আমার পা কেটে বাহির করো, আমি আর সইতে পারি না…’ ধ্বংসস্তূপের ভেতর শোনা যাচ্ছে এক নারীর এমন আর্তনাদ । উদ্ধারকারীরা তাকে দেখছেন ভেঙে পড়া দেয়ালের ফাঁকে । কেউ হাত দিয়ে এ নারীকে উদ্ধারের আশ্বাস দিচ্ছেন । কেউ চিৎকার করে । গার্মেন্টের এ নারী চাপা পড়ে আছেন ভেঙে পড়া বিশাল এক দেয়ালের মাঝে । গতকাল বেলা সাড়ে ৩ টায় ধসে পড়া ভবনের পেছনের দিকে গিয়ে দেখা গেছে, এ নারীর বাম পায়ের হাঁটুর উপরে একটি বড় দেয়াল । ভালোভাবে মাথা উঁচু করতে পারছেন না । কারণ আরেকটু উপরে ধসে পড়া আরেকটি দেয়াল । সারামুখ তার কংক্রিটের ধুলোয় ঢাকা । কখনও একটু উঠে বসেন । কখনও আবার শুয়ে পড়েন । এক তীব্র যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছেন এ নারী ।
বাতাসে আজ লাশের গন্ধ । আর এমন আর্তনাদ এখনো করছে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ, যারা শুধু কপালগুনে বেঁচে গেছে এমন ভয়াবহ বিপর্যয়ের পরও । তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে । যদিও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম । তাছাড়া সরকারী বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সবার সুচিকিৎসা নিশ্চিত হওয়ার নিশ্চয়তা নেই । শুধু প্রান নিয়ে বেঁচে ফিরে আসা মানুষগুলোর অনেককেই পরবর্তীতে বাঁচতে হবে শরীরের প্রয়োজনীয় দু-একটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছাড়া । কিন্তু তারা অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক । একটি হাত বা পা ছাড়া তারা তাদের পরবর্তী জীবনের জীবিকাটুকু নির্বাহ করতে পারবে না, সেটা বলাই বাহুল্য । এমন ভয়ংকর নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক জিবনে ফিরে আসতে লাগবে অনেক সময় ।
পোশাক শ্রমিকরা কাজ করে পেটের দায়ে । কিন্তু তাদের শ্রমের বিনিময়ে উপার্জিত টাকা আসে আমাদের এই দেশে, লাগে দেশের কাজে, দেশের মানুষের কাজে । অর্থনীতির চাকা সচল থাকে । আমরা যে কাপড় পড়ে নিজেদেরকে সভ্য বলে দাবী করি, তাতে লেগে আছে তাদের ঘামের সোঁদা গন্ধ । কিন্তু সেই ঘামের বিনিময়ে তারা কি আমাদের কাছ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের মতো শুল্কমুক্ত কোটি টাকা দামের গাড়ি দাবী করে ? নাকি তিন বেলা পোলাও-কোরমা খাওয়ার দাবী করে ? অথবা তাদের সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ানোর দাবী করে ? না ভাই, তারা এসবের কিছুই দাবী করে না । শুধু খেয়ে-পড়ে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার দাবী করে ।
বেশী কিছু লেখা সম্ভব নয় । সবাই সবকিছুই দেখছেন, জানছেন ও শুনছেন । এতগুলো আহত মানুষের সবার সু-চিকিৎসা যে হবে না সেটা চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় । সরকার মৃতদের ২০,০০০ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে । আহতদেরকেও কিছু টাকা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে । কিন্তু সেটা দিয়ে আহত মানুষটির সম্পূর্ণ চিকিৎসা হওয়া সম্ভব না । দেখা যায় যে আর্থিক অনুদান মেলে সেটা দিয়ে এক সপ্তাহের ঔষুধও হয় না । আবার আমাদের আমলাতান্ত্রিক ব্যাবস্থায় অনুদানের অর্থ পেতে পেতে দেরি হয়ে যায় । তাই আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে, শুধু বলতে চাই – আমরা কি আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারি না ? পারি না কি, সবাই কিছু কিছু করে আর্থিক সাহায্য উঠানোর মাধ্যমে ৫০-১০০ না হোক, অন্তত ৫ জনের চিকিৎসার খরচ বহন করতে ? পারি না কি, পা হারানো এক ভাই-বোনের একটা কৃত্তিম পা’য়ের ব্যাবস্থা করে দিতে ? কারো একার পক্ষে এই ব্যায়গুলো চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না । আপনি আমি চাইলেই বাড়িয়ে দিতে পারি আমাদের একটি হাত, কষ্টের দুটি পয়সা, যা দিয়ে অন্তত একজন মানুষ পেতে পারে বাঁচার নিশ্চয়তা ।
সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। সবাই
সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। সবাই মিলে হয়ত আমরা কিছু একটা করতে পারব।
সহমত। যারা আহত তাদের হাসপাতাল
সহমত। যারা আহত তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে কয়েকদিন পরে। ৫০০০ টাকা চলে যাবে এক সপ্তাহের ওষুধ খরচে। আর যারা লাশ হয়েছে তাদের পরিবার হয়তো নিঃস্ব হয়ে গেলো। তাদের আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার ব্যাপারে ইস্টিশনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি
একমত
একমত
উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ইস্টিশন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আপনারা কয়েকজন মিলে উদ্যোগ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। আমার বিশ্বাস সাভার ট্রাজেডিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইস্টিশন কর্তৃপক্ষ আপনাদের ইভেন্টটি প্রমোট করার উদ্যোগ নিবেন।
সাভার ট্র্যাজেডিতে আমি কোন
সাভার ট্র্যাজেডিতে আমি কোন কারনে এখনো বুঝতে পারছি না সরকার কেনো এগিয়ে আসছে না, সাধারণ মানুষ যদি প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আর মেডিসিন কিনে আনতে পারে তাহলে সরকার কিনছে না কেন ????
এখন যদি সরকারের কোষাগারে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান না থাকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য তাহলে অবশ্য কিচ্ছুটি বলার নেই !!!