আজ দেশ ও দেশের সাধারণ মানুষ মোটামুটি বিভক্ত শব্দটার মাঝে হাবুডুবু খাচ্ছে। চারদিকে সত্য-মিথ্যার মিশ্রনে তথ্য-উপাত্তের ছড়াছড়ি আর বলাবলি। মানুষ যেন অনেক সময় নিজেকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট পাচ্ছে। কাকে বিশ্বাস করবে, কোথায় যাবে এবং কোন সংবাদ কে আপন মনে করবে তা যেন আজ কষ্ট সাধ্য। পরিস্কার করি, আমাদের বিচার কাজ পরিচালনাকারী কিছু উকিল মহোদয়ের বক্তব্য দিয়ে।
বিচারের বিপক্ষের উকিল মহোদয় সব সময় বলে থাকেন, আসামীর বিরুদ্ধে একটাও সঠিক তথ্য-উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি। উপস্থাপন করতে পারেনি একটা স্বাক্ষীও। আমার মক্কেল নিরাপরাধ। তার একদিন তো দূরের কথা, এক মিনিটের জন্যও সাজা ভোগ করতে পারে না। তখন সহজ সরল মানুষগুলো খুব সহজ ভাবে বিশ্বাস করে উকিল মহোদয়ের কথা।
সবার মাঝে একটা সন্দেহ কাজ করে। হয়’ত এই নিরাপরাধ ব্যক্তিটি শুধু শুধু হয়রানীর শিকার হচ্ছে। রাজনৈতিক ভাবে তাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তাকে কষ্ট দিচ্ছে। তারা উপায়ন্তর না পেয়ে পরে শেষ ভরসা তাদের স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করে, বিচার দেয়।
আবার ন্যায় বিচার প্রার্থী পক্ষের উকিল মহোদয় সব সময় বলে থাকেন, আমরা সকল তথ্য-উপাত্ত সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। আসামীর সকল অপরাধ প্রমান করতে সক্ষম হয়েছি। সঠিক তথ্য আদালতে পেশ করেছি। স্বাক্ষীগণও তাদের সঠিক স্বাক্ষী দিয়েছে। অতএব, এত এত ধারায় তার সর্বচ্চ শাস্তি হওয়ার আশাবাদী। তখনও সাধারণ জনগণ সহজ সরল বিশ্বাস নিয়ে তা অবলোকন করে।
আবার সবাই ভাবতে থাকে, সত্যিই যদি সে অপরাধী না হয়ে থাকে তাহলে এত এত স্বাক্ষী কি মিথ্যে বলেছে? সকল তথ্য-উপাত্ত কি মিথ্যে? শুধু শুধু কি সে কারাভোগী হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন সাধারন মানুষের মনে উকি দেয়।
মানুষ পড়ে যায় ভাবনায়। অনেক সময় সুন্দর উপস্থাপনের উপর অনেকে শক্ত বিশ্বাস স্থাপন করে ফেলে। উকিল মহোদয় যাহা বলিয়াছে তাহাই সত্য এবং বাস্তব। সাথে যদি আরও কয়েকজনের কন্ঠে কণ্ঠ মিলানোর সুর ভেসে আসে তাহলে তো আর কথাই নেই।
মানুষ পড়ে যায় আবার নানান রং এর নতুন ভাবনায়। অনেকে আবার অপরের বুলি নিজের করে একান্ত ভাবনায় চলতে থাকে। মিথ্যা তথ্য নিয়ে শুরু হয় অপরের সাথে তর্ক, মহা তর্ক মারামারি কাটাকাটি।
সাঈদীর চাঁদে উঠার মিথ্যে তথ্য নিয়ে মানুষ যেভাবে ভৌদৌড় শুরু করেছিলো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গণণায় তেমন সংখ্যা বেশী না হলেও তার প্রচার বা উপস্থাপন ছিলো যথেষ্ট শক্ত। সুন্দর উপস্থাপনের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক মানুষ কে জীবন হানী পর্যন্ত করতে সক্ষম হয়েছে। সাময়িক সময়ের জন্য মানুষের মাঝে একটা উত্তেজনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে এ উত্তেজনা বেশী দিন বজায় রাখতে না পেরে আবার শুরু হয় ভিটামিন এ ক্যাপসুল দিয়ে মিথ্যে শিশু মারার ষড়যন্ত্র। সেখানেও এক শ্রেণীর সাধারণ মানুষের মাঝে হা হা কার শুরু হয়। দৌঁড়াতে থাকে নিজেদের আপন সন্তানের জীবন বাচাতে। এই বুজি শেষ হয়ে গেল।
তাও বেশী দিন রাখতে পারেনি। স্বাধীনতাবিরোধীরা ৭১ থেকেই তাদের নোংরা মানসিকতা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ইসলাম কে ব্যবহার করে আসছে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস কে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। সহজ সরল মানুষের সহজ সরল আবেগ কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের হীন মানুসিকতা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আমাদের দেশের এক শ্রেণীর মানুষ এখনো অপরের বুলিতে নিজের জীবন সাজাতে ব্যস্ত, চিলের পিচনে কানের খোজে সময় পার। সঠিক তথ্য যাচাই বাচাই করা যেন এক ধরনের অপরাধ। চা দোকানে বসে ঘন্টার পর ঘন্ট সময় পার করবে কিন্তু নিজেকে সচেতন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এক মিনিটও ব্যয় করবে না। নিজ সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও দশের কল্যানে নিয়োজিত করবে সে ব্যাপারে কোন পদক্ষ্যেপ নেই। অথচ, পরের কথায় নিজে জীবন বলিদান।
বিচারকাজ পরিচালনাকারী এ পক্ষ সে পক্ষের উকিল মহোদয়ের সকল কথা একটা সময় সাধারণ মানুষ বুঝতে সক্ষম হয় যখন বিচারপতি রায় ঘোষনা করেন। আস্তে আস্তে বিশ্বাস করতে সক্ষম হয় সাদা-কালার মাঝে কি ছিলো। এক শ্রেণীর মানুষ পুরোপুড়ি বুঝতে সক্ষম হলেও আরেক শ্রেণীর মানুষ থাকে বির্তকের মাঝে। কারণ, বিকর্ত সৃষ্টি করাই যে তাদের কাজ। ষড়যন্ত্র করাই যে তাদের কাজ।
এখন মানুষ সাঈদীকে ঘৃনা করে, ঘৃনা করে মিথ্যে তথ্য-উপাত্ত রটানো সে গোষ্টি কে, ঘৃনা করে তার চান্দে যাওয়ার মিথ্যে গল্প কেও। মানুষ জেনে গেছে ভিটামিন এ ক্যাসুল খেলে শরীরের তারতম্য উঠানামা করে, জ্বড় জ্বড় ভাব হয়। এখন সহজ সরল মানুষ আবার তাদের নিজ নিজ স্রষ্টার কাছে অভিশাপ দিচ্ছে, ষড়যন্ত্রকারীরা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য অভিশাপ দিচ্ছে।
শয়তান অভিশাপে কখনও ধ্বংস হয় না। বরং অভিশাপেই শয়তানের জন্ম। আমাদের সবাই কে সচেতন হতে হবে। যে ইসলামের নামে ইসলামের শান্তি কে ধ্বংস করে দিচ্ছে সেই শান্তির ধর্ম ইসলাম কে ভালো করে জানতে হবে। শয়তানের মিষ্টি মিষ্টি কথা পরিহার করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা আগ বাড়িয়ে সব সময় পাশে দাড়ায়, কিন্তু সমস্যা তৈরি করে পিচু হাটে। ষড়যন্ত্রকারীরা সংখ্যায় কম হলেও তাদের নোংরা থাবা কিন্তু অনেক শক্তিশালী। অবৈধ টাকার পাহাড় দিয়ে আজ তারা অনেক কিছু করতে সক্ষম।
আজ মসজিদের ইমামের পোশাকের আড়ালে শয়তান, মন্দিরে পন্ডিতের ভ্যাসে শয়তান, প্রার্থনালয়ে যাযকের পোশাকে লুকিয়ে আছে শয়তান। তাদের কাজ ভালো মানুষের পোশাক পড়ে মানবতাকে ধ্বংস করা। মানুষে মানুষে ভিভেদ সৃষ্টি করা। আবার আপনার খুব পাশে অবস্থান রত আপনারই আপনজন বন্ধুর আড়ালে শয়তান লুকিয়ে আছে, লুকিয়ে আছে আজ বড় বড় আসনের অন্তরাড়ে।
আপনার বিশ্বাস আপনাকে সঠিক ও সহজ পথ দেখাবে। আপনার শিক্ষা আপনাকে শয়তান চিনতে সহায়তা করবে। আপনার ধর্ম আপনাকে মানবতার পাশে দাঁড়াতে শিক্ষা দেবে। আপনার অর্জন আপনাকে অপরের কল্যানে ব্যয় করতে বলবে। আপনার সচেতনতা অপর কে সঠিক ও সুন্দর পথ দেখাবে।
শয়তানের গর্জন ক্ষনস্থায়ী ও দূর্বল। মানুষ, মানবতা ও মানবপ্রেম সব সময় সত্য ছিনিয়ে এনছে, মানবতার জয় হয়েছে।
সুন্দর
সুন্দর
ভাল হয়েছে…
ভাল হয়েছে…