আমার এক বন্ধু ছিলো, বিনয়। আমি সুবিনয় বলে ডাকতাম। পেশা হিসেবে কৃষিকেই সে বেছে নিয়েছে। খানিকটা ভাবুক, সৃজনশীল কাজের মানুষ ছিলো সুবিনয়। সবসময় নতুন কিছু সৃষ্টির নেশা যেন তার মাথায় খেলা করতো। সেই সুবিনয় আমায় মাঝে মধ্যেই বলতো, “এমনতো কথা ছিলোনা বাবু……. এটাতো কথা ছিলো না…” সেই সুবিনয় জীবনের কাছে, এ সমাজের কাছে হেরে গেছে। সে সব সময় চাইতো প্রচলিত নিয়মের বাইরে দাঁড়াতে, সে পারেনি। এসমাজ হতে দেয়নি।
সত্যিই এমনতো কথা ছিলো না। বরং কথা ছিলো অন্যকিছু।
“কথা ছিলো রক্ত প্লাবনের পর মুক্ত হবে শস্যক্ষেত,
রাখালেরা পুনবার বাঁশিতে আঙুল রেখে
রাখালিয়া বাজাবে বিশদ।
আমার এক বন্ধু ছিলো, বিনয়। আমি সুবিনয় বলে ডাকতাম। পেশা হিসেবে কৃষিকেই সে বেছে নিয়েছে। খানিকটা ভাবুক, সৃজনশীল কাজের মানুষ ছিলো সুবিনয়। সবসময় নতুন কিছু সৃষ্টির নেশা যেন তার মাথায় খেলা করতো। সেই সুবিনয় আমায় মাঝে মধ্যেই বলতো, “এমনতো কথা ছিলোনা বাবু……. এটাতো কথা ছিলো না…” সেই সুবিনয় জীবনের কাছে, এ সমাজের কাছে হেরে গেছে। সে সব সময় চাইতো প্রচলিত নিয়মের বাইরে দাঁড়াতে, সে পারেনি। এসমাজ হতে দেয়নি।
সত্যিই এমনতো কথা ছিলো না। বরং কথা ছিলো অন্যকিছু।
“কথা ছিলো রক্ত প্লাবনের পর মুক্ত হবে শস্যক্ষেত,
রাখালেরা পুনবার বাঁশিতে আঙুল রেখে
রাখালিয়া বাজাবে বিশদ।
বাঙালীর এই স্বপ্নটা অনেক পুরোনো। অনেক রক্ত প্লাবন ঘটিয়েছে বাঙালি। কিন্তু তাঁদের কাংখিত স্বপ্ন কেউ বাস্তবায়ন করেনি। অনেকেই কথা দিয়েছিলো। অনেক বড় বড় রাজনৈতিক নেতা তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতি করেছে এই সাধারণ মানুষগুলোর উপর। রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তারা সত্যিই লেটার মার্ক পেতেই পারে। কিন্তু বাঙালির ভাগ্য পরিবতর্নের যে মিছে স্বপ্ন তারা দেখিয়েছিলো তা তারা আজও করতে পারেনি। আজও এদেশের কোন সঠিক ইতিহাস নেই। বাঙালি যদি কোন আহবানে মুক্তির সংগ্রামে যেয়েই থাকে, তাহলে আজও কেন বাঙালি সেই একই আকাংখা মনে পুষে রেখেছে? কেন আজও বাঙালি বাঁচতে চাইছে, বাঙলার মানুষ তাদের অধিকার চাইছে? চাহিদা সেই আগেরটাই আছে, অধিকার ঠিক আগের মতোই সীমাবদ্ধ রয়েছে। শুধু পরিবতর্ন হচ্ছে শাষক শ্রেণির।
“আর কী অবাক! ইতিহাসে দেখি সব
লুটেরা দস্যুর জয়গানে ঠাঁসা….”
“কথা ছিলো, আমাদের ধর্ম হবে ফসলের সুষম বন্টন
আমাদের তীর্থ হবে শস্যপূণর্ ফসলের মাঠ।
অথচ পান্ডুর নগরের অপচ্ছায়া ক্রমশ বাড়ায় বাহু
অমলিন সবুজের দিকে, তরুদের সংসারের দিকে।
জলোচ্ছাসে ভেসে যায় আমাদের ধমর্ আর তীথর্ভূমি
আমাদের বেঁচে থাকা……..”
বাঙলাদেশের রাজনীতির অন্যতম বিষয়বস্তু হলো মুক্তিযুদ্ধ। চেতনা, চেতনা, চেতনা,,,,,,,,,, আমি জানিনা সেই চেতনাটা কি? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে কি বোঝানো হয় আর সেটা কি ছিলো? থাকলে সেই চেতনাটার কোন সুফল বাঙলার মানুষের জন্য আছেকি? নাকি সেসব রাজনীতিবিদদের রাজনীতি করার একেকটা উপকরণ মাত্র?
“কথা ছিলো আর্য বা মোঘল নয়, এ জমিন অনাযের্র হবে।
অথচ এখনো আদিবাসী পিতাদের শৃঙ্খলিত জীবনের ধারাবাহিকতা
কৃষকের রন্দ্রে রক্তে বুনে যায় বন্দিত্বের বীজ।”
নাহ্ এ জমিন অনাযের্র হয়নি। এ জমি হয়েছে আযর্দের। ক্রমশ পিছু ফিরে যাওয়ার তীব্র আকাংখা আজ বইছে বাতাসে। আদিবাসীরা টেনে নিয়ে যেতে চাইছে আদিম যুগে সবাইকে। অথচ এমন কথা ছিলো না। এ জমিতে সুবিনয়ের থাকার কথা ছিলো। সবার এক সাথে বাঁচার কথা ছিলো। এমনতো কথা ছিলো না। সুবিনয়েরতো বাঙলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চল্লিশ বছর পর প্রাণ ভয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর কথা ছিলো না। সুবিনয় অনার্য, সুবিনয় চেয়েছে ফসলের সুষম বন্টন, সুবিনয় চেয়েছে উদ্ধার পেতে।
“কথা ছিলো, চিল ডাকা নদীর কিনারে একদিন ফিরে যাবো ”
একদিন বট বিরিক্ষির ছায়ার নিচে জড়ো হবে
সহজিয়া বাউলেরা,
তাদের মাধবী আঙুলের টোকা ঢেউ তুলবে একতারায়-
একদিন সুবিনয় এসে জড়িয়ে ধরে বলবে: উদ্ধার পেয়েছি”
নাহ্ সুবিনয় চলে গিয়েও সুখে নেই। ওই দেশটাও আজ অনাযের্র নয়। সব আযর্দের । সুবিনয় আজ ফোন করেছিলো। আজও বললো, “এমনতো কথা ছিলোনা বাবু…….. এটাতো কথা ছিলো না….”
মন ভালো নেই। এমনতো কথাছিলো না।
* কবিতাগুলো রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
এমন তো কথা ছিল না
ভাল পোস্ট
এমন তো কথা ছিল না
ভাল পোস্ট
বানান গুলিতে একটু সমস্যা আছে স্টিব জব্বারের প্যারায় আছেন নাকি হাহা