল ? পুরো নামটার কৌশলগত সংক্ষিপ্ত নাম হয় , HASINA . বেচারা পাইলটরা এখন বলেন , ‘আমরা এখন হাসিনায় ল্যান্ড করব’ । এটি শুনতে উনার নিজের অবশ্যই খুব ভালো লাগে , মন ফুরফুরে হয়ে যায় ।
এ হল আমাদের দেশে একটি ছোট ব্যাপার নিয়ে বাড়াবাড়ির নমুনা । নিজেদের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিয়ে , অযথা টাকা খরচ করে একটি স্থান বা প্রতিষ্ঠানের বারবার নাম পরিবর্তন করা হয় । এর পেছনে কোন জনহিতকরণ কারণই নেই । নভঃ থিয়েটার , চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র ইত্যাদি জিনিসই এর প্রমাণ এবং নীরব সাক্ষী । আমরা মানুষেরাও নিজেরাই নাম ঠিক করে সেটা জুড়ে দেই স্থানের সাথে ।
জী , কথা বলছি শাহবাগ চত্বর নিয়ে । ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে সেখানে আন্দোলন শুরু হয় এবং চলতে থাকে । প্রথমে এর নাম পরিবর্তনের কোন ভাবনাই কারও মনে আসেনি , মিশরের তাহরির স্কয়ারের মত এর নামও শাহবাগ স্কয়ার হিসেবেই চলে আসছিল বহুদিন ধরে । কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই এ আন্দোলনের হুজুগে আহ্বায়ক হওয়া ডাক্তার ইমরান এইচ সরকারের প্রতিষ্ঠিত প্রজন্ম ব্লগের নামানুসারে শাহবাগ চত্বরের নাম হয়ে যায় প্রজন্ম চত্বর । আমরা গোবেচারা মানুষ সেটা নিয়ে কোন আওয়াজও করিনি , বরং খুশি হয়েই গলা ফাটিয়েছি দিনের পর দিন । গেল সে কথা । গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে যাবার পর সবাই চুপই ছিল । কিন্তু হঠাৎ বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় নির্দিষ্টভাবে এ শাহবাগেই , শাহবাগের মোড়েই , আপ্নাদের-আমাদের প্রজন্ম চত্বরেই । এবং আন্দোলনকারীরা আবেগে আপ্লুত হয়ে , দিশা হারিয়ে , অথবা কোন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গালি প্রদান করার মাধ্যমে স্লোগান দিতে থাকে ; যে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের ফলেই তারা আজ চিৎকার করতে পারছে । এবং সাধের প্রজন্ম চত্বরের নাম মুহূর্তেই পরিবর্তন হয়ে মেধা চত্বরে রূপান্তরিত হয়ে গেল । মেধা চত্বর , বাহ !! ওখানে সব মেধাবীরা আন্দোলন করছে , আর সবাই মূর্খ !! আমরা কেউ মেধাবী শিক্ষার্থী নই , গাঙ্গের জলে ভেসে ঢাকায় এসে পড়েছি !! এই আমাদের দেশ , দেশের মানুষ ! নাম একটা দিয়ে দিলেই হয়ে গেল আরকি !! আর আমরা সবাই পঙ্গপালের মত সব মাথানিচু করে মেনে নিলাম ।
কোটা বাতিল করা উচিৎ অথবা হার কমানো উচিৎ , হ্যাঁ উচিৎ । কারণ এটা একদিকে মেধা নষ্ট করছে অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সামর্থ্যকে উপহাস করছে । তাই আমিও বলি , কৌটা বাতিল করতে হবে । এ আন্দোলনকেও আমি সমর্থন জানাই । কিন্তু তাই বলে স্বাধীন দেশের রূপকারদের গালি মারা , মেধা শব্দটি নিয়ে কৌতুক ; এসব কোন ধরণের বিপ্লব ? এমন কৌতুক রিয়েলিটি শো’র স্ক্রিপ্ট আকারে লিখা নাটককেও হার মানায় ।
ভাই – বোনেরা শোনেন , আর কত হুজুগে ভাসবেন ? আন্দোলন আসবে , কৌতুকে রূপ নিবে , নামকরণ নিয়ে বাহানা হবে । আর কত ?? আপনাদের নিজেদের আবেগ নিয়ে আপনারা নিজেরাই খেলছেন , একটু চোখ মেলে সত্যটা বুঝতে শিখুন ।
আর নামকরণ ? বুঝতে পারছি না এ বিড়ম্বনা বাংলাদেশে কবে শেষ হবে । হয়তো হবেই না । শাসক – শোষকেরা এমন বিড়ম্বনায় আমাদের ফেলবে আর আমরা নিজেদের ইজ্জতের চটপটি তোয়াক্কা না করে পঙ্গপালের মত ছুটতে থাকব । এই আমাদের বাংলাদেশ ।
একই বিষয়ে অজস্র পোস্ট!আর
একই বিষয়ে অজস্র পোস্ট!আর ভাল্লাগে না ।
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পোস্ট
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পোস্ট আসবেই ।
আপনাকে সাধু বলে সাধু সেই
আপনাকে সাধু বলে সাধু সেই নই…
সম্পূর্ণ দ্বিমত! কেন? গতকয়েকদিনে অসংখ্য পোস্ট আছে এই বিষয়ে; পড়ে দেখেন!!
‘আপনাকে সাধু বলে সাধু সেই
‘আপনাকে সাধু বলে সাধু সেই নই…’
ভাই , বুঝলাম না । একটু বুঝিয়ে বলবেন কি ?
কোটার পক্ষে আমার অবস্থান ।
কোটার পক্ষে আমার অবস্থান ।
আমিও এটার বিপক্ষে নই । তবে
আমিও এটার বিপক্ষে নই । তবে আন্দোলনের নামে কৌতুকের বিপক্ষে ।
সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করি
সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করি
(No subject)
:বুখেআয়বাবুল:
সব কোটার বিলুপ্তি নয়। কোটার
সব কোটার বিলুপ্তি নয়। কোটার পারসেন্টিজ কমানো যায়। কিন্তু বাতিলের পক্ষে নই।
আর “মেধাবীরা” যা দেখিয়েছে তাতে বুঝাই যাচ্ছে এর পিছনে কারা আছে।
সহমত প্রকাশ করছি । কোটা কমিয়ে
সহমত প্রকাশ করছি । কোটা কমিয়ে ৫ % এ আনাই ভালো হবে ।
এবং , বোঝই যাচ্ছে উনারা ষড়যন্ত্রের শিকার ।
(No subject)
:ভাঙামন:
ধুরো এর থেকে সব জিনিসে যে
ধুরো এর থেকে সব জিনিসে যে ডিজাইন করসে সেই ইঞ্জিনিয়ারের নাম দিয়ে দিলেই হয়।
এটা ভালো বলেছেন তো ।
এটা ভালো বলেছেন তো । :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ:
তবে , এ বিড়ম্বনা থেকে কি সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব ? :মাথাঠুকি:
(No subject)
:দীর্ঘশ্বাস: