রহিম মিয়া একজন পকেটমার.এককালে ছিঁচকে চোর ছিল.নিজ এলাকার বাসাবাড়িতে তখন জুতা,স্যান্ডেল,হাড়িপাতিল প্রভৃতি চুরি করতো.
বেশ কিছু বছর আগে তাঁর এলাকায় মোবাইল চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনীরশিকার হয়ে এলাকা থেকে কোনমতে প্রাণ নিয়ে পালায় সে.পালিয়ে একপর্যায়ে চলে আসে চট্টগ্রামে.চট্টগ্রামে এসে “চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না খাও ধরা” এই কথার বাস্তবিক প্রয়োগকরা শুরু করতে লাগলো আবার সে.
রহিম মিয়া একজন পকেটমার.এককালে ছিঁচকে চোর ছিল.নিজ এলাকার বাসাবাড়িতে তখন জুতা,স্যান্ডেল,হাড়িপাতিল প্রভৃতি চুরি করতো.
বেশ কিছু বছর আগে তাঁর এলাকায় মোবাইল চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনীরশিকার হয়ে এলাকা থেকে কোনমতে প্রাণ নিয়ে পালায় সে.পালিয়ে একপর্যায়ে চলে আসে চট্টগ্রামে.চট্টগ্রামে এসে “চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না খাও ধরা” এই কথার বাস্তবিক প্রয়োগকরা শুরু করতে লাগলো আবার সে.
শুরু করলো চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ বেশকিছু মসজিদ ও মাজারে মুসল্লিদের রাখা জুতা চুরি করার মাধ্যমে.এক রমজানের তারাবীহ নামাজের সময় মসজিদে জুতা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে রহিম.মুসল্লিরা তাঁকে প্রহারকরতে উদ্যত হলেও এলাকার কয়েকজন মানী লোকের হস্তক্ষেপে ছাড়া পায় সে.
তবে ইমাম সাহেব তাঁকে তওবা করায় এবং আর কখনো মসজিদে চুরি করবেনা বলে অঙ্গীকার করায়.
এরপর থেকে রহিম মিয়া আর মসজিদ অভিমুখী হয়নি.কিন্তু এই শহরে বেঁচে থাকার তাগিদে শীঘ্রই তাঁকেনতুন পেশা শুরু করতে হলো. নতুন পেশা পকেটমারা! প্রথমদিকে সে নিজে একাই পকেট মারার কাজ করতো.
ধীরে ধীরে পকেট মারতে মারতে প্রচুর টাকা উপার্জন করা শুরু করলো সে.কিন্তু একা একা কাজ করা দুরহ তাই শেষমেশ কিছু পকেটমার ও টোকাইদের তাঁর দলে ভিড়ায় সে.
রহিম মিয়া এখন বারোজন পকেটমার দলের সদস্য.তাঁর অধীনের পকেটমাররা নগরীর বিভিন্ন রুটের বাসে পকেটমারে.কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন বাসের হেল্পারদের সাথে লিংক রাখে সে.তাঁর গ্রুপের দৈনিক আয় মোটামুটি 15-20 হাজার টাকা. আয়ের টাকা ভাগাভাগি করে তাঁর কাছে 10 হাজার টাকা বা তারও বেশি থাকে.
টাকার বেশিরভাগটাই সে গ্রামে তাঁর পরিবারের কাছে পাঠায়.হ্যাঁ তাঁর পরিবার আছে.কিন্তু পরিবারেরকেউ তাঁর পেশা লালন করেনা.তাঁর ছেলেমেয়েরা সঠিক জিনিস লালনকরছে.বিদ্যাকে লালন করছে! রহিম মিয়ার স্বপ্ন তাঁরা অনেক বড় হবে,সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে.
ছেলে-মেয়েদের সমাজে টিকে থাকতে যাতে কোন সমস্যা না হয় তাই সে এভাবেই টিকে থাকে সমাজে.তাঁর আশা বড়ছেলে একদিন পুলিশ অফিসার হবে.তাঁর মত চোর,ডাকাত,পকেটমারদের ধরবে! যে পুলিশ প্রায়ই তাঁর হয়রানি ও মার খাওয়ার কারণ হয়ে থাকে.
এমনই যথারীতি পকেটমারের নিত্যদিনের শুরু.দলের কয়েকজনের অনুপস্থিতিতে আজ ষোলশহর পয়েন্টের দায়িত্ব তাঁর. সামনে একটা বাস থামলে বাসে উঠে দেখে সে হেল্পার তাঁর পূর্বপরিচিত!বাসে উঠে হেল্পারের ইশারা মত কাজে নামে সে.কিন্তু বিধি বাম সেদিন!
পকেটমারতে গিয়ে ধরা পড়ে রহিম মিয়া.তারপর যা হয় একজন পকেটমার বাচোরের ভাগ্যে.বাসের ভেতর কয়েকজন অতি উদ্যমী মাচো ম্যান তেড়ে যায় তাঁকে মারতে.বাসের ভেতরই চলতে থাকে অ্যাকশন! বাসের ভেতর মারার স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাস থামানো হয়.অতঃপর সকল যাত্রীদের সামনে এমনকি মহিলা যাত্রীদের সামনে তাঁর গায়ে সমস্ত পোষাক খুলে নগ্ন করে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়.তাঁকে ঘির 2 নাম্বার গেটে ছোটখাটো জটলা তৈরি হয়.
মোড়ের ট্রাফিক সার্জেন্ট ও দুই পুলিশ কর্মকর্তা এগিয়ে আসে.মার থেকে বাঁচার জন্য পুলিশের পা ধরে আকুতি করে রহিম মিয়া.কিন্তু তাঁকে জনতার হাতে তুলে দিয়ে তাঁরা নীরব দর্শকের মত ঘটনা দেখতে থাকে! চারশ টাকা চুরির অপরাধে নগ্ন রহিম রাস্তায় মার সহ্য করতে থাকে.চারশ টাকার জন্য রহিম নগ্ন অবস্থায় মার খাচ্ছে তাঁর জন্য হয়তোবা তাঁর লজ্জা লাগছিল না কিন্তু যারা চারশ টাকার জন্য রহিমকে বিবস্ত্র করে পেটাচ্ছিল তাঁদের জন্য হয়তো আমাদের সমাজই লজ্জা পাচ্ছিল! লজ্জা পাচ্ছিল আমাদের বিবেক,নৈতিকতা,আইন,দৃষ্টিভঙ্গি!
ওরে আমার সমাজ রে! তুই এত সাধু সাজিস কেন? তুই যে কত নিষ্ঠুর তা তুই দেখাইলি!যে সমাজে এমন অশিক্ষিত রহিম মিয়ারা টিকে থাকার জন্য আত্মমর্যাদা,সম্মান,বিবেক,নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এইসব পথ বেছে নেয়আজ সেই সমাজেই শিক্ষিতরাও রহিম মিয়াদের সমূলে উচ্ছেদ করার জন্য আত্মমর্যাদা,সম্মান,বিবেক,নৈতিকতা বেছে নিচ্ছে!
আর পুলিশ!! তিনি তো জনগণের বন্ধু. আর রহিম মিয়ারা তো জনগণের তালিকায় পড়ে না.তাঁরা মরলেও কারো কিছু যায় আসেনা.
তাঁরা মরলে পুলিশ ও জনগণ হয়তো “ভালো হলো,একটা আবর্জনা পরিষ্কারহলো” এই বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে অন্নগ্রাস করে!অথচ যখন রহিম মিয়াদের চাইতেও বড় পকেটমাররা দেশের চারকোটি টাকা চুরি করে তখনও সেই জনগণ,পুলিশ তৃপ্তির ঢেকুর তুলেই অন্নগ্রাস করতে থাকে.
এই দুইক্ষেত্রেই কারোরই তৃপ্তির কমতি নেই যেহেতু প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে কারো অন্নে টান পড়ছেনা.
এখানে পোষাকও একটা ফ্যাক্ট! রহিমরা কদাচিৎ অভদ্র,অশিক্ষিত শার্ট,লুঙ্গি পরিহিত.
আর সেই তথাকথিত বড়পকেটমাররা স্যুট,টাই পরিহিত শিক্ষিত ভদ্রলোক.ভদ্রতার পোষাক তুমি খুবইচমৎকার! সব চুরি ঢেকে ফেল!
মনে মনে ভাবি হয়তো কোন একদিন রহিমমিয়ার মেয়েরা একদিন সেই বাসের নারীযাত্রীদের সিটে থাকবে.
হয়তো তাঁর ছেলে বাসের সেই অতি উদ্যমী মাচো ম্যানদের জায়গায় থাকবে নয়তো রাস্তার সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের জায়গায়.
তখন তাঁরা সবাই কি এই ঘটনার বাসেরচরিত্রগুলোর ভূমিকা পালন করবে? নাকি করবে নতুন কিছু,নিবে নতুন কোন পদক্ষেপ যা হয়তো আমাদের আগেই করা উচিৎ ছিল,আমাদের আগেই নেয়া উচিৎ ছিল.
নাকি কেউ বলবে আমার বাবাও এমন রহিম মিয়া ছিল,আমার বাবা তো কিছু মানুষের পকেটমারে কিন্তু অনেক পকেটমার আছে যারা ষোলকোটি মানুষের পকেট মারে! তাঁরা কি সেই বড় পকেটমারদের শায়েস্তা করবে? নাকি তৃপ্তির ঢেকুরের সাথে সবকিছু হজম করে নেবে?
উত্তর জানতে সময়ের অপেক্ষায় রইলাম…..
বাস্তব একটা দৃশ্যকল্প মনে হলো
বাস্তব একটা দৃশ্যকল্প মনে হলো ।শুভকামনা রইলো ।
বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে
বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে
হুম ভালো হয়েছে
হুম ভালো হয়েছে
(No subject)
:ফেরেশতা:
ভালো লাগল
ভালো লাগল :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ: :থাম্বসআপ:
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ :ফেরেশতা:
(No subject)
:অপেক্ষায়আছি:
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ