আপনারা কি সার্কাসের হাতির গল্পটা জানেন?
ঐযে সার্কাসে আগুন লাগবার পর সবাই যার যার মত পালিয়ে গেল, শুধু পুড়ে মারা গেল সার্কাসের হাতিটা!
যারা জানেন না তারা শুনুন; যারা জানেন তারা আরেকবার শুনুন-
হাতি একটা বন্য প্রাণী। সাধারণতঃ এরা নিরিহ ও দলবদ্ধ ভাবেই থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু রাগিয়ে দিলে এরা ভিষণ হিংস্র হয়ে ওঠে। হাতিকে পোষ মানানো তাই সহজ কম্ম নয়! কিন্তু আমরা সার্কাসে একটা হাতিকে মানুষের হুকুমে বানরের মত আচরন করতে দেখি! প্রকান্ড একটা প্রাণীকে দিয়ে কত রকম খেলাই না দেখানো হয় সার্কাসে…
আপনারা কি সার্কাসের হাতির গল্পটা জানেন?
ঐযে সার্কাসে আগুন লাগবার পর সবাই যার যার মত পালিয়ে গেল, শুধু পুড়ে মারা গেল সার্কাসের হাতিটা!
যারা জানেন না তারা শুনুন; যারা জানেন তারা আরেকবার শুনুন-
হাতি একটা বন্য প্রাণী। সাধারণতঃ এরা নিরিহ ও দলবদ্ধ ভাবেই থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু রাগিয়ে দিলে এরা ভিষণ হিংস্র হয়ে ওঠে। হাতিকে পোষ মানানো তাই সহজ কম্ম নয়! কিন্তু আমরা সার্কাসে একটা হাতিকে মানুষের হুকুমে বানরের মত আচরন করতে দেখি! প্রকান্ড একটা প্রাণীকে দিয়ে কত রকম খেলাই না দেখানো হয় সার্কাসে…
হাতিকে কিভাবে পোষ মানানো হয় জানেন? বাচ্চা একটা হাতিকে প্রথমে জঙ্গল থেকে ধরে আনা হয়। হাতির বাচ্চাও তো একটা হাতিই তাই সে প্রথমে কিছুতেই পোষ মানতে চায় না। সব ছিঁড়ে-টিঁড়ে চলে যেতে চায়। তখন তাকে শক্ত একটা লোহার খুঁটির সাথে লোহার মোটা শিকল দিয়ে পা বেধে রাখা হয়। বাচ্চা হাতিটা অনেক চেষ্টা করেও সেই শিকল ছিড়তে পারে না। উপরন্তু শক্ত করে বাঁধা শিকলের ঘষায় তার পা কেটে ক্ষত হয়ে যায়। ব্যথায় বাচ্চা হাতিটা তখন শান্ত হতে বাধ্য হয়। কয়েকদিন পর পায়ের ক্ষত শুকালে সে আবার শিকল ছেঁড়ার চেষ্টা করে। আবার ক্ষত হয়, আবার ব্যথা পায়, আবার শান্ত হয়। এভাবে বার বার চেষ্টা করেও যখন ব্যথা বৈ মুক্তি মেলে না তখন এক সময় বাচ্চা হাতিটা তার নিয়তিকে মেনে নেয়! সে ধরেই নেয় এই শিকলই তার নিয়তি… এই পাঁচ গজ শিকলের বাইরে সে আর কোনদিন যেতে পারবে না!
মজার ব্যাপার হচ্ছে- তখন তাকে আর শেকলে বাঁধার প্রয়োজন হয় না! একটা ছাগল বাঁধার রশি দিয়ে বেঁধে রাখলেও যখনই পায়ে টান পড়ে তখনই সে থেমে যায়! ব্যথাটা পায়ে নয়, ব্যথা অনুভব করে তার মস্তিস্ক! এভাবেই এক সময় হাতিটা অতিকায় আকার ধারণ করে। তখন সে চাইলেই অমন ৫/৭টা লোহার শিকল ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা রাখে! অথচ তখনও সে একটা সামান্য নাইলনের দড়ি ছেঁড়ার সাহস করে না! শৈশবের স্মৃতি তাকে মনে করিয়ে দেয়- পালাতে চাইলেই ব্যথা পাব!
একটা পর্যায়ে এমনও দেখা গেছে- কোন শিকল বা রশির দরকার হয় না। হাতিকে দেখিয়ে দেখিয়ে জাস্ট একটা খুঁটি পুঁতে রাখলেই হাতি ঐ খুঁটির পাশে বসে পড়ে। ঐ খুঁটি ছেড়ে ৫ গজের বেশী দূরে যাবার চেষ্টাও সে করে না!
আর এভাবেই সার্কাসে আগুন লাগলে সবাই পালিয়ে বাঁচলেও হাতি খুঁটির পাশে বসে জ্যান্ত কাবাব হয়ে যায়, তবু একবার পালানোর চেষ্টা করে না!
আমার এই গাল-গল্প যাদের বিশ্বাস হচ্ছে না তাদের জন্য একটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কথা বলি। একজন বিখ্যাত জীব বিজ্ঞানী একবার একটা একুরিয়ামের মাঝ বরারবর একটা স্বচ্ছ কাঁচের পার্টিশন দিয়ে দুই পাশে দুইটা মাছ ছেড়ে দিল। একটা বড় মাছ, আরেকটা তারই খাদ্য- ছোট মাছ! স্বভাবতই বড় মাছটা ছোট মাছটাকে দেখে ছুটে আসলো খাওয়ার জন্য! কিন্তু মাঝখানের কাঁচের পার্টিশনে এসে বার বার ধাক্কা খেয়ে ফিরে গেল সে! অপর দিকে ছোট মাছটাও বড়টাকে দেখে বার বার ভয়ে পালিয়ে যেতে লাগলো। কিন্তু অবাক হয়ে খেয়াল করলো কোন একটা কারণে বড় মাছটা তাকে খাচ্ছে না (আসলে খেতে আসতে পারছে না!)
একটা সময় দেখা গেল বড় মাছটা আর ছোট মাছটাকে দেখে তেড়ে আসছে না। ছোটটাও আর বড়টাকে দেখে ভয়ে পালাচ্ছে না!
ঠিক তখন সেই বিজ্ঞানী কাঁচের পার্টিশন খুলে দিলেন। এবং অবাক হয়ে দেখলেন ছোট মাছটি বড় মাছটার কাছ দিয়ে দিব্বি ঘুড়ে বেড়াচ্ছে, মাঝে মাঝে গায়ে ঘাই দিয়েও যাচ্ছে! কিন্তু বড় মাছটা ওটাকে আর খাচ্ছে না!
কাঁচের পার্টিশনটা ওদের ব্রেনে স্থায়ী হয়ে গেছে!
উপরোক্ত ঘটনা দু’টো অদ্ভুত শোনালেও কিন্তু সত্য। অনেক সময় পরিবেশ নয়, বরং আমাদের মাইন্ড সেট-আপ, আমাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতাই আমাদের কাজে বা সফলতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়!
ভাবছেন দর্শন শোনাচ্ছি? না- এটা পিউর সায়েন্স! আরেকটা বৈজ্ঞানিক গবেষণা দিয়েই সেটার প্রমান পাওয়া যাক-
“ভ্রমর তো আমরা সবাই চিনি। বিকট ভো ভো আওয়াজ করে উড়ে বেড়ানো ভয়ঙ্কর দর্শন একটা পতঙ্গ… দেখলেই ভয় লাগে!
আপনি কি জানেন- বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন- ভ্রমরের যে সাইজ আর বডি স্ট্রাকচার, সেতুলনায় তার পাখা এতো ছোট যে- বাস্তবে ভ্রমরের উড়তে পারার কথা নয়। যেমনটি উড়তে পারার কথা নয় উট পাখির! কিন্তু বিজ্ঞানের সেই গবেষণাপত্রকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ভ্রমর দিব্বি উড়ে বেড়ায়!
এর ব্যাখ্যাটা কিন্তু বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন খুব মজা করে। তাদের বক্তব্য হলোঃ তবুও ভ্রমর উড়তে পারার কারণ হলো, “বৈজ্ঞানিক ভাবে ভ্রমরের যে উড়তে পারার কথা নয়”- এই কথাটা ভ্রমর জানেই না!
মজা করে বললেও কথাটার তাৎপর্য কিন্তু বিশাল… এর মানে হচ্ছে প্রাকৃতিক বাধা থাকলেও ভ্রমরের চিন্তার সীমাবদ্ধতা নেই বলেই আর দশটা পতঙ্গের মত সেও উড়তে চেষ্টা করেছে- এবং অসম্ভবকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সে উড়ে দেখিয়েছে!
অনেক তো হাতি-মাছ-কীট-পতঙ্গের উদাহরণ হলো, কিন্তু মানুষের বেলায় কি এসব খাটে? মানুষও কি পারে বিজ্ঞানকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে “মিরাকল” ঘটিয়ে দিতে?
তাহলে আসুন- আরেকটা তথ্য জানা যাক…
বিজ্ঞানীরা এটাও বলেছিলঃ মানুষের দৈহিক গঠন এমন যে, বর্তমান পৃথিবীর কোন মানুষের পক্ষেই ১০ সেকেন্ডের আগে ১০০ মিটার পথ পাড় হওয়া সম্ভব নয়।
কিন্তু আমরা দেখেছি পৃথীবির দ্রুততম মানব “ওসাইন বোল্ট”কে মাত্র ৯.৫৬ সেকেন্ডে ১০০ মিটার পথ পাড়ি দিতে! শুধু তাই না, ১০ সেকেন্ডের আগে আরো বেশ কয়েকবারই সে ঐ দূরুত্ব পার হয়ে দেখিয়েছে…
এতো গল্প-তথ্য-উপাত্ত-যুক্তির উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য এটা বোঝানো যে- অনেক সময়ই আমরা কোন একটা ধ্যান ধারনা বা বিশ্বাসে এতোটাই বদ্ধমূল হয়ে যাই যে, চোখের সামনে ভিন্ন কিছু দেখলেও আমরা তখন তা আর বিশ্বাস/গ্রহণ করতে পারি না…
বাল্য শিক্ষাটা আমাদের চিন্তাধারা বিকাশে তাই অনেকাংশেই নিয়ামক…
সেটা ধর্মান্ধদের বেলায় যেমন সত্য, উগ্র নাস্তিকদের বেলায়ও সত্য। পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের বেলায় যেমন খাটে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত তরুন প্রজন্মের বেলায় ও তেমনি খাটবে।
আমাদের সমাজের নারীরা এখনও অনেকটাই পিছিয়ে আছে তার কারণটাও কিন্তু প্রথমতঃ মানসিক বাধা! আমাদের সমাজের পুরুষরা যেমন অনেক সময় তাদের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারছে না, ঠিক তেমনি নারীরাও তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত না হওয়ায় অনেক কিছুকেই “নিয়তি” বলে মেনে নিচ্ছে…
এতে অবাক হবার কিছু নাই, এটাই বরং স্বাভাবিক! কিন্তু একজন মুক্তবুদ্ধির মানুষ হিসেবে আমাদেরকে এই “স্বাভাবিক” সত্যটাকেই অতিক্রম করে “অস্বাভাবিক” একটা নতুন সত্য তৈরী করতে হবে… আমাদেরকে সেটাই করে দেখাতে হবে- যা আসলে করা “সম্ভব” না!
[লেখাটা এখানেই শেষ হতে পারতো… কিন্তু আমার ব্লগিং জীবনে একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না! কিছু পোস্ট ও কমেন্টের কল্যানে ব্লগের কারো কারো কাছে আমি রিতিমত “নারী বিদ্বেষী” ট্যাগ পেয়ে গেছি! এখন আমি যা-ই বলি তারা ভাবে আমি নারীকে ছোট করার জন্য এটা বলছি!
আমরা যখন কারো সম্পর্কে কোন একটা ধারনায় বদ্ধমূল হয়ে যাই- তখন খুব বেশী সম্ভাবনা তৈরী হয় তাকে আন্ডারস্টিমেট করার! সে যা-ই বলুক না কেন, আমরা তাকে তার পূর্ববর্তী রেফারেন্সের ভিত্তিতেই বিচার করতে অভ্যস্ত থাকি…
আমি চেষ্টা করবো আমার পরবর্তি পোস্ট-কমেন্টের মাধ্যমে আমার সম্পর্কে মাথার ভেতর সেট হয়ে থাকা বদ্ধমূল ধারনাটা পালটে দেবার… এবং আমি আশাবাদী, কারণ- অন্তত যারা ব্লগে লিখেন, তাদের বুদ্ধিমত্তা আর দশজনের চেয়ে একটু আলাদা হবেই…]
– সফিক এহসান
৭ জুলাই ২০১৩
(দুপুর ২:০০ ঘটিকা)
চমৎকার লিখেছেন ।
চমৎকার লিখেছেন ।
তাই বুঝি?
তাই বুঝি?
😀
ভাল লাগল
ভাল লাগল
শুনে আমারও ভালো লাগলো…
শুনে আমারও ভালো লাগলো…
:গোলাপ: :ধইন্যাপাতা:
(No subject)
:ভালাপাইছি: :ফুল:
এইটাই চেতনা আর
এইটাই চেতনা আর মানুষত্ব…
কিপ ইট আপ।। ভাল লাগল পড়ে!!
কথা বলতে গেলে মতের মিল-অমিল
কথা বলতে গেলে মতের মিল-অমিল হবেই। এটা নিয়ে এতো চিন্তিত হলে কি চলে?
লেখা ভালো হয়েছে সফিক ভাই। :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ:
চিন্তিত আছি- কে
চিন্তিত আছি- কে বলল?
মিল-অমিলে কোন সমস্যা নাই, ভুল বুঝাবুঝিটাকেই যা একটু ভয়!
তবে ইস্টিশনের একটা জিনিস ভালো লাগে- যত তিব্রই হোক না কেন সমালোচনার ভাষা, কখনোই সেটা শালীনতার সীমা অতিক্রম করে না…
:ফুল: শুকরিয়া
দুর্দান্ত
দুর্দান্ত :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ:
(No subject)
:ধইন্যাপাতা:
(No subject)
:bow: :bow: :bow:
(No subject)
😀