বাংলা সাহিত্যে একটা ব্যপার আছে, ‘ বৃষ্টি বিলাস ‘।
হুমায়ুন আহমেদের নুহাশপল্লীর একটা বাড়ির নামই বোধহয় আছে বৃষ্টি বিলাস।
বাংলা সাহিত্যের সব রাজা – মহারাজা বরষা নিয়ে বাড়াবাড়ি রকম টান দেখিয়েছেন। আর বাংলা ফেসবুকের ‘ ওয়ানা বি ‘ কবি (দুষ্টু লোকেরা কপি বলে) সকল একটু বৃষ্টি হলেই হালকা ভাবের উপর গভীর লুতুপুতু মাখানো কবিতা, স্ট্যাটাস প্রসব করেন।
আমি ভাবতাম এই সামান্য বৃষ্টি নিয়ে এত আদিখ্যেতার কি প্রয়োজন?
বৃষ্টি হবে, ভিজবো, জ্বর আসবে, আবার ভিজবো, জ্বর চলে যাবে, আবার ভিজবো – এখানে বিলাসিতার কি আছে?
কিন্তু …. কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি বৃষ্টি আসলেই বিলাসিতার ব্যপার।
রাস্তায় বৃষ্টির সময় নেমে দেখবেন, কয়েক মিনিট আগেও যারা ‘ বৃদ্ধি হচ্ছেনা কেন? ‘ বলে বলে বিরক্তি প্রকাশ করেন বৃষ্টি নামলে তারাইউসাইন বোল্ট গতিতে দৌড়ানো শুরু করেন।
একহাজার মানুষের মধ্যে একজনও পাবেন না যে ইচ্ছে করে ভিজছেন।
আজকালকার প্রেমের পাখিরাও কেমন রসকসহীন।
আমি গতকাল সাড়ে তিন ঘন্টা রাস্তায় রাস্তায় ভিজে মাত্র দুইটি জুটিকে দেখলাম বৃষ্টিতে ভিজছে ।
প্রথমটি এ যুগের জন্য কিংবদন্তীতুল্য। আমি চকবাজার থেকে ভিজে ভিজে চট্টেশ্বরী রোড দিয়ে আসছিলাম। দেখি উনারা রিকশা থেকে বৃষ্টির মধ্যে নেমে গেলেন। রিকশাওয়ালা মোটামুটি অবাক। উনারা সামান্য হেসে হাটা শুরু করলেন।
দ্বিতীয়টি স্টেডিয়াম এর কাছে। ছেলেটার কাধে কিটস ব্যাগ দেখলাম। মনে হয় একাডেমিতে প্র্যাকটিস করতে এসেছিলো। মেয়েটা কি এর প্র্যাকটিস দেখতে চলে এসেছে? সুন্দর তো!
ওই যে, সবাই বিলাসিতা করতে পারে না;সবাই বৃষ্টিতেও ভিজতে পারে না। বাংলা সাহিত্যের রাজা – মহারাজারা এটি জানতেন বলেই বোধহয় ‘ বৃদ্ধি বিলাস ‘ কথাটা চলে এসেছে।
(আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, একটু বৃষ্টি দেখলে যারা বিশাল কবি হয়ে যায় তারা ইচ্ছা করে কখনও এক ঘন্টা বৃষ্টিতে ভিজেছে কিনা।)
পুনশ্চঃ বাঁশ মারার জন্য লিখি নাই। 😀
বাইরে আসি বৃষ্টি হইতাসে আর
বাইরে আসি বৃষ্টি হইতাসে আর আমি-সে ভিজিনাই। নেভার। এইটার মাজেজাই আলাদা। একা একা কম ভিজছি। সে না থাকলে বন্ধুগো সাথে। অস্থির মজা। আর ইদানীং ভিজলে রাস্তার পাব্লিকদের হতভম্ব দৃষ্টি। মি লাইকস দিস। 😀
মনের কথাটাই বললেন ।
মনের কথাটাই বললেন ।