সো? কেমন আছেন সবাই? এঞ্জয়িং দ্যা তুফান সরকার শো? উত্তরে ‘হ্যা’ বলতে কি লজ্জা পাচ্ছেন? আরে দূর, এতে লজ্জার কি আছে। ঝারুন এসব পাছে লোকে কিছু বলে, এসব ঘটনা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করার ভেতর লজ্জার কিছু নেই। অনেস্টলি স্পিকিং, আমি নিজেও এঞ্জয় করি। এসব খবর সব্বাই এঞ্জয় করে। মুখে বলে না, এই যা। ইনফ্যাক্ট মাঝে মাঝে এমন রেপ টেপ না হলে ঠিক জমে না। ‘তিন বছরের শিশু’, ‘সৎ বাবা কর্তৃক’ কিংবা ‘তিন মাস ধরে আটকে রেখে’—রেপের চেয়ে এসব বিশেষণগুলো আজকাল বেশি খাচ্ছে পাবলিক।
তুফান সরকারের রেশ কাটি কাটি করেও কাটছে না। কেন? মজা সেখানেই। ওখানে গল্প আছে, কেচ্ছা আছে। কখনও অটোরিক্সা থেকে তাঁর চাদাবাজি, কখনও তাঁর উত্থান কখনোবা আবার তাঁর স্ত্রীর বোনের কিসসা। এগুলো পাবলিক খাচ্ছে। সো, কিছুদিন হয়তো আরও চলবে, বাট কাহিনীর চার্ম শেষ হয়ে এসেছে।
ঘটনাটা প্রথম যেদিন পড়ি, সেদিন বেশ মজা পেয়েছিলাম। ভেবে দেখেছেন, প্রথমবার যখন মেয়েটাকে রেপ করে, তখন ব্যাপারটটা কি ছিল? সোজা সাপটা একটা রেপ। গরিবের মেয়ে, ক্ষমতাশালী একজন কাজটা করেছে। উত্তেজক তেমন কোন বিশেষণ নেই, সো ঘটনাটি নিয়ে কারো মাথাব্যাথাও নেই। অ্যাজ ইফ, ইট ওয়াজ নরমাল। কেউ স্টোরি করেনি, (কিংবা করে থাকলেও তেমন পাব্লিসিটি পায়নি, তাই আমি জানি না।) তার চেয়েও মজার ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েটির প্রথম রেপ রিপোর্ট না করাকে কেউই তেমন অপরাধ ভাবছে না।
তবে এরপরের রেপটায় অনেক মশলা ছিল। তাই প্রেসও তার খেলা দেখিয়েছে। ‘মা-মেয়ে’ ব্যাপারটার বাজার দর খারাপ না। সঙ্গে লীগের নেতা হলেও পাবলিক খায় ভাল। তবে এবার সবচেয়ে বেশি যেটা বাজার মাতিয়েছে, তা হচ্ছে মাথা ন্যাড়া করা। খবরটা এতোটাই চটকদার ছিল যে পত্রিকা বাহিনী আসল ছবি ছাপতেও দ্বিধা করেনি। কেউ কেউ প্রথমে ছবিটা ব্লার করেছিল, পরে দেখল যে তাদের সারকুলেশান কমে যাচ্ছে, সো, তারাও লাইনে চলে আসল। সো, দ্যা বটম লাইন ইজ, অনলি রেপ ইজ নো মোর সেন্সেশানাল। আর সেনসেশানাল না হলে ওসব অপরাধ, অপরাধ না। তুফান সরকারের স্ত্রীর বোনের ভাসায়, ‘টাকা দিলেই পুলিশ ম্যানেজ’।
অনেস্টলি স্পিকিং, এই রেপ নিয়ে লিখতে একদম ইচ্ছে করছে না। বাট করব কি। এই মুহূর্তে খবর বলতে তো, আর তেমন কিছু নেই। বৃষ্টি কিংবা রাস্তার বেহাল অবস্থা, সেই অর্থে তেমন খবর না, বৃষ্টি প্রতি বছরই হয়, রাস্তা প্রতিবছরই নষ্ট হয়, এবার এক্কটু বেশিই মাথায় হয়েছে, এই যা। ফেসবুকের কল্যাণে ট্রলিংও হচ্ছে আর সবাই নৌকায় যাতায়াত করায়, আওয়ামীদের একটু ভেংচি কাটা হচ্ছে, এই আর কি। সাথে, ‘নৌকায় ভরসা রাখুন’ ট্যাগলাইন নিয়ে কিছু হিউমার। বাআর রয়েছে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতি বনাম আওয়ামী নেতাদের বিবৃতি। আর নয়তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মারামারি। বাট, ঘুরেফিরে তো কাহিনী সেই একই, সরকারী দল শো। কিন্তু কেন ঘটছে এসব?
সহজ উত্তর হচ্ছে ‘ইমিউনিটি’। যেমন ধরুন এই রেপ কেসটায়। রেপটা কেন হল? সিম্পল উত্তর হচ্ছে, রেপ করার সুযোগ ছিল, তাই। সুযোগটা কেন পেল? এনিয়ে অনেক তত্ত্ব কপচানো যায়, আবার সোজা সাপ্টা উত্তর দেয়াও যায়। তো সোজা উত্তর হচ্ছে, খুব প্রচার না হলে, এদেশে রেপ করে পার পাওয়া খুব কঠিন কাজ না। আর সরকারী দলের ছানাপানা হলে তো কথাই নেই। ইমিউনিটি তখন অনেকটাই নিয়ম। ব্যাপারটা কেবল রেপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তা না, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হাতাহাতি কিংবা বিকৃত ছবি আঁকার দায়ে জেলে প্রেরণ। এই ইমিউনিটিই তুফান সাহেব এতদিন এঞ্জয় করেছিলেন। ইভেন প্রথমবার যখন রেপ করেছিলেন, তখনও। সো? কাহানি মুখরোচক না হলে, পাবলিকও যেমন খায় না, সরকারও এনিয়ে মাথা ঘামায় না। এবং ইমিউনিটি বহাল থাকে। এটা আওয়ামীদের ক্ষেত্রে কেবল প্রযোজ্য, তা না। এটা সব সরকারী দলের জন্যই সত্য।
বৃষ্টি ফ্রিস্টি নিয়েও তেমন কিছু হবে না। কেউ ‘খাল লোপাট’ নিয়ে স্ট্যাটাস দিবে, তো কেউ বৃষ্টিতে রাস্তায় ওলটানো রিক্সার ছবি দিবে। অ্যান্ড, দ্যাটস অল। এরবেশি আর কিছু হবে না। পরের বছর আবার একই কিসসা। সো, এনিয়েও কলাম লেখার মানে হয় না। তারচেয়ে আনিসুল সাহেব আর ইলেকশান করবেন না, এটা নিয়ে দুকলম লেখা যায়। কিংবা যেখানে সেখানে পলিথিন ফেলাই যে সব সমস্যার উৎস, তা নিয়ে উপদেশমূলক রচনা লেখা যায়। লিখব? নাহ, ওসব লেখার জন্য অবশ্য কিছু জাত বুদ্ধিজীবী আছেন, ওদের ভাত আর না মারি। বরং অন্য টপিকে যাই।
সিনহা সাহেব বনাম সরকার? ওটা পাতানো খেলা, না সত্যিই খেলা হচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে না। তবে বিএনপি সিরিয়াস খেলা ভাবছে। ওদিকে পাকিস্তানে হওয়া সুপ্রিম কোর্ট বনাম প্রধানমন্ত্রী খেলা দেখেও বিএনপি বেশ উৎসাহিত বোধ করছে। আওয়ামীরাও ইম্প্রেশান দেয়ার চেষ্টা করেছে, খেলাটা জেনুইন। আশায় আছে, সিনহা সাহেব এমন কিছু করবেন, যেন আওয়ামীরা ফ্যাসাদে পড়ে। ফেসবুকে দেখলাম ব্যাপারটাকে বিএনপির জন্য ফাঁদ বলা হচ্ছে আর বিএনপিও গাধার মত সেই ফাঁদে পড়ি পড়ি করছে। তবে খেলাটা দেখতে খারাপ লাগছে না।
বঙ্গবন্ধুর ছবি কেস? একটু পুরনো হলেও, খবরটায় নতুন সংযোজন হচ্ছে তারিক সালমান সাহেবের পোস্টিং ঢাকায় হয়েছে। বিজয়টা ঠিক কার হল, বুঝলাম না। পত্র পত্রিকা আর ফেসবুক পড়ে মনে হল, উনাকে আবার ওখানে পাঠালে, সাজু অ্যান্ড গং উনার জীবন অতিস্ট করে দিত, সো ঢাকায় আসতে পারাটাই উনার বিজয়। অর্থাৎ, সরকারী দল রকস।
ফেসবুকের এসব এক্টিভিজম কিংবা সেনসেশানাল রিপোর্টিং, আসলেই কি কাজে দিচ্ছে? ভাবছেন, সাজু সাহেব তো দান মেরেই দিয়েছিলেন, ফেসবুকই বরং তারিক সাহেবকে উদ্ধার করল। ফাঁকে ফেসে গেলেন কিছু পুলিশ আরে ডিসি সাহেব। তাই কি? সত্যিই কি কিছু হয়েছে? দেশে কি তুফান সরকার কিংবা সাজু সাহেব একটা? অনিয়ম করে শিক্ষক নিয়োগ কি কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই হয়?
মজা এখানেই। এনিয়ে সত্যিকারের আলাপ বা আত্মসমালোচনা কখনই হয় না। কিছু লোক দেখানো শাস্তি হলেই, পাবলিকও খুশি, মিডিয়াও খুশি আর ফেসবুক তো লাফালাফি শুরু করে দেয়। এরপরে? সব্বাই নতুন খবরে চলে যায় আর নতুন তুফানের জন্ম হয়। সো, ফেসবুক আক্টিভিজম করেন, বাট সমাধান আশা করেন না। বরং আমার মত করতে পারেন। এঞ্জয় ইট।