বাংলাদেশের সুস্থধারার (তথাকথিত সুশীল সিনেমায়)চলচ্চিত্রে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম একক শক্তিধর। ইমপ্রেসের বাইরে গিয়ে যারা কাজ করার চেষ্টা করেছেন তারা বাধ্য হয়েছেন ইমপ্রেসের কাছে নিজের পশ্চাতদেশ বিকিয়ে দিতে।অনেক তরুণ নির্মাতা সারাজীবন হ্যান কারেঙ্গা, ত্যান কারেঙ্গা,সিনেমার ভাষা পালটে দিব,সকালে ঘুমেত্তে উঠে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের মায়েরে বাপ,আবার বিকেলে এফডিসির পিণ্ডি চটকান করে করে সরকারি অনুদান ম্যানেজ করে স্বাধীন সিনেমায় হাতেখড়ি।উল্লেখ্য যে সরকার যে পরিমাণ বড়ছোট ছবির জন্য অনুদান দেয়,সেই পরিমাণ উপযুক্ত চিত্রনাট্য না পড়ার কারনে অনেক আনাড়ি লোকজন ফান্ড পেয়ে যায়।এরপর শুরু মিডিয়াপনা!যে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ারে রাতদিন গালাগাল করতো একনাগাড়ে সেই মিডিয়ার একটু কাভারেজ পেলে ফেসবুকে কাভারেজ শেয়ার। অনুদান নিয়ে আক্ষেপ,অনুদানের টাকায় কি বাল হয়,নাটকও বানানো সম্ভব হয়না,এই টাকায় কি করে সিনেমা হবে।এই আক্ষেপের কারণ কো-প্রডিউসার।এরপর কো-প্রডিউসারের জন্য এতদিন যাদের গালি দিয়ে আসছে তাদের কাছে ধর্ণা দেয়া।ব্যাটেবলে হলে কোন কথা নেই,ছবির কিচ্ছা খতম।যারা একটু পাকনা এরা ছবি তৈরি করে অনেকে,কেউ তৈরি করতে করতে বিকিয়ে দেয়।যারা ছবি তৈরি করা পর্যন্ত লড়াই করে,এরা গলাবাজি অব্যাহত রাখে।ভাগ্য ভাল হলে কয়েকটা আন্তর্জাতিক (?) পুরস্কার জুটলে শুরু হয় মিডিয়াপনা, টেলিভিশন এ টকশোবাজি।এদিকে জুটে যায় কিছু আঁতেল বোদ্ধাদের তৈলবাজী রিভিউ।যাদের কপালে রিভিউ জোটেনা তাদের ফেসবুকে নিজের ঢাক নিজে পেটান জাতীয় স্ট্যাটাস প্রসব।এসব করে করে কান,বার্লিন,ভেনিস জয় করে বিশেষ অকেশনে টিভি চ্যানেলে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার এর মাধ্যমে সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মহা আড়ম্বরে নিজের সতীত্ব বিসর্জন। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যাবতীয় লড়াই শেষে প্রতিষ্ঠানের কাছে অসহায় আত্নসমর্পন।এরপর টিভি ঘুরে দুয়েকটা সিনেপ্লেক্সে নামমাত্র মুক্তি।সপ্তাহখানেক পর বাক্সবন্দী হয়ে ভল্টে পড়ে থাকে স্বাধীন নির্মাতার স্বাধীন (?) বাক্সবন্দী চলচ্চিত্র।অনুদানের নীতিমালা অনুযায়ী ছবির মূল প্রযোজক সরকার।কিন্তু নীতিমালার ততোয়াক্কা ননা ককরে সহ প্রযোজকের কাছে ছবি বিক্রি আইন লংঘন।
এটি বাংলাদেশের গত দেড় দশকের বিকল্পধারা,সুশীল সিনেমা,তথাকথিত স্বাধীন চলচ্চিত্রের কাহিনী। এর ব্যতিক্রম যে হয়নি তা নয়,মাটি কামড়ে লড়াই করে গেছেন প্রয়াত তারেক মাসুদ। বাংলাদেশে আপাদমস্তক একজন স্বাধীন নির্মাতা।তিনি চেষ্টা করে গেছেন স্বাধীন চলচ্চিত্র প্রদর্শন সার্কিট গড়ে তুলতে।ঝিমিয়ে পড়া চলচ্চিত্র সংসদগুলো অনেকটা সক্রিয় হয়ে উঠেছিল বিকল্প প্রদর্শনের মাধ্যম হিসেবে।আমদের দুর্ভাগ্য এই লড়াকু সৈনিক আমাদের মাঝে নেই।স্বাধীন ধারার ছবির এই অধঃপতনের কালে তার মত লড়াকু যোদ্ধা বড় দরকার ছিল।
যাহোক ইমপ্রেস এর কাজ ইমপ্রেস করবে এতে আপত্তি নেই কিন্তু আমার ট্যাক্সের টাকায় নির্মিত অনুদানের ছবি যখন ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি হয়ে যায় তখন সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে।
একই প্রশ্ন আমার মনে উদয় হইছে।
একই প্রশ্ন আমার মনে উদয় হইছে। অনুদানের ছবি ইমপ্রেসের হয় কেমনে? গাড়িওয়ালা মুভিটার শতভাগ সরকারী অনুদানের ছবি। কিছুদিন আগেও এটি প্রদর্শনের জন্য পরিচালক দুয়ারে ঘুরেছেন। প্রথম দিকের পুরুষ্কারগুলোর প্রযোজক হিসাবে বাংলাদেশ সরকারই ছিল। হঠাৎ চ্যানেল আইয়ের মত মিডিয়ামুঘলকে কেন প্রধান প্রযোজক বানানো হল? জনগনের টাকায় যে সিনেমা তৈরি হয়েছে, সেই সিনেমা নিয়ে যে কোন তথ্য আমাদের জানার অধিকার আছে।
এই শতকের ১৫ বছরের অধিকাংশ
এই শতকের ১৫ বছরের অধিকাংশ অনুদানের বড়ছবির গায়ে ইমপ্রেসের নাম আছে. . .