জলিল চাচা…..বয়স আনুমানিক ৫৫ হবে, স্ত্রী আর তিন ছেলে মেয়ে সহ থাকেন জরাজীর্ন কোন এক কলোনীতে।
জীবনের ১২ টি বছর কাটিয়ে এসেছেন আবুধাবীতে। ভাগ্যের পরিবর্তন হয় নি, দারিদ্রতার বেড়াজাল থেকে মুক্তি পান নি। অভাবের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাহিদা। কিন্তু অর্থ সংকট কমে নি।
১২ বছরের সঞ্চয় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন একটা অটো বাইক। যার আয় দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার আর ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ। নিদারুন অর্থকষ্টের মাঝেও ছেলেমেয়েকে শিক্ষিত করার জন্য প্রবল আগ্রহ আছে লোকটার।
একটা বিশেষ এলাকায় আমার প্রায় প্রতিদিনই যাতায়াত। আমি কতদিন যে জলিল চাচার অটোতে করে গন্তব্যে পৌছেছি তার হিসাব নেই। চাচা লোকটা অমায়িক। এক বছর চাচাকে দেখতে দেখতে কিভাবে যে একটা
সুসম্পর্ক হয়ে গেছে বুঝতে পারি নি। অনেক সময় আমার ভাড়ার টাকাটা নিতে চাইতেন না। আমি একরকম জোর করেই দিতাম।
কোন এক হরতালের আগের দিন… বিকাল ৫.৪৫। জলিল চাচার অটো বাইক চলছে রাস্তায়। হটাৎ ৪-৫ জন হরতাল সমর্থনকারী পিকেটার ঢিল ছুড়ে মারে অটোতে। অটোর গতি বাড়িয়ে দেন চাচা। মোটর সাইকেল আরোহী পিকেটাররা ধাওয়া করে ধরে ফেলে অটোকে…..
জোর করে নামিয়ে দেয় চাচাকে। চাচার হাজার অনুনয় আর চোখের জলও থামাতে পারেনি পিকেটারদের।
জ্বালিয়ে দেয় অটোটিকে। সেই সাথে পুড়ে ছাই হয়ে যায় চাচার ভাগ্য আর সন্তানদের অনাগত ভবিষ্যত।
হরতাল আর হরতাল সমর্থনকারীরা এভাবেই পুড়িয়ে দিচ্ছে চেনা অচেনা কত জলিল চাচার ভাগ্য।
দিন বদল হয় না এই জলিল চাচার মত অভাবগ্রস্ত মানুষের। দিন বদল হয় একদল বড় বড় রাঘব বোয়াল আর সমাজের উচু স্থরের রাজনীতিবিদদের,যারা জলিল চাচাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।
এরই নাম কি গনতন্ত্র?
সুব্রত শুভর মতই শুধু চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে; অফ যান অনেক হইছে,আর না।
গণতন্ত্রের নামে হরতাল আর
গণতন্ত্রের নামে হরতাল আর জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতিতে শুধু নগর, গাড়ী পুড়েনা …
পুড়ে যায় জলিল চাচার মত অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষের কপাল, পুড়ে যায় নস্ট রাজনীতির খেলায় সেইসব নস্ট রাজনীতিবিদদের হুকুমের গোলাম পদলেহনকারীদের মনুষ্যত্ব আর বিবেক ।হরতালের মত নস্ট রাজনীতির খেলায় বলী হয় এদেশেরই নিরুপায় আপামর জনসাধারণ ।
তবুও আমরা স্বপ্ন দেখে যাবো, স্বপ্নবাজ হয়ে সেই স্বপ্নের পথ ধরে হেঁটে যাবো … অনেকদূর, স্বপ্নের সেই বাংলাদেশের খোঁজে
যেখানে থাকবেনা কোন হরতাল, থাকবেনা কোন জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি ।
সেদিন জলিল চাচার মত সবাই হাসিমুখে ঘরে ফিরবে । সেই বাংলাদেশে হরতালের আগুনে পুড়বেনা এই নগর, সমাজ, রাস্ট্র আর মানুষের ভাগ্য …
এদেশের মানুষ অদ্ভুত রকম
এদেশের মানুষ অদ্ভুত রকম নিস্পৃহ। যতক্ষণ না জলিল চাচার মতন তাদের “ইজি বাইকে” আঘাত লাগে ততক্ষন শামুকের মতন স্বার্থের খোলসে মুখ লুকিয়ে থাকে। খুব করে চাই- আঘাত লাগুক, সবাই জাগুক।
আমরা এই নষ্ট রাজনীতির বলি হতে
আমরা এই নষ্ট রাজনীতির বলি হতে চাই না,চাই
একটি সুষ্ঠু গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র যে রাষ্ট্র জনগণের
সত্যিকারের আশা ভরসার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ , স্বপ্ন জাহাজ।
মানুষকে জাগাতে হলে একজন সঠিক
মানুষকে জাগাতে হলে একজন সঠিক পথপ্রদর্শক এই
সংকটময় মুহূর্তে বড় প্রয়োজন,তাহলেই গনতন্ত্রের
সুষ্টু ও স্বাভাবিক ধারায়
ফিরে আসতে পারে দ্বিধাবিভক্ত জাতি, ডাঃ আতিক।
গোটা দেশটাই পুড়িয়ে দিক হরিতাল
গোটা দেশটাই পুড়িয়ে দিক হরিতাল কারীরা, সাথে আমাকেও।
এদেশে বাচার কোন মানে নেই।