জনসমর্থন, গনতন্ত্র, এই কথাগুলোর তাৎপর্য সৃষ্টি হয়েছে ১৯৪৭ আর ১৯৭১ এর ঘটনার ফলে। স্বাভাবিকভাবে সকলেই মনে করে যে বস্তুর গনসমর্থন বেশি তা সঠিক হতে বাধ্য।মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশাল গনসমর্থন ছিল এবং বস্তুত তা সঠিক বটেই।কিন্তু সর্বদাই কি তাই? কিছুদিন আগে সাইদী এর চাদে দেখার গুজব হতে একটা জিনিস স্পষ্ট দেখা গেছে,মানুষকে বিভ্রান্ত করা এমন কিছু কঠিন না।অধিক জনসমর্থন সর্বদা ন্যায় এর জন্য না,মুখরোচক গল্প খাওয়ানোর ফলেও তৈরি হতে দেখা যায়।উন্মাদনা,মব তৈরি করে জনসমর্থন তৈরি এমন কিছু ব্যাপার না।যখন রাজনৈতিক দলগুলো মেয়াদের শেষ পর্যায়ে “জনগনের ভোট নিয়ে এসেছি” এই বুলিখানা ঝাড়তে থাকে তখন কেমন যেন কৌতুকের মত লাগে। এই কৌতুক মানুষের সাথে, তাদের মতামতের সাথে। হেফাজতি পার্টি মতিঝিল এ বিশাল একটা সমাবেশ করল, মানুষের ঢল দেখিয়ে প্রমান করার চেষ্টা করল জনসমর্থন তাদের পক্ষে। কিন্তু একটা প্রশ্ন্: জনসমর্থন কি নৈতিকতার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে দেয়? হাজার বছর পুর্বে গবেষক হাইপেশিয়ার মৃত্যু হয় ধর্মান্ধ মানুষের অংশগ্রহন এ, তাদের সংখ্যাই কি বেশি ছিল না?আইনের চোখে সবাই সমান হতে পারে, সমাজে এই বুলি উঠতে পারে কিন্তু সত্যই কি সব মানুষ সমান? সবার চিন্তাধারা, সবার বুদ্ধি সমান কি? তাই যদি হত তবে পড়ালেখায় গ্রেডিং দরকার হত না।দরকার হত না বিভেদভিত্তিক শিক্ষাবস্থার।গনতন্ত্র নিয়ে মানুষ যতই আশা করুক,সত্যিকার অর্থে গনতন্ত্র কার্য্কর হওয়া সম্ভব না যতদিন ১০০ ভাগ মানুষ সমান রকম অভিজ্ঞতা আর শিক্ষা পায়।যেটা কখনই সম্ভব না।যেকোন দাবি সঠিক কিনা তা সমর্থনের হারের চাইতে দাবির নৈতিক মূল্য প্রথমে দেখা উচিত। সেই হিসেবে যদি গনজাগরন মন্চের মানুষের উপস্থিতি কমও হয়ে থাকে তবে আক্ষেপ অথবা কটাক্ষের কিছু নেই।সবাই ধরে নিতে পারেন, বুদ্ধিমান ও উন্নতশ্রেনির মানুষেরাই এখানে আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছেন।যারা পক্ষেও কিছু বলেন না বিপক্ষেও কিছু বলেন না তারা স্পষ্ট গা বাচানো নীতি অনুসরন করতে চাইছেন। কিন্তু যারা বিরুদ্ধে আছেন তাদের কি বলা যায়? আমরা আধুনিক বিজ্ঞান এর দৌলতে জানি, মানুষের বুদ্ধিমত্তা সংখ্যা হিসেবে নিরুপন করা যায়। ১১০ এর উপর আইকিউ নাম্বার মোটামুটি বুদ্ধিমান বোঝায় এবং স্বাভাবিকভাবেই সংখ্যাটা কম। বোকাদের চিল্লাচিল্লিতে মত বদল করলে ধ্বংশ নেমে আসে তা খুব পুরানো শিক্ষা।তারা চিল্লাবেই, বাধা দেবেই, তাদের স্বল্পবুদ্ধিতে যা খেলে তাই করবে। বিনয়ী হওয়ার দিন শেষ, সত্যিটাকে মেনে এদেরকে ফেলে এগিয়ে যাওয়াই উচিত।যারা এদেরকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতি তাদের সাথে আমি একমত নই। এদের সাথে নিলে আবারও একই কান্ড ঘটাবে, নষ্ট হবে মূল্যবান সময়।যারা নৈতিকতা বুঝেনা তাদেরকে জোর করে কিছু শেখানো যায় না।কারন তারা তাদের নতুন শিক্ষাটিকে আগের সাথে তুলনা করবে, এবং মুখরোচক না হওয়ায় সেই পুরোনোটুকুতেই ফিরে যাবে।তাদের কথাতে কান দেয়া আর চিলে কান নিয়েছে গুজবে বিশ্বাস করা সমান কথা। আজাইরা জিনিসে সময় নষ্ট করার ফলে আমরা কয়েকশো বছর পিছিয়ে আছি।বহু মানুষ শিকার হয়েছে অবিচারের।সমাজ তৈরি হয় একে অপরের সাহায্য নিয়ে বেচে থাকার জন্য, ধ্বংস করার জন্য না, যারা তা চাইবে তাদের মত টিউমার নিয়ে বেচে থাকার অর্থ নেই। নাকি টিউমার বহুদিন থাকায় মায়া পড়ে গিয়েছে কাটতে গিয়ে? বহুদিনের টিউমার সারে না, ক্যান্সার হয়ে যায়।
চমত্কার বিশ্লেষণ।
চমত্কার বিশ্লেষণ।