সেই মেয়ের সাথেই প্রেম কর যে ছবি আঁকে। প্রেম কর এমন একটি মেয়ের সাথে, যে কাপড় না কিনে রঙের পেছনে টাকা খরচ করে। যে দেয়ালে ছবি ঝুলাতে গিয়ে জায়গা নিয়ে সমস্যায় পড়ে, কারণ তার আছে অসংখ্য পেইন্টিং। এমন কোন মেয়ের সাথে প্রেম কর যার কাছে সব নাম্বাররের ব্রাশ আছে, যার পাঁচ বছর বয়স থেকেই আছে একটি স্কেচবুক।
সেই মেয়ের সাথেই প্রেম কর যে ছবি আঁকে। প্রেম কর এমন একটি মেয়ের সাথে, যে কাপড় না কিনে রঙের পেছনে টাকা খরচ করে। যে দেয়ালে ছবি ঝুলাতে গিয়ে জায়গা নিয়ে সমস্যায় পড়ে, কারণ তার আছে অসংখ্য পেইন্টিং। এমন কোন মেয়ের সাথে প্রেম কর যার কাছে সব নাম্বাররের ব্রাশ আছে, যার পাঁচ বছর বয়স থেকেই আছে একটি স্কেচবুক।
সেই মেয়েকে খুঁজে বের কর- যে ছবি আঁকে। তুমি তাকে চিনবে কীভাবে?- তার ব্যাগের ভিতর থেকে একটি স্কেচবুক উঁকি দেয় সবসময়। কৌতূহল মেশানো বড় বড় চোখ নিয়ে যে চারপাশে কিছু একটা খুঁজে বেড়ায় আর মনের মত কিছু দেখলেই নিঃশব্দে হেসে উঠে। ছবি হাতে ব্যাগ ভর্তি পেন্সিল নিয়ে অদ্ভুত পোশাকের কাউকে হাঁটতে দেখেছ তুমি? সেই হল আর্টিস্ট। একটা ছবি যত তুচ্ছই হোক, না দেখে থাকতে পারেনা সে।
রাস্তার পাশের ওই কফিশপে অপেক্ষা করতে করতে স্কেচবুকে হিজিবিজি লিখতে থাকবে সে। তুমি তার কফির মগটায় উঁকি দিলেই দেখবে ইতমধ্যেই ধোঁয়া উঠা বন্ধ হয়ে ঠান্ডা হয়ে গেছে। কারণ সে চলে গেছে অন্য জগতে। এমন একটা জগত যেখানে সে, বাস্তবতা আর তার কল্পনা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
বসে পড় তার পাশে।
সে তোমাকে দেখতেই পাবে না। অধিকাংশ আর্টিস্ট এর মতই যখন সে ছবি আঁকে এই জগতের সাথে তার যোগাযোগ হারিয়ে যায়। সে কি করছে সেটা দেখাতে বলিও।
তাকে আরেক কাপ কফি কিনে দিও।
ডালি সম্পর্কে তুমি সত্যি সত্যি কী ভাবো সেটা তাকে জানাও। সে ‘ইম্প্রেশনিজমটা’ বুঝে কিনা দেখ। যদি সে বলে ভিঞ্ছির ‘লাস্ট সাপার’ বুঝেছে তবে বুঝে নিও সে এটা শুধুমাত্র নিজেকে বুদ্ধিমান দেখানোর জন্য বলেনি। জেনে নাও সে হুসেইনকে পছন্দ করে নাকি নিজেকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করতে চায়।
আর্টিস্ট মেয়ের সাথে প্রেম করা সহজ। তার জন্মদিন, বড়দিন, বার্ষিকীতে একটি পেইন্টিংস উপহার দিও। প্যাস্টেল, জলরঙ হল তার স্বপ্নের উপহার। তাকে দিতে পার একটি অমৃতা প্রিতম কিংবা ভ্যান গগ। তাকে জানাও যে তুমি বুঝেছ রঙই হল জীবন। বুঝে নিও সে কল্পনা আর বাস্তবের পার্থক্য জানে কিন্তু নিশ্চিত থাক, সে তার প্রিয় সারিয়ালিস্ট অংশের মত নিজের জীবনটা একটু অদ্ভুত ভাবে সাজাতে চায়। এটা কখনোই তোমার দোষ নয়। সে এটা করতেই পারে।
তোমার স্বপ্নগুলো তাকে বল। সে যদি বোঝে, তাহলে সে তোমার স্বপ্নের পিছনে কি আছে সেটাও দেখতে পাবে। স্বপ্নের পিছনে থাকে কল্পনা, গভীরতা আর বিশ্বাস।
তাকে হাতাশ কর। কারণ শিল্পী মাত্রই জানে হতাশা তাকে নিয়ে যাবে তার সেরা কাজের দিকে। মেয়েটি জানে মানুষ মাত্রই ভুল। তুমি সবসময় একটি সাদা ক্যানভাস থেকে শুরু করতে পার। পছন্দ না হলে আবার শুরু করতে পার। একটা ছবিতে দু একটা খুঁত থাকতেই পারে
কেন শুধু শুধু ভয় পাচ্ছ? মেয়েটি জানে মানুষ ছবির মত। নিখুঁত হয় না।
যদি খুঁজে পাও সেই মেয়েকে, তার পাশে থেক। রাত ২ টায় ঘুম ভেঙে যদি দেখ এলোমেলো ছবি আকা কাগজ জড়িয়ে ধরে কাঁদছে তবে তাকে এক কাপ চা বানিয়ে দিও এবং জড়িয় ধরে রেখ। কয়েক ঘন্টার জন্য তাকে হয়ত হারাবে তুমি কিন্তু ফিরে আসবে সবসময় তোমার কাছেই। সে এমন ভাবে কথা বলবে যেন কাগজটির ছবিগুলো বাস্তব। অবশ্য একটু আগে এগুলো তার কাছে বাস্তবই ছিল।
কোন আর্ট গ্যালারিতে তাক বিয়ের প্রস্তাব দিও। কিংবা তার প্রিয় রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে। অথবা খুব সাধাসিধে ভাবে তার পরের ছবিটি আকার সময়।
তোমরা এমন ভাবে হাসবে যে মনে হবে হৃদপিণ্ড টা কেন যে ফেটে গিয়ে এখনও বুকটাকে রক্তে ভাসিয়ে নিচ্ছে না। কেন যে সে তোমাকেই বেছে নিল ছবি আঁকায় নিজের জীবন উৎসর্গ না করে। তোমরা তোমাদের জীবনের গল্পে রঙ করবে। অদ্ভুত নামের বাচ্চা থাকবে তোমাদের এবং ওদের স্বভাবও হবে অদ্ভুত। সম্ভবত একই দিনে সে তোমার বাচ্চাদের ‘মোনালিসা’ কিংবা ‘হুসেইনের ঘোড়া’র সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। বুড়ো বয়সে শীতে একসাথে হাটবে তোমরা, তার নিচু গলায় ডালির রাজনৈতিক দর্শন শুনতে শুনতে তুমি বুট থেকে তুষার ঝেড়ে ফেলবে।
আর্টিস্ট মেয়ের সাথেই প্রেম কর কারন তুমি ওর যোগ্য। তোমার কল্পনাকে জীবন্ত করে দিতে পারে এমন মেয়েই তুমি চাও। তুমি যদি তাকে একঘেয়েমি, বাজে সময় আর আনাড়ি প্রস্তাব ছাড়া আর কিছুই দিতে না পার তবে ভালো হয় তুমি একা থাক। যদি তুমি একটা নতুন জগত চাও এবং হাতের স্পর্শে এগিয়ে যেতে চাও তবে কোন আর্টিস্ট মেয়ের সাথেই প্রেম কর।
অথবা আরও ভালো হয় অপেক্ষা করতে থাক। আর্টিস্ট মেয়ের সাথে প্রেম করার মত চমৎকার আর কিছুই নেই।
মূলঃ abhyuday
অনুবাদের অনুপ্রেরণা সরব ব্লগের ‘পড়ুয়ার প্রেম, পড়ুয়ার প্রেমিকা’ পোস্ট