কিছুদিন পূর্বে ওয়ারী এলাকার স্টার হোটেলে খাওয়া-আড্ডা দেয়ার সময় চরমপন্থী কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করা হচ্ছে অভিযোগে বুয়েটের ১১ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই বুয়েটে গত তিন-চার বছরে ছাগু সম্প্রদায় বেড়ে উঠছে, ইন ফেক্ট ছাগু সম্প্রদায়ের রিক্রুমেন্ট টার্গেটের টপে এখন বুয়েট। বুয়েটের ছাগু বিস্তারের কারণগুলো (আমার দৃষ্টিতে) অন্য একটি ব্লগের একটি আলোচনায় কমেন্ট হিসেবে লিখেছিলাম, তারই একটি পুনর্লিখিত রূপ আমার এই ব্লগ পোস্ট। পয়েন্ট বাই পয়েন্ট আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
কিছুদিন পূর্বে ওয়ারী এলাকার স্টার হোটেলে খাওয়া-আড্ডা দেয়ার সময় চরমপন্থী কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করা হচ্ছে অভিযোগে বুয়েটের ১১ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই বুয়েটে গত তিন-চার বছরে ছাগু সম্প্রদায় বেড়ে উঠছে, ইন ফেক্ট ছাগু সম্প্রদায়ের রিক্রুমেন্ট টার্গেটের টপে এখন বুয়েট। বুয়েটের ছাগু বিস্তারের কারণগুলো (আমার দৃষ্টিতে) অন্য একটি ব্লগের একটি আলোচনায় কমেন্ট হিসেবে লিখেছিলাম, তারই একটি পুনর্লিখিত রূপ আমার এই ব্লগ পোস্ট। পয়েন্ট বাই পয়েন্ট আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
১-বুয়েটে যারা এডমিশন নেয় তাদের বেশিরভাগই স্কুল-কলেজে ফার্স্ট-সেকন্ড পজিশনে বা প্রথমদিকে (টপ ৫%) থাকে, মোট কথা তারা কাইন্ড অব এলিট এই চিন্তা করার সুযোগ আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা, অভিভাবকমহল এবং ক্ষেত্রবিশেষে রাষ্ট্র করে দিয়েছে। এবং আর্থ-সামাজিক যে সেটআপ তৈরী করে দেয়া হয়েছে, তাতে সিজিপিএ এবং একাডেমিক সাফল্যই সমাজে ভাল এবং সুশীল ছেলে হিসেবে পরিচিতি পাবার মাপকাঠি। আর তাই বুয়েটের ছেলেরা রাজনীতি, দেশ নিয়ে সক্রিয় ভাবনাতে সম্পৃক্ত হতে ১% এফোর্ট দেয়না, কিন্তু সিজিপিএ ০.০১ বাড়াতে ৯৯% এফোর্ট দেয়।
২- সারাজীবন টপ এ থাকা সবগুলো ছেলে যখন একটা ক্লাসরুমে এসে ঢুকে, এরপর তাদের মধ্য যে রেস শুরু হয় সেটা সামাল দিতেই তাদের প্রথম দেড়-দুই বছর চলে যায়, ছাগু-ছাগুবান্ধব-ধর্মীয় উগ্রপন্থী এসব পছন্দ না হলেও ঘাটাঘাটি করার সাহস কারো থাকেনা, এই কাজে কেউ সময় অপচয় (!) করেনা। এরপর একটু সিনিয়র হয়ে গেলে তাদের মনে কেরিয়ার কিভাবে গড়তে হবে, দেশের বাইরে কিভাবে যেয়ে সফল হতে হবে এসব ভাবনা এসে ঢুকে মনে, আবারো তারা দেশের জন্য এগিয়ে আসতে পারেনা। মোটকথা প্রথম দুই বছর তারা খরচ করে নিজের মেধা প্রমানে, শেষ দুই বছর নিজের আখের গুছাতে। দেশের প্রতিষ্ঠানে সরকারের খরচে পড়ে দেশের প্রফেশনাল সেট আপের দুর্বলতার জন্য তারা দেশে থাকার কথা বিবেচনা করতে পারেনা, সেই দেশকে কিছু দেয়ার জন্য তারা রিস্ক নিতে চায়না। ইন ফেক্ট, দেশ এখনো তার নাগরিকের কাছ থেকে কিছু নেয়ার জন্য তৈরী না।
৩- আমি ঢাকার বাইরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। বুয়েটে এম.ফিল. করা উপলক্ষে আড়াই বছর ছিলাম এবং বুয়েটের নিকটবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়াশুনা করার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে এবং এর ছাত্রদের বেশ ভালভাবেই জানি, বুঝতে পারি। আমার ছোটভাইটি বুয়েটের বর্তমান ছাত্র, সে ছাগু বা ছাগুবান্ধব না। কিন্তু সে তার ছাগুবান্ধব বন্ধুদের প্রতি সহানুভুতিশীল। ব্যাপারটা অনেকটা এমন, ইইই বিভাগে ছাগু ধরলাম ৫ জন, এই ৫ জনের প্রতি সহানুভূতিশীল আরো ১৫ জন, এই ১৫ জনের প্রতি সহানুভূতিশীল আরো ৪৫ জন। শেষের ৪৫ জন কিন্তু প্রথম ৫ জনের প্রতি সহানূভুতিশীল না, মিলমিশ নাই, কেউ কাউকে তেমন একটা পছন্দও করেনা। এটা হয়েছে রাজনীতিবিমুখতার কারণে, ছাত্র সংসদ বন্ধ থাকার কারণে এবং বুয়েট ছাগু সমাজের টার্গেটে পরিনত হবার কারণে।
৪- আমার ছোটভাই এর এইচএসসি ২০০৯ এ, তার বুয়েট সহপাঠীদের ৯০% ই অনলাইনে সক্রিয়, এর উল্টোদিকে আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করি আমার ক্লাসের ১৫-২০% ছাত্র-ছাত্রী অনলাইনে সক্রিয়, তাদের ফেসবুক কর্মকান্ড, ব্লগ পোস্ট শেয়ার করা বা ব্লগিং করা থেকেই আমার এই ধারণা। বুয়েটের ছেলেরা অনলাইনে বেশি একটিভ, এর প্রমান বিভিন্ন ব্লগ প্লাটফর্ম থেকেই পাই। অনেক মুক্তচিন্তার ব্লগ প্লাটফর্মের একটা বড় অংশ বুয়েটিয়ান, তারা কিন্তু ছাগু বা ছাগুবান্ধব নন, তারা পচে যাওয়া নয়, কারণ তারা যখন ছিলেন তখন তাদের কেউ টার্গেট করেনি। ফেক্ট ইজ দেট, বুয়েট ২০০৮/২০০৯ থেকে ছাগুসমাজের রিক্রুট টার্গেটে পরিনত হয়েছে। কারণ বুয়েট ছাত্রদের অনলাইনে অতি সক্রিয়তা, মাঠের রাজনীতিতে অতি নিষ্ক্রিয়তা। ঢাবি বলেন বা জাবি বলেন বা চবি বা রাবি এগুলোর রাজনৈতিক কাঠামো অনেক আগেই পচে গেছে, এখানে নতুন করে রিক্রুটিং টার্গেট নিয়ে কার্যক্রম শুরু করার কিছু নাই। কিন্তু বুয়েট সে তুলনায় একটা টেস্ট সেম্পল, সোনার ডিম দেয়া হাঁস।
৫-ছাগু সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বে নজর দিলে দেখবেন সেখানে বুয়েটিয়ান কেউ নেই, কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের থিঙ্ক ট্যান্ক হিসেবে বুয়েটিয়ানদের গুরুত্ব বাড়তেছে, এটাই বুয়েটে ছাগু এবং ছাগু বান্ধব পরিবেশ তৈরির পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে। হিজবুত তাহরীর মোটামোটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাত দিয়ে তৈরী হওয়া সংগঠন। শুরুতে এর নেটওয়ার্ক ঢাবি, ঢাকা কলেজ এবং বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমাবদ্ধ ছিলো। এটাকে যখন নিষিদ্ধ করে বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন বুয়েটকে টার্গেট করা হয়েছে সমর্থনবৃদ্ধির জন্য, যোদ্ধা বাড়ানোর জন্য। ঠিক তেমনি, যুদ্ধাপরাধী বিচার, শিবির নিধন এসব জাতীয় ইস্যু তৈরী হবার পর বুয়েটে রিক্রুট শুরু হয়েছে ঝড়ো গতিতে। এবং মাঠের রাজনীতিতে অজ্ঞ বুয়েটিয়ানরা সহজ শিকারে পরিনত হচ্ছে। শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা, নজরদারির অভাব, কো-কারিকুলার কর্মে উত্সাহ প্রদানে অনীহা এগুলোই মূল কারণ।
৬- মাসখানেক হলো পিএইচডি করে দেশে ফিরলাম। শাহবাগ আন্দোলনের সময় দেশের বাইরে ছিলাম এবং দেখেছি দেশের বাইরের প্রতিটি শহরে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বুয়েটিয়ান দের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে ছাগুবিরোধী সক্রিয় অংশগ্রহন। এসব প্রতিবাদ সমাবেশ কিন্তু রাজনীতি অজ্ঞ বুয়েটিয়ানরাই আয়োজন করেছে, ব্যানার-ফেস্টুন বানিয়েছে, লিখেছে। অনলাইনে সক্রিয় বুয়েটিয়ান ব্লগার যারা বেশ পরিচিত তারা প্রায় সবাই মুক্তচিন্তার অধিকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সাথে একাত্মতা ঘোষণাকারী, বুয়েটিয়ান কিন্তু পরিচিত ছাগু ব্লগার খুব বেশি নেই। তাই আমি এখনো আশাবাদী। দেশের বাদবাকি পুরাতন প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক আগেই পচে গেছে, বুয়েট পচে যাবার পথে। বুয়েটকে শুধু ‘ছাগু’ ট্যাগ দিয়ে বাঁচানো সম্ভব না, আপনার সহযোগিতা এবং সচেতনতাই বুয়েটকে কেবলমাত্র বাঁচিয়ে রাখার ক্ষমতা রাখে। ‘ট্যাগ’ দিলে অবস্থা আরো খারাপ হবার চান্স বেশি।
আরেকটা কথা, দিনশেষ এ দেশে ছাগুদেরই রাজত্ব। লিখিত আদর্শের উপর আস্থা রেখে দেশের মানুষ টিকে থাকতে পারতেছেনা, নিগৃহীত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর তাই বিএনপি-জামাত ছাগু জেনেও, তাদেরকে খারাপ জেনেও চক্রে পড়ে পাঁচ বছর পর পর ভোট দিয়ে ক্ষমতার স্বাদ দেয়া হচ্ছে। দেশে গড়ার দায়িত্ব বা দেশকে খারাপ করার দায়িত্ব শুধু বুয়েটিয়ানদের না, তাই অযথা বুয়েট নিয়ে আমরা দিনের পর দিনের নষ্ট না করি। ছাগু সংগঠন কোনটারই শীর্ষ নেতৃত্বে বুয়েটিয়ান নাই এবং তাদের মাঠের কাজ-কর্মেও রাজনীতিবিমুখ এবং জিপিএ ছাড়া আর সবকিছু নিয়ে অলস বুয়েটিয়ানদের অংশগ্রহন নাই বললেও চলে। তবে হ্যা, অনলাইন কর্মকান্ডপ্রেমিক বুয়েটিয়ানদের মাঝ থেকে যে ছাগু রিক্রুটমেন্ট চালানো হয়েছে তা সফল, তাই বাঁশের কেল্লা টিকে আছে বহাত তবিয়তে। বেলাশেষে বর্তমান বুয়েটিয়ানদের দৌড় অনলাইন পর্যন্ত, প্রাক্তনতো বেশিরভাগই দেশের বাইরে, তাদের দৌড়ও অনলাইন পর্যন্ত। কিন্তু অনলাইনের দৌড়টা ধীরে ধীরে বিগ ফ্যাক্টর হয়ে উঠছে এবং সেটা অনলাইনেই। মাঠের ফলাফল অনলাইন কর্মকান্ড দ্বারা প্রভাবিত না, সেটা সিরি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকেই স্পষ্ট।
আমি জানি না আপনার এ লেখা
আমি জানি না আপনার এ লেখা কতজনের কাছে পৌছাবে, বা পৌছালেও কতটা গুরুত্ব পাবে, কিন্তু আমি বলবো এটা একটা অত্যন্ত সময়োপযোগী লেখা। একটা বিপর্যের সম্ভাবনার শুরুতেই আপনি যাকে বলে Flag raise করেছেন। আমরা সাধারনত কোন কিছু ঘটে যাওয়ার পর প্রচুর “বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ দেই কিংবা “হুম, আমি আগেই বলেছিলাম (!!!) এরকম কছু একটা হবে” জাতীয় মন্তব্য করে থাকি অবলীলায়। কিন্তু আমাদের দৌড় ওই পর্যন্তই। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। দেখা যাক ফলাফল কি হয়। আরেকটা কথা, আপনার লেখা বেশ সুপাঠ্য হয়েছে।
একদম সঠিক সময়ে লেখাটি
একদম সঠিক সময়ে লেখাটি লেখেছেন :তালিয়া:
বুয়েটকে শুধু ‘ছাগু’ ট্যাগ
এটাই মূল কথা। আমাদের বেশীর ভাগ অনলাইন বীরেরা আবার ছাগু ট্যাগ দিতে পারলে বিরাট অর্গাজমের স্বাদ পায়। খুঁজে খুঁজে মানুষকে ছাগু বানানোর মাঝেই এদের ফাইট সীমাবদ্ধ। ভালো লাগল আপনার লেখাটা। আশা করি বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঠিকই সামলে নিয়ে বুয়েটকে ছাগুত্ব থেকে রক্ষা করবে।
একটা গুরুত্বপুর্ন বিষয় হচ্ছে, বুয়েটে কিন্তু জামাত তাঁদের রিক্রুটিং শিবিরের মাধ্যমে নয়, বরং হিজুর আবরণে করার চেষ্টায় আছে। হিজবুত তাহরির একটা আন্তর্জাতিক সংগঠন হলেও, বাংলাদেশে হিজুরা শিবিরের মুদ্রার ওপিঠ। এটা অনেকেই জানে না। বুয়েটের অবস্থান ঢামেক এর পাশে হওয়াতে এই জিনিসটা দেখেছি নিজেই।
(No subject)
:থাম্বসআপ:
প্রজন্ম ব্লগে লেখাটা পড়েছি ।
প্রজন্ম ব্লগে লেখাটা পড়েছি । এখন এখানে পড়লাম । যুক্তিগুলা ভাল হইছে !!!
আর এই দুইটা কথা বেস্ট লেগেছে এবং সহমত পোষণ করছি –
আসলেই লেখাটা খুব ভাল।খুব
আসলেই লেখাটা খুব ভাল।খুব সুন্দর