শীত ক্রমশ এগিয়ে আসছে অর্থহীন। জানালা দিয়ে হেমন্তের বিকেলগুলোর ধুসর আকাশ দেখতে খারাপ লাগেনা। মফস্বল বলে এদিকে শীতটা একটু আগেই নামে।
রাত বারোটায় জাকিরের ফাঁসি। সব আয়োজন চুড়ান্ত। মঞ্চের চারপাশে উজ্জ্বল আলো। জেল সুপার, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকের দলটা অতিথিদের জন্য টাঙানো সামিয়ানার নিচে দাঁড়িয়েছে। জাকিরকে পাতলা কয়েদির পোশাক পরে ফাঁসির মঞ্চে উঠতে হবে। শীত লাগছে। সে একবার ভাবলো জেলারকে বলবে কয়েদির পোশাকের উপর সোয়েটার পরার অনুমতি দিতে। গরম জামা পরে ফাঁসিতে যাওয়ার কথা ভেবে তার নিজেরই হাসি পাচ্ছে।
শীত ক্রমশ এগিয়ে আসছে অর্থহীন। জানালা দিয়ে হেমন্তের বিকেলগুলোর ধুসর আকাশ দেখতে খারাপ লাগেনা। মফস্বল বলে এদিকে শীতটা একটু আগেই নামে।
রাত বারোটায় জাকিরের ফাঁসি। সব আয়োজন চুড়ান্ত। মঞ্চের চারপাশে উজ্জ্বল আলো। জেল সুপার, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকের দলটা অতিথিদের জন্য টাঙানো সামিয়ানার নিচে দাঁড়িয়েছে। জাকিরকে পাতলা কয়েদির পোশাক পরে ফাঁসির মঞ্চে উঠতে হবে। শীত লাগছে। সে একবার ভাবলো জেলারকে বলবে কয়েদির পোশাকের উপর সোয়েটার পরার অনুমতি দিতে। গরম জামা পরে ফাঁসিতে যাওয়ার কথা ভেবে তার নিজেরই হাসি পাচ্ছে।
লোপাকে সে খুন করতে চায়নি। দূর্ঘটনা বশত এটা ঘটে গেছে। ভালোবেসে সে লোপাকে বিয়ে করেছিল। এখনো তাকে প্রচন্ড ভালোবাসে।
জমটুপি পরিয়ে দেওয়ার পর থেকে চোখ বন্ধ করে আছে সে। শেষ কয়েকটা মূহুর্ত কিছু সুন্দর স্মৃতি মনে করে কাটাতে চায়। সুনশান নিরবতায় ধুপধুপ একটা আওয়াজ তাকে যন্ত্রনা দিচ্ছে। ওটা হৃৎপিন্ড থেকে আসছে।
হিমছড়ি ঝর্ণার বাঁ পাশের পাহাড়টা থেকে সমুদ্রকে অনেক বেশি সুন্দর দেখায়। জায়গাটা বেশ সুনশান। বিয়ের পর লোপা আর সে ওখানে বসে সমুদ্র দেখেছিল। সেদিনও সে হৃদপিন্ডের এই আওয়াজটা শুনেছে। তারপর বহুকাল ওটা বোধহয় আর আওয়াজ করেনি।
জেলার সাহেব ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছেন। মিনিট থেকে সময় এখন সেকেন্ডে চলছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে উনার। দ্রুত চোখ মুছলেন। শেষ সেকেন্ডে গিয়ে উনি গড়বড় করতে চাননা। এটা একজনের আরো একটা সেকেন্ড বেশি বেঁচে থাকার ব্যাপার।
লোপা প্রায়ই জাকিরকে গোলাপ উপহার দিতো। অথচ সে কখনো জাকিরকে জিজ্ঞেস করেনি তার প্রিয় ফুল কি? জিজ্ঞেস করলে জানতো তার সবচেয়ে পছন্দ ছিল শিউলী ফুল!
জেলার সাহেব হাত থেকে রুমাল ছেড়ে দিলেন। জল্লাদ লিভারে টান দেওয়ার সাথে সাথে পাটাতন সরে গেছে।
পুরো শরীরে ঝাঁকি অনুভব করলো জাকির। লোপা তাকে ধাক্কা দিয়ে বললো এবার উঠো, ছুটির দিন বলে এতক্ষণ ঘুমোতে হবেনা।
জাকির চোখ মেলে দেখে লোপা খাটের পাশে দাঁড়িয়ে আছে! তার হাতে শিউলি ফুল!