প্রথম আলোর বহুল আলোচিত জরীপ নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন এখনও আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষ করে ফরহাদ মজহার-পিয়াস করিম-আসিফ নজরুল গং এখন টেলিভশন টক শো তে এই জরীপ কে শাশ্বত সত্যের মর্যাদা দিয়ে উদ্ধৃত করছেন। কিন্তু জরীপটি গ্রহনযোগ্য বিবেচনা করার আগে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছি না…
প্রথম আলোর বহুল আলোচিত জরীপ নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন এখনও আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষ করে ফরহাদ মজহার-পিয়াস করিম-আসিফ নজরুল গং এখন টেলিভশন টক শো তে এই জরীপ কে শাশ্বত সত্যের মর্যাদা দিয়ে উদ্ধৃত করছেন। কিন্তু জরীপটি গ্রহনযোগ্য বিবেচনা করার আগে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছি না…
১.একটি পত্রিকা যখণ জরীপ করে তখন তা করা হয় ওই পত্রিকার কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে। জরীপ পরবর্তী তথ্য বিশ্লেষণের জন্য কখনও কখনও অন্য কোন অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সাধারনত কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা নেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এই জরীপটি করা হয়েছে ওআরজি রিসার্চ কোয়েস্ট নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। কেন? প্রথম আলোর জনবলের অভাব? প্রথম আলোর কর্মীদের নিরপেক্ষতা, দক্ষতার উপর কর্তৃপক্ষের আস্থা নেই বলেই কি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভাড়া করে জরীপের পুরো দায়িত্ব দেয়া হয়?
২.জরীপে বলা হয়েছে কাদের মোল্লা এবং সাঈদীর রায়ের পর সারাদেশে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে তা সামলাতে সরকার সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে ৭৯ শতাংশ মানুষ। অথচ রায় দু’টির পর জামায়াত-শিবিরের তান্ডব সমর্থন করেন কি’না সে প্রশ্ন জরীপে করা হয়নি, বরং জরীপের পরবর্তী অংশে বলা হয়েছে ৬৫ শতাংশ মানুষ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে। তার মানে কি দেশের অধিধকাংশ মানুষ জামায়াত-শিবিরের সাম্প্রদায়িক হামলা, পুলিশ সদস্য হত্যা, নজিরবিহীন ধ্বংযজ্ঞ সমর্থন করে? জরীপে সুকৌশলে জামায়াত-শিবরেরর সাম্প্রতিক তান্ডবের প্রতি সামুষের সমর্থনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এটি কি বিশ্বাসযোগ্য। না’কি প্রথম আলোর ভাড়া করা প্রতিষ্ঠান জরীপের জন্য কি তিন হাজার জামায়াতের রোকন বেছে নিয়েছিল?(প্রথম আলোর এই জরীপে অংশ নেন তিন হাজার জন, জামায়াতের রোকন সংখ্যা ২৭ হাজার ৫০০)।
৩.জরীপে বলা হয়েছে ৫৫ শতাংশ মানুষ গণজাগরণ মঞ্চ সমর্থন করে না। ১৭ শতাংশ মানুষ গণজাগরণ মঞ্চের নাম শোনেনি। জরীপে ‘শাহবাগ মুভমেন্ট’ উপ শিরোনামের শেষাংশে বলা হয়েছে, এক বাক্যে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ-বিপক্ষ হিসেব করলে ৭১ শতাংশ বিপক্ষে আর ২৯ শতাংশ পক্ষে। শুধুমাত্র কট্টর বিএনপি সমর্থক এবং জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের মধ্যে জরীপ করা ছাড়া এই ফলাফল আসা কি সম্ভব?কিংবা গণজাগরণ মঞ্চকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেয় করার জন্যই জরীপের এই অংশ, এই প্রশ্ন কি ওঠে না?বাংলা নববর্ষ সংখ্যায় গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হাসনাত আব্দুল হাই এর লেখা রুচিহীন, নোংরা গল্পটি প্রথম আলোর কোন অনিচ্ছাকৃত ভুল নয়, গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণেনর অংশ হিসেবে অত্যন্ত পরিকিল্পতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, জরীপের এই অংশ থেকে কি সেই প্রশ্নটিও ওঠে না?
৪.জরীপে বহুল আলোচিত হেফাজতে ইসলামের কর্মকান্ড এবং তাদের তের দফা নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিল না। কেন? হেফাজত কে দায়মুক্ত রাখার জন্য? ৫ মে’র পর থেকে হেফাজতের বিবৃতি অন্য কোন মূলধরারা দৈনিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ না হলেও প্রথম আলোতে প্রথম, শেষ কিংবা তৃতীয় পৃষ্ঠায় ছাপা হচ্ছে। প্রথম আলোর গোপন হেফাজত প্রীতি থেকেই কি জরীপ থেকে হেফাজতের তের দফা বাদ দেওয়া হয়েছে?অনেকে বলতে পারেন, প্রথম আলো হেফাজত কে গুরুত্বই দেয়নি, হেফাজতের বিবৃতি যে পত্রিকায় এখনও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়, সেই পত্রিকা হেফাজতকে জরীপে গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টি কি গভীর সন্দেহের সৃস্টি করে না?
৫.প্রথম আলোর জরীপে অন্য যে বিষয়গুলো(তত্ত্বাবধায় সরকার, সামরিক হম্তক্ষেপ প্রসঙ্গ, জোটবদ্ধ রাজনীতি প্রসঙ্গ) খুবই গতানুগতিক। নির্দিষ্ট করে এগুলো নিয়ে বিতর্ক না তুললেও যেহেতু এ মুহুর্তের অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে(যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ এবং গণজাগরণ মঞ্চ প্রসঙ্গ) প্রথম আলোর জরীপটি গভীর সন্দেহের সৃস্টি করেছে সে কারনে জরীপের অন্যান্য প্রসঙ্গগুলোও একবাক্যে গ্রহন করা যায় কি? জরীপটি প্রকাশ করা হয়েছে এমন সময়ে যখন জাতিসংঘ মহাসচিবের বিষেষ দূত এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ দূত বাংলাদেশ সফরে আসেন। তাদের সামনে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত-শিবির কে মহিমান্বিত করার জন্যই কি এই জরীপ? বর্তমান পরিস্থিতিতে এই জরীপের মধ্য দিয়ে প্রথম আলোর ভূমিকা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় না?
প্রশ্নগুলো পাঠক হিসেবে একান্তই ব্যক্তিগত।
বি.দ্র: এর আগে আমার ফেসবুক টাইম লাইনে স্ট্যাটাস হিসেবে প্রকাশিত
রাশেদ মেহেদী
সাংবাদিক
প্রথম আলোর ঐ জরীপের উপর প্রথম
প্রথম আলোর ঐ জরীপের উপর প্রথম দিনই পি করে দিছিলাম। এইধরনের ধান্দাবাজি প্রথম আলো এই প্রথম করল না। আগেও করেছে।
অপসাংবাদিকতাকে সবাই হলুদ
অপসাংবাদিকতাকে সবাই হলুদ সাংবাদিকতা বলে, আর আমি প্রথম আলোর সাংবাদিকতাকে বলি কালারফুল সাংবাদিকতা। আর সব রঙের বৈশিষ্ট নিয়ে চলে।
(No subject)
:হাহাপগে: :হাহাপগে: :হাহাপগে: :হাহাপগে: :হাহাপগে:
প্রথম বাল পত্রিকা পড়া আগেই
প্রথম বাল পত্রিকা পড়া আগেই বাদ দিসি।