মুক্তিযোদ্ধার জীবনযুদ্ধ : চোখ ভরে যায় পানিতে___ !
নুন আনতে পানতা ফুরানো -এ কথাটি যেন সহজেই মিলে যায় তাঁর জীবনের সাথে। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে একসময় সামান্য আয়-রোজগার করতেন তিনি। এখন তাও আর পারেন না। বয়স প্রায় সত্তরের কাছাকাছি। শরীর আর চলে না। অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে কর্মক্ষমতা আর শ্রবণশক্তি। না পারেন নিজে ভাল-মন্দ কিছু খেতে- না পারেন পরিবারের মুখে ভাল-মন্দ কিছু তুলে দিতে। অনাহারের যন্ত্রণা আর পরিবারসহ নানাজনের তিরস্কার মাথায় নিয়ে শ্রীমঙ্গলের পরিচিত পথে পথে ঘুরে বেড়ান মুক্তিযোদ্ধা বসন্ত ঘোষ।
মুক্তিযোদ্ধার জীবনযুদ্ধ : চোখ ভরে যায় পানিতে___ !
নুন আনতে পানতা ফুরানো -এ কথাটি যেন সহজেই মিলে যায় তাঁর জীবনের সাথে। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে একসময় সামান্য আয়-রোজগার করতেন তিনি। এখন তাও আর পারেন না। বয়স প্রায় সত্তরের কাছাকাছি। শরীর আর চলে না। অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে কর্মক্ষমতা আর শ্রবণশক্তি। না পারেন নিজে ভাল-মন্দ কিছু খেতে- না পারেন পরিবারের মুখে ভাল-মন্দ কিছু তুলে দিতে। অনাহারের যন্ত্রণা আর পরিবারসহ নানাজনের তিরস্কার মাথায় নিয়ে শ্রীমঙ্গলের পরিচিত পথে পথে ঘুরে বেড়ান মুক্তিযোদ্ধা বসন্ত ঘোষ।
বসন্ত বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ আমার মনের মধ্যে ভীষণভাবে দাগ কেটেছিল। সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নিলাম মরি আর বাঁচি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেবই। আমার মা বারবার যুদ্ধে না যাওয়ার জন্য আমাকে নিষেধ করতে থাকলেন। মাকে না জানিয়ে যুদ্ধে চলে গেলাম। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে আমরা সপরিবারে ভারতের আশারামবাড়ির অমর কলোনি চলে যাই। সেখানে গিয়ে তখন দেখা পাই শ্রীমঙ্গল থেকে আসা কার্তিক কর্মকার, অনিল দেবনাথ, নিপেন কর্মকার, আকলু মিয়া, নন্দলাল গোয়ালা, দুলাল কর্মকার, রহমান মিয়ার। এঁরা কেউই আজ জীবিত নেই। আমরা সবাই প্রশিক্ষণে আগ্রহী প্রার্থীর তালিকায় নাম লেখাই। তারপর ট্রেনিংয়ের জন্য কৌলাশহরের কাছাকাছি অমপিনগর চলে যাই।
তিনি আরো বলেন, অমপিনগরে প্রায় একমাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে খোয়াইয়ের সিঙ্গিনালা ক্যাম্পে চলে আসি। এটি ভারতের একটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল। পাহাড়ি ছড়া অতিক্রম করে আমরা সিঙ্গিনালা ক্যাম্পে থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা, শ্রীমঙ্গলের আমরুইলছড়া, সাতগাঁও, টিপরাছড়া, কালাপুর প্রভৃতি স্থানে যুদ্ধ করেছি। হাতে ছিল থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল। মাঝে মাঝে গ্রেনেট এবং টাইম বোমাও ছুড়তে হয়েছিল কমান্ডারের নির্দেশে। স্টেনগান দিয়ে গুলিও করেছিলাম কয়েকবার। আমাদের কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন শফিক উল্লাহ এবং আমাদের প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন শামসুল হক সুবেদার। এই সিঙ্গিনালা ক্যাম্পই ছিল আমার কর্মক্ষেত্র। সিরাজ মিয়া, নিতাই তাঁতি ও সুধীর দাস এই তিনই আমার সহযোদ্ধা। এরা এখনও জীবিত আছেন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বসন্ত বলেন, ‘পারকুল চা বাগানে পাকবাহিনীর সাথে আমাদের মুখোমুখি যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছিলাম। বরাবরের মতো বেঁচে থাকা পাঞ্জাবিদের (পাক-বাহিনী) আমরা ধরে আগরতলা প্রধান ক্যাম্পে চালান করে দিতাম। পাক-বাহিনীরা যাতে প্রবেশ করে তাদের ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে না পারে এর জন্য তালিকা করা কয়েকটি ব্রিজ আমরা গ্রেনেড মেরে উড়িয়ে দিয়েছিলাম।’
বসন্তের বাবার নাম কালিচরণ ঘোষ এবং মায়ের নাম উর্মিলা ঘোষ। তাঁর পৌত্রিক বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশীদ্রোণ ইউনিয়নের পূর্ব জামসি গ্রামে। তবে বর্তমানে তিনি স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পুত্রবধূ ও দুই নাতি-নাতনিকে নিয়ে সবুজবাগ এলাকার মালিপাড়ায় বসবাস করছেন। জায়গার পরিমাণ মাত্র দুই শতাংশ।
শুক্রবার সরেজমিন বসন্ত ঘোষের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দুইটি কক্ষে গাদাগাদি করে সবাই মিলে বসবাস করছেন। তাঁর একমাত্র ছেলে ও মেয়ের নাম যথাক্রমে বিষু ও উজ্জ্বলা। বিষু পেশায় কাঠমিস্ত্রির সহকারি।
বসন্ত আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এ দেশের জন্য যুদ্ধ করে কী লাভ হয়েছে আমাদের? মুক্তিযোদ্ধাদের তো কষ্টের সীমা নেই। টাকার জন্য আমার একমাত্র মেয়েটার বিয়ে হচ্ছে না বাবু। তার বয়স বেড়ে যাচ্ছে।… কথাগুলো বলতে বলতে পানিতে ভরে যায় তাঁর চোখ। কণ্ঠ ভারি হয়ে আসে কান্নার চাপে। নিজেকে সামলে আবার বলেন, মেয়ের বিয়ের টাকার জন্য এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতেও তেমন সুবিধা করতে পারছি না। প্রায়ই অসুস্থ থাকি। কাজকাম কিছুই করতে পারি না।
বসন্তের স্ত্রী উমা ঘোষ বলেন, আমিও মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে খাই। আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা হলেও অনেকেই দাম দেয় না তাঁকে। নানাভাবে নানা সময় কথার ছলে তিরস্কার করে। তখন মনে হয় – কী পেলাম আমরা? না অর্থ, না একটু স্বচ্ছলতা? কিছুই তো পাইনি। আমাদের সংসারে দুঃখ-কষ্টের শেষ নেই। টাকা অভাবে একমাত্র মেয়েটার বিয়েও আটকে আছে। মেয়েটার কোনো গতি না হলে তো আমি মরেও শান্তি পাবো না।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আবদুল মতলিব বলেন, আমাদের এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বসন্তর অবস্থা খুব করুণ। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা মাঝে মাঝে তাকে সায়-সাহায্য করে থাকি। তবে তাও যথেষ্ঠ নয়।
মাথাটা নিচু হয়ে গেল।
আমাদেরকে
মাথাটা নিচু হয়ে গেল।
আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।
হুম
হুম
বাংলাদেশে কি মুক্তিযোদ্ধারা
বাংলাদেশে কি মুক্তিযোদ্ধারা আছে নাকি এখন আর মুক্তিযুদ্ধ তো এখন বইয়ের পাতায় আর মুক্তিযোদ্ধারা আছে নামে এবং সরকারের লিস্টে ।। সোনার বাংলা সোনার মানুষদের মূল্য দিতে জানেনাই হয়তো জানবেওনা………
(No subject)
:ভাঙামন:
আমরা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ
আমরা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তাঁদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারিনি। স্বাধীনতার পর থেকেই একের পর এক ষড়যন্ত্রে মুখ থুবড়ে পড়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা। একদল আছে রাজাকারদের বাঁচানোর ধান্দায়, আরেক দল আছে চেতনা নিয়ে ব্যবসার ধান্দায়।
সবাই নিজের স্বার্থ ব্যবসায়
সবাই নিজের স্বার্থ ব্যবসায় ব্যস্ত….
এরা না’কি জাতির শ্রেষ্ঠ
এরা না’কি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান!!!
ধিক! শত ধিক! এই জাতির প্রতি…
(No subject)
:ভাঙামন: :ভাঙামন: