হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ পূর্ব ১৩ দফা দাবী বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেবোনা এমনটা ভাবলেও অরাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক দাবী বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দোদুল্যমনতা এবং বলির পাঠা হবার ভয়ে পিছিয়ে পড়া নারী জনগোষ্ঠীর প্রতিবাদ আমার নির্লিপ্ততা ভেঙ্গে হাতে কলম ধরিয়ে দিয়েছে। কাটা দিয়ে কাটা তোলার সহজাত কৌশল ও বিষে বিষক্ষয় করার প্রচলিত নিয়মে; পুরুষতান্ত্রিক মানুুষিক মোড়কে ফরিদা আখতারের হেফাজতি কলাম এ বিষয়ে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে দারুন ভাবে।
হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ পূর্ব ১৩ দফা দাবী বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেবোনা এমনটা ভাবলেও অরাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক দাবী বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দোদুল্যমনতা এবং বলির পাঠা হবার ভয়ে পিছিয়ে পড়া নারী জনগোষ্ঠীর প্রতিবাদ আমার নির্লিপ্ততা ভেঙ্গে হাতে কলম ধরিয়ে দিয়েছে। কাটা দিয়ে কাটা তোলার সহজাত কৌশল ও বিষে বিষক্ষয় করার প্রচলিত নিয়মে; পুরুষতান্ত্রিক মানুুষিক মোড়কে ফরিদা আখতারের হেফাজতি কলাম এ বিষয়ে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে দারুন ভাবে।
পুরুষ হিসেবে নারীর পুরুষ অধীনতা-পুরুষ নির্ভরশীলতা, গৃহবন্ধীতা নিজের জন্য উপভোগ করলেও নিজ কন্যা বা বোনের ক্ষেত্রে একই আচরণ আমরা কামনা করি না। এই দ্বীচারিতা আমাদের মানুষিকতায় এতটাই প্রবল যে নিজে একাধিক সম্পর্ক্য বজায় রাখলেও পাত্রী হিসেবে কুমারী কন্যা আমাদের একনম্বর পছন্দ ! হাঁসীয় পুরুষ নিয়ে আলোচনা তুলে রাখলাম অন্য সময়ের জন্য, এখন আমি ১৩ দফা নিয়ে।
কোন অরাজনৈতিক দল এমন দাবী করতে পারে কিনা বা এমন দ্বিতীয় কোন উদাহরণ আছে কিনা, আমার জানা নেই। নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি দাবী করে আলোচনায় আসা এই সংগঠন তাদের সভা থেকে দাবী ফর্দ তুলে ধরে বি.এন.পি জামাতের সমর্থনে-এরশাদের পানি খেয়ে। তারা নিজেদের নবী প্রেমী দাবী করলেও সেই মঞ্চেই নবীকে ব্যাঙ্গ করে কবিতা লিখা ফরহাদ মাজহার কোন হিসাবে স্থান পেয়েছিলেন তা অজানাই রয়ে গেল ! সবচেয়ে আশ্চর্য্যের বিষয় হলো নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি তাদের ১নং দাবী নয়! প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় দাবী সংযুক্ত করে এ তালিকা ১৩তে পরিনত করলেও কোথাও মসজিদের অভ্যন্তরে জামায়াত শিবিরের অপতৎপরতা, মসজিদের মাইকের অপব্যবহার বা বাঙ্গালী জাতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ যুদ্ধাপরাধীর বিচার বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি! নাস্তিক ব্লগারদের কথিত লেখনী যাদের অনুভূতিতে তীব্র আঘাত করে সেই তাদেরই অনুভূতি ভোতা হয়ে যায় যখন জামাত শিবির জাতীয় মসজিদের অভ্যন্তরে টাইলস্ ভাঙ্গে, কার্পেটে আগুন দেয় বা মাহমদুর রহমান পবিত্র মক্কা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন নিয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন রিপোর্ট প্রকাশ ও প্রচার করে! এ এক তাজ্জব একচোখা অনুভূতি!
এখন আসি প্রধান বিরোধীদলের সহযোগীতা, মহাজোটের একাংশের সমর্থন, সরকারী দলের বিবেচনা-নাকচ-মধ্যযুগ ইত্যাদির ঢামাঢোলের ভিতর নারীদের প্রতিবাদ ও আন্দোলন বিষয়ে। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার ৪ এবং ৫নং দফার কিছু অংশ নারী সংক্রান্ত। ৪নং দফা হলো “ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা”। এই দফার প্রথমাংশ অর্থাৎ বেহায়পনা সামাজিক নৈতিকতার মানদন্ডে ঘৃন্য একটি কাজ। সমাজের এমন কোন মানুষ নাই যারা কোনরূপ বেহায়াপনা উৎসাহিত বা পছন্দ করেন। “বেহায়াপনা” সামাজিক নৈতিকতার ভিত্তিতে এমন শাসনে রয়েছে যা আইনগত যে কোন অপরাধের তুলনায় শূন্যই বলা চলে। এমন কোন্ পুরুষ বা নারী পাওয়া যাবে না যারা প্রকাশ্যে বেহায়াপনা করতে চায়। কোন্ সামাজিক বাস্তবতায় এই অংশটি দাবী আকারে আনা হআে তা জানতে দাবী ড্রাফটকারীগণের দ্বারস্থ হবার কোন বিকল্প নেই। একই দফার ব্যভিচার দন্ডবিধি অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যে বিষয়ে আইনী কাঠামো বিদ্যমান তাও দাবী ফর্দে জায়গা করাকে বিদ্যমান আইনী কাঠামো বিষয়ে অজ্ঞতাকে নির্দেশ করে কিনা সাধারণ মনে এই জিজ্ঞাসিত। সমস্যা তৈরি হয়েছে এই দাবীর “প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ” অংশটুকু নিয়ে। এই অংশের “প্রকাশ্যে” এবং “অবাধ বিচরণ” শব্দ তিনটির আক্ষরিক শব্দের ভাবার্থের চৌহদ্দী নিয়ে যে শংকা ও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে তাই মূলত নারীদের আতংকিত করেছে বলে আমার ধারনা। প্রকাশ্য বলতে কি বা কতটুকু, এই প্রকাশ্য কি সামাজিক বাস্তবতা না ইসলামিক কঠোরতাকে অনুসরন করবে সে বিষয়ে দাবী পরবর্তী কোন ব্যাখ্যাতেও বিশ্লেষন করা হয়নি। একই ভাবে “অবাধ বিচরণ” বলতে কি বোঝানো হয়েছে তাও বিমূর্ত রয়ে গেল। কোন অবাধ মেলামেশাতে তারা ক্ষুব্ধ? অবাধে বিচরন করে স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখায়? নাকি অবাধে বিচরণ করে মিলেমিশে আত্ম-সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করায়? নাকি অর্থনৈতিক মুক্তিলাভের প্রত্যাশায় পুরুষ ও নারীর অবাধে বিচরণ করে মিলেমিশে কর্মস্থলে কর্মরত থাকায়? নাকি দেশমাতৃকার মুক্তি সংগ্রামে কাধে কাধ রেখে নারী পুরুষের যৌথ প্রতিরোধে? নাকি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নারী পুরুষে যৌথ আত্মত্যাগে? কিসে তারা ক্ষুদ্ধ? অবাধ বিচরণে জাতি রাষ্ট্রের কোথায় কি ক্ষতি হয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর তাদের কাছে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। ফলতঃ দাবী যারা করেছে তাদের অর্ধাঙ্গীদের বাস্তবিক অবস্থাতেই দাবীর লক্ষ্যবস্তু মনে করতে হবে। তারা প্রতিবাদের মুখে নারীর আর্থিক কর্মকান্ডকে মেনে নিয়ে বিবৃতি দিলেও তাদের নারীদের সামাজিক অবস্থা খোজ নিলেই যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। তারা তাদের ঘরের নারীদের কতটুকু স্বাধীনতা দেয় তা থেকে সমগ্র নারীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুধাবন করা যাবে!
সর্বশেষ আসি ফরিদা আখতার এর বিষয়ে। বাহ্যিক ভাবে ফরিদা আখতার একজন নারী হলেও মনস্তাত্ত্বিক ভাবে তিনি পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের ধারক ও বাহক। শ্বাশুড়ী কর্তৃক বউ এর আচরন নারী কর্তৃক নারী নির্যাতন মনে করলে জেন্ডার চিন্ডায় ভুল হয়ে যাবে। শ্বাশুড়ী শারীরিক ভাবে নারী হলেও পারিবারিক ক্ষমতায়ন তাকে পুরুষতান্ত্রিক আচরনে অভ্যস্ত করে তোলে। যার ফলশ্র“তিতে নারী হয়ে তিনি নারীকে কখন অবদমন করেন তা উপলব্ধি করতে সক্ষম থাকেন না। ফরিদা আখতার ইসলামিক দৃষ্টিকোন থেকে শাস্তিযোগ্য চাল-চলন করেও (মাথার চুল দেখা যাওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশ দেখা যাওয়া) অন্য নারীদের হেফাজতী দফায় পৃষ্ঠ হতে কলম ধরেন। বাঙ্গালী আবহমান সামাজিক স্বকীয়তায় সমস্ত জীবন অতিবাহিত করে শেষ জীবনে অনুজ নারীদের শালীনতার সঙ্গায় বিজাতীয় পোশাক চাপিয়ে দিতে চান। ফরিদা আকতার হিজাব পরে, হাতে গ্লাভস পরে সর্বোপরী বোরখা পরে শালীনতার সহিত বাকি জীবন যাপন করবেন কি জানি না তবে কোন নারী এজাতীয় পোশাক পরবেন কি পরবেন না সে বিষয়ে তার স্বাধীনতায় কোনরূপ হস্তক্ষেপ নারীর স্বাভাবিক জীবন যাপ উপর হস্তক্ষেপ বলেই গন্য হবে।
নারীর প্রতি পুরুষের কুৎসিত দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা প্রসূত অপরাধ তথা ধর্ষণ, ইভটিজিং, এসিড সন্ত্রাসকে জুজু বানিয়ে তা নারী বিরুদ্ধে ব্যবহারের যে চেষ্টা তাই মূলত দোষী পুরুষকে বাচিয়ে দিয়ে নারীর স্বাভাবিক অগ্রযাত্রা ব্যহত করবে। হেফজত ইসলামের শাব্দিক চালাকির বিপরীতে নারীদের প্রতিবাদকে ফরিদা আকতার সহ অনেকে নারীদের ভোগ্যপন্য হতে চাওয়া, ক্রীড়ানক হতে চাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি বলে চালিয়ে দিতে ্রচাইছেন যা কূপমুন্ডকতা ছাড়া কিছুই নয়। এই অংশের মানুষদের জন্য করুনা ছাড়া অন্য কিছুই বরাদ্দ দিতে পারছিনা। নারীকে নারী ভাবার আগে মানুষ ভাববে সবাই এটাই প্রত্যাশা।
হুম।
হুম।
@আশরাফুল করিম চৌধুরী
হুম এর
@আশরাফুল করিম চৌধুরী
হুম এর মরমারথ বুজলামনা।
সম্প্রসারন আশা করছি…
ফরিদা আকতার আর ফরহাদ মজহার
ফরিদা আকতার আর ফরহাদ মজহার কোন প্রকৃতির, তা সচেতন সমাজের সকলেই জানে। সুতরাং এসব অবান্তর লোকদের লেখা-লেখির বিষয়ে সময় দেয়াটা বৃথা শ্রম ছাড়া আর কিছুই না বলে আমার নিকট প্রতীয়মান হয়…
হুম
হুম
সর্বশেষ আসি ফরিদা আখতার এর
আপনার এই বক্তব্যর সাথে একমত পোষণ করি । খুব ভালো লিখেছেন । অনেক ধন্যবাদ !
(No subject)
:গোলাপ:
ভালো লিখেছেন
ভালো লিখেছেন
কি আর বললব তাদের ঘরের স্ত্রী
কি আর বললব তাদের ঘরের স্ত্রী মেয়েরা হয়ত অবাধ বিচরন বলতে অন্য পুরুষের সাথে বিছানায় যায় পরক্রীয়া করে তাই সব মা বোন দের সন্দেহ করে।
হেফাজত অন্য কেউ নয় জামাত।
আমি যে বাসায় থাকি ঐ বাসায় পাচ তলায় জামাতের এক কর্মী থাকে সে হেফাজতের সব কাজেই বাসায় অনুপস্থিত ছিল।
(No subject)
:খুশি:
স্বার্থের জন্য এরাই ধর্মকে
স্বার্থের জন্য এরাই ধর্মকে বর্ম বানায়। ভালো লিখেছেন।
(No subject)
:গোলাপ: