আমার এক আদরের ছোট ভাই, পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাপোর্ট করে। তার চলাফেরা সবই ঐ ধরনের মানুষদের সাথেই এবং তারা সবই ওর চেয়ে অনেক সিনিয়র, ভাইটা আমার একটু ইঁচড়ে পাকা টাইপ ওর চলাফেরা সব বড়দের সাথে। এবং তাদের এলাকাটাও বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা। একদিন রাতে ওদের বাসায় খাওয়ার সময় সে আমাকে বলল বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে থাকলে কতই না ভালো হতো। তাদের সেনাবাহিনী কত শক্তিশালী, তাদের দেশ কত উন্নত, আমরা তাদের সাথে থাকলে তাদের মতই উন্নত হতে পারতাম, ৪০ টাকা কেজি চাল কিনে খাওয়া লাগতনা এইসব নানা হাবিজাবি। ওর কথায় আমার হাসিই পাইলো। হাসি দিয়ে বলি ওদের দেশ কতোটা উন্নত সেটা তুমিই ভালো জানো, তবে জেনে রাখো ওদের দেশে যা আছে সবই আমাদের থেকে চুরি করা সম্পদ এবং সেই চুরি করা সম্পদের উপরেই ভর করে আজ ওরা টিকে আছে। নাহলে এতদিনে শিয়াল কুকুর ওদের টেনে নিয়ে যেতো। আসলে ছোট ভাই এর বয়সও বেশি না। ১৩-১৪ বছর। ও যা বলছে তা সবই শোনা কথা। এবং কথা গুলো ও শুনেছে ওর চলার সাথী সেই সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকেই, এটা শতভাগ নিশ্চিত। এবং পাকিস্তান ক্রিকেট টীমের প্রতি অনুরাগি হওয়ার কারনেই এসব কতা ও নির্দ্বিধায় বিশ্বাসও করেছে এবং আমার সাথে সেইটা নিয়ে আলোচনাও করছে। তখন আমি ওকে নিচের পরিসংখ্যানগুলো দেখালাম। দেখার পর ওর মুখ দিয়ে আর কথা বেড় হয়না। এবং আমার কথাগুলো তার মেনে নিতে যথেষ্ট কষ্টও হচ্ছিল। পাকিস্তানের একজন সাপোর্টার যখন দেখে তার পাকিস্তান কত খারাপ তখন যে অবস্থা হয় ওর ও ঠিক কই অবস্থা। এখন আসি মূল কথায়। আসলে যারা ভাবে যে পাকিস্তান ভাগ না হলেই ভালো হতো এবং আমরা ভালো থাকতে পারতাম তারা সাধারণত তিন ধরনেরঃ
১. যাদের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি সম্পর্কে ধারনা প্রায় শূন্যর কোঠায় এবং পাকিস্তানের বর্তমান সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কেও তাদের কোন ধারনাই নেই।
২. যারা সব জানে তারপরেও পাকি জারজদের দালালি তাদের রক্তে মিশে আছে।
৩. এই দলে আমার সেই ছোট ভাইদের মত মানুষ যারা প্রথম ও দ্বিতীয় দলের সহজ শিকার।
দ্বিতীয় দল অর্থাৎ পাকি জারজদের জন্য আমার কিছু বলার নেই আমার এই নোটটি বাকি দুই দলের জন্য যারা মূর্খতা ার গোঁড়ামির জন্যই বলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে থাকলেই ভালো হতো। নিচের পরিসংখ্যান থেকে আমরা দেখতে পাবো পাকিস্তানী শোষকগোষ্ঠী আমাদের কিভাবে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিকভাবে বৈষম্য করেছে।
১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ৩০ কোটি টাকা করে মোট ১৮০ কোটি টাকা পূর্ব বাংলা থেকে নিয়ে পাকিস্তানের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হয়েছে। ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ এই দু বছরে প্রাদেশিক সরকারের উন্নয়ন খাতে সরকার প্রদত্ত ঋণের ২৪ কোটি টাকার মধ্যে শুধু এক পাঞ্জাবেই বরাদ্দ করা হয় ১০ কোটি টাকা আর সারা পূর্ব বাংলায় ৮ কোটি টাকা। আর বাকি ছয় কোটি টাকা ব্যয় করা হয় পশ্চিম পাকিস্তানেই। অর্থাৎ ঋণের ২৪ কোটি টাকার ১০+৬=১৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় পশ্চিম পাকিস্তানে আর মাত্র ৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় অধিক জনসংখ্যার পূর্ব বাংলায়। ১৯৪৯-৫০ ও ১৯৫০-৫১ সালের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের শতকরা ৯০ ভাগ ব্যয় করা হয় পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলা যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছিল তার সবটাই ব্যয় করা হয় পশ্চিম পাকিস্তানে।
১৯৫৫ সালেই বাঙ্গালিদের প্রতি কি পরিমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রবঞ্চনাবিদ্যমান ছিল টা বোঝা যাবে নিচের চিত্র থেকে। ১৯৫৬ সালের ৯ জানুয়ারী করাচি থেকেপ্রকাশিত ডন পত্রিকায় পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার যে তুলনা চিত্রতুলে ধরা হয় তা নিম্নরূপ:
বিদেশী সাহায্য হিসেবে প্রাপ্ত এবং রপ্তানি ও কর বাবদ পূর্ব বাংলার আয় থেকেকোটি কোটি টাকা পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করে হয়েছে। রাজধানী থেকেশুরু করে সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তর ও অন্যান্য সামরিক প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছেপশ্চিম পাকিস্তানে। কেন্দ্রীয় সরকার কিভাবে পূর্ব বাংলাকে বঞ্চিত করেছে তানিম্নবর্ণিত তথ্যে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে।
পঞ্চাশের দশকের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক শোষণের পরিপেক্ষিতেইস্বাধীনতার চিন্তা চেতনার জন্ম হয়। এই পটভূমিতেই ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়।
আমি জানি ৯৯% পাকিস্তান প্রেমীরা এখনো পাকিস্তান প্রেম ছাড়বে না। তারপরও তোরা জেনে রাখ হারামজাদারা তোরা তোদের মাতৃভূমির প্রতি অসম্মান করছিস!!!
(No subject)
:তালিয়া:
এদের জন্যই আজ আমরা এত সমস্যার
এদের জন্যই আজ আমরা এত সমস্যার আবর্তে জড়িয়ে আছি।ফাকিস্তান মুক্ত দেশ চাই।
কি বলব এই দেশের প্রধান বিরোধী দল এদের বুকে জড়িয়ে আদর করছে। :দেখুমনা:
ভালো লিখেছেন বাকের ভাই ।
ভালো লিখেছেন বাকের ভাই । :-bd
চমৎকার লিখেছেন। কিন্তু যতোই
চমৎকার লিখেছেন। কিন্তু যতোই পরিসংখ্যান দিয়ে বুঝান, পাকি বীর্য ভরা মস্তিস্কে এসব ঢুকবে না।
আতিক ভাই সেটা তো আমিও জানি।
আতিক ভাই সেটা তো আমিও জানি। শুধু তাদের জানিয়ে দিলাম তারা হারামজাদা।