এই বারান্দায় এক সময় একটা শালিক বসত। খোঁড়া শালিক। কিছুটা দার্শনিক টাইপের। এক পা গুটিয়ে ঝিম মেরে বসে থাকত। তাড়া করে লাভ নেই, উড়ে গিয়ে আরেক পাশে ঝিমোতে বসে যেত। পাশের রুমের ছেলেটির নালিশের অন্ত ছিল না। সাত-সকালে এক শালিক… তাও কি না ঠ্যাং ভাঙা… কি এক অলক্ষুনে ব্যাপার!! ও এসব খুব মানত দেখতাম।
এখন সে কর্ম-যুদ্ধে। শুনেছি নাকি বেশ টিকে গেছে। বিশ হাজার মাইনে। হয়ত খুব আহামরি কিছু না, তবু ইঞ্জিনিয়ার বলে কথা। সারাক্ষন তেলের উপর থাকে। তরতর করে উঠে যাবে কিছু দিনেই। বউ ও একটা সুন্দরী জুটে যাবে নির্ঘাত। হাজার হোক, বিয়ের বাজারে ইঞ্জিনিয়ার ছেলের কাটতি বেশ!! সোনার বাঁকা আংটি টাইপ…
বারান্দার পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছে দুটো পেঁচা বসত প্রায় দিন। ছাই রঙা একটা, আরেকটার যে কি রঙ নাম জানি না। বাদামীই বলে হয়ত ওটাকে। কাছে গেলে কটমট করে তাকায়। সন্ধ্যে বেলায় নির্জন বারান্দায় যে কেউ দেখে ভয় পাবে।
কোনো দিন শুনিনি কাউকে পেঁচা কামড়ে দিয়েছে। তবু মানুষ পেঁচা দেখলে ভয় পায়। আসলে কারও কারও রেপুটেশনই এমন। যতই গলা ফাটাক- আমি নিরীহ গোব্যাচারা…লাভ নাই। যেমন এখন আর একটা বারের জন্য ও বলি না আমি ই ঠিক ছিলাম। বিনা বাক্যে সব দোষ মাথায় তুলে নেই।
যাই হোক, খোঁড়া শালিকটা মরে গেছে হয়ত। এত দিন টিকে থাকার কথা না। তবে পেঁচার পরিবার বড় হয়েছে। সুখেই আছে… সন্ধাটা মাঝে মাঝে ওদের দেখে কাটিয়ে দেই।
দু’একটা খোঁড়া শালিক মরে গেলে কারো কিছু যায় আসে না…। পেঁচারা ভাল থাকুক….