অর্থমন্ত্রীর ‘রাবিশ’ প্রস্তাব!
২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ঘোষণা দিয়েছেন, “ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ হবে।”
পেছনের ইতিহাস!
অর্থমন্ত্রীর ‘রাবিশ’ প্রস্তাব!
২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ঘোষণা দিয়েছেন, “ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ হবে।”
পেছনের ইতিহাস!
১৯৯২ সালে যখন ‘Private University Act’ সংসদে পাশ হয়েছিলো তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কিছু ভালো ভালো কথা বলেছিল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিলঃ উচ্চ শিক্ষার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ , আর্থিক লাভ বা মুনাফার উদ্দেশ্যে কাজ না করা, উচ্চ কর্মদক্ষতা সম্পন্ন জনশক্তি তৈরীর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি তরান্বিত করা…ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কেমন?
দেশে যে পরিমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে তাতে উচ্চ শিক্ষার চাহিদা অর্ধেকও পূরণ করতে সক্ষম নয়, যারা উচ্চবিত্ত তাদের পথ খোলা আছে তারা বিদেশে ডিগ্রি নিবে। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত কিংবা নিন্ম মধ্যবিত্ত তারা কি করবে? বাধ্য হয়েই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। এটাও একটা চক্রান্ত -দেশে পর্যাপ্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না করে শিক্ষা কে প্রাইভেটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার প্রমাণ দেখা যায় হিসাব দেখলে ৮৪ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা মাত্র ৩৪ টি।
…২০১৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরি কমিশনের একটি হিসাবে দেখা গেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১,৮৫,৯১০ অপরদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২,৮০,৮৮২ জন -(সুত্রঃ শিক্ষালাপ ২০১৪) । বর্তমানে ১৬০ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা পড়াশোনা করে?
হয়তো কেউ ধারনা করতে পারেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু উচ্চবিত্তরাই পড়াশোনা করে। কিন্তু না, সেখানে নিন্মবিত্ত, নিন্ম মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও পড়ে। প্রশ্ন উঠতে পারে নিন্মবিত্তরা এতো টাকা পায় কই? অনেকে সরকারি পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে এখন দিনে জব করে ইভিনিং-এ উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে। যারা HSC পাশ করে ভর্তি হয় কেও টিউশনি করে, কেউ পার্ট টাইম জব করে। আর যারা ইভিনিং-এ MBA করে তারা প্রায় সবাই জব করে। কেউ নিজেদের শেষ সম্বল ত্যাগ করেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা করে। অর্থাৎ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই সংগ্রাম করে পড়াশোনা করে। তাদের জন্য সরকারের দরকার ছিল বাজেটে আলাদা বরাদ্ধ রাখা। উলটো তাদের পকেট কাটার পরিকল্পনা করছে সরকার নিজেই। তাদেরকে নীরবে বলে দিল …এতো সস্তায় শিক্ষা পাওয়া যাবে না! *ভ্যাট প্রযোজ্য*
আইন!
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ৪৪ (৭) ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জিত মুনাফা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের বাইরে কোথাও ব্যয় বা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয় নি। আইনের ৪১ ধারায় অর্থায়নের উৎস হিসেবে ‘শিক্ষার্থী ফি’ উল্লেখ করলে তা আইনানুসারে করমুক্ত হওয়ার কথা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই আইনের দৃষ্টিতে ‘দাতব্য ট্রাস্ট’ হওয়ায় এর মুনাফার ওপর করারোপ সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।
রাষ্ট্রের কি দরকার — অস্ত্র না শিক্ষা?
বাংলাদেশ সরকার রাশিয়া থেকে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে । বাংলাদেশ শুধু রাশিয়া থেকেই যে অস্ত্র কিনছে তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন ইত্যাদি দেশ থেকেও বাংলাদেশ হাজার হাজার কোটি টাকার অস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম কিনে থাকে। সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কিনবে এটা স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু যখন দেখা যায় তা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কে অতিক্রম করছে তখন এ বিষয়ে আমাদের একটু দৃষ্টি আকর্ষণ না করে উপায় নেই।
সংক্ষেপে বাজেট।
৪ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের যে বাজেট উত্থাপন করেছেন, তাতে বলা হয়েছে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে আসবে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা যা মোট বাজেটের ৫৯.৮ শতাংশ।
রাজস্ব বোর্ডের বাইরে ৪০.২ শতাংশ আসবে অন্যান্য খাত থেকে। এর মধ্যে-বিদেশি অনুদান থেকে ২, বিদেশি ঋণ ৮.২, অভ্যন্তরীণ অর্থায়ন ১৯.১, কর ব্যতীত অর্থায়ন ৮.৯ এবং রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর থেকে আসবে ২ শতাংশ। (বিডিনিউজ২৪)
বাজেটে অগ্রাধিকার কোন খাত?
কেউ ভাবতে পারেন এটা গরীব দেশ তাই দেশের উন্নয়নের জন্য কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষার উপর সরকার বাজেটে জোর দিবে বেশি। কিন্তু বাস্তবতা কি?
শিক্ষা খাতঃ ২০১৫-১৬ বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ১৭ হাজার ১০৩ কোটি টাকা ।
প্রতিরক্ষা খাতঃ এই খাতে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। এটা গত প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ১ হাজার ৯২১ কোটি বেশি।
স্বাস্থ্য খাত: নতুন অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা।
এবার হিসাব করুন কোন খাতে কত জন মানুষ জরিত, কার জন্য বরাদ্দ বেশি দরকার ছিল?
শিক্ষা আর বাজারি পণ্য কি এক?
যেই ভ্যাটের প্রস্তাব করা হয়েছে এই বাড়তি ভ্যাটের বোঝা শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে। এই ভ্যাট আরোপ করে প্রকারান্তরে সরকারই এই দর্শন আরোপ করছেন যে, শিক্ষা পণ্য বিক্রির মতোই একটি বাণিজ্য। প্রতি লাখে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে , নুন্যতম টিউশন ফি তিন লাখ ধরলে ৩০ হাজার টাকা পকেটে নিবে লুটেরা গোষ্ঠী -এক জন শিক্ষার্থী থেকে। এমন চার লাখ শিক্ষার্থী থেকে কত যাবে বছরে হিসাব করেন…।
শিক্ষার্থীর করের টাকা যাবে কোথায়?
গত কয়েক বছর ধরেই আমরা শোনে আসছি ব্যাংক খাতে অনিয়ম আর দুর্নীতি কিন্তু এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শোনা যায় নি, উল্টো তাদেরকে রাষ্ট্র টাকা দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে । সোনালী ব্যাংকে হল-মার্ক, জনতায় বিসমিল্লাহ গ্রুপ আর বেসিক ব্যাংকে চেয়ারম্যান আবদুল হাই—তিন ব্যাংকের এই তিন কেলেঙ্কারিতে ১২ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে।
বেসিক ব্যাংকের ঋণ আত্মসাতের মূল হোতা আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং ব্যাংক থেকে সম্মানজনক বিদায় দেওয়া হয়েছে। আর সোনালী ব্যাংকে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির জন্য ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের কারও বিরুদ্ধেই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এমন অনেক চোর-বাটপার-দুর্নীতিবাজদের পকেটে টাকা দিতে অসহায় মানুষের উপর করের বোজা ছাপাচ্ছে লুটেরা গোষ্ঠী!
গত কয়েক বছরের ঘাটতির চিত্র দেখুনঃ
২০১১-১২ অর্থবছরে মূলধন ঘাটতি পূরণে রাখা হয় ৩৪১ কোটি টাকা।
২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও ওই অর্থবছর ব্যয় হয় ৫৪১ কোটি টাকা।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য ৪২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও ব্যয় হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে আবারও পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও শেষ পর্যন্ত খরচ হয় ৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরেও মূলধন ঘাটতি পূরণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। (প্রথম আলো)
যেখানে প্রাইভেট ব্যাংক বছর বছর লাভের টাকা গুনছে, অপরদিকে সরকারী ব্যাংকে প্রতি বছর ঘাটতি দিচ্ছে। শাবাশ! অর্থমন্ত্রী । শুধু ব্যাংক খাতে না, সরকারী আরো অনেক খাতে দুর্নীতির পুরুস্কার হিসেবে তাদের লসের টাকা বাজেট থেকে দেওয়া হয়।
পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর কর প্রস্তাব করেছেন ১০ দিনের বেশি হয়ে গেল, এখনো তেমন কোন প্রতিবাদ দেখা যায় নি। কিন্তু যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ফি শতকরা দশ টাকা বৃদ্ধি করতো তাহলে অর্থমন্ত্রি সংসদে তার বক্তব্য দেওয়া শেষ হওয়ার আগেই তিনি এর প্রতিবাদ শুনতে পেতেন, কিন্তু এখানে তা পান নি। কারন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সংগঠিত না। আমার মনে আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সেখানকার ছাত্ররা তাদের রক্ত দিয়ে দেয়াল লিখন করছে। গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজারো শিখার্থী মিছিলে নেমে গুলি খেয়েছিল। জগন্নাথের ২৭ এর ৪ ধারা বাতিলের আন্দোলন সবার মনে থাকার কথা। এমন ইতিহাস নেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে!
ভিন্ন চোখে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়।
যদি মানের দিক বিবেচনা করি তাহলে বলবো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পাবলিকের মত উচ্চ শিক্ষা দিতে পারছে না, কিন্তু কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পাবলিকের কাছাকাছি শিক্ষা দিতে পারছে পর্যাপ্ত শিক্ষক, ল্যাব সব কিছুই আছে। এগুলোতে সাধারনত উচ্চবিত্তরাই পড়াশুনা করে। অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গলদ আছে, অনেক গুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন আছে, অনেকেই নিয়ম বহির্ভূত কাজ করছে। আর এও সত্য, যে এই সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর অনুমোধন দিচ্ছে এবং দেখাশোনা করছে UGC(University Grant Comission) যারা একি সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ও নিয়ন্ত্রক। তাই যত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যত অনিয়ম আছে সব কিছুর দায়িত্ব সরকারী এই কমিশনের।
এখন করনীয় কি? -সিদ্ধান্ত নিন।
আপনার চোখের সামনে কয়েকজন লুটেরা আপনার টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে এবং আপনি নিজের হাতে তাকে দিচ্ছেন, আপনি কি করবেন? চুপ থাকবেন? আপনি কি কোপাল বা ভাগ্যের দোহাই দেবেন? নাকি প্রতিবাদ করবেন, মাঠে নামবেন, ভ্যাট প্রত্যাহার করতে বাধ্য করবেন? সিদ্ধান্ত আপনার? কি করা উচিৎ এই মুহূর্তে?
১৭ই সেপ্টেম্বর, আমাদের শিক্ষা দিবস।
১৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৬২ সাল, পাকিস্তানি শাসন, শোষণ, শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লরাই করতে গিয়ে শহীদ হন মোস্তফা, ওয়াজিউল্লা, বাবুল।
কি ছিল সেই নীতিতে? ১,সস্তায় শিক্ষা করা যায় বলিয়া তাহাদের যে ভুল ধারনা রহিয়াছে তাহা শিঘ্রই ত্যাগ করিতে হইবে। ২, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও ছাত্র বেতন বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
আজ পাকিস্তানীরা নাই। কিন্তু শোষণ আছে, তাই আন্দোলনও থাকতেই হবে। তা না হলে শোষকের চাঁপায় শোষিতদের অস্তিত্ব থাকবে না। অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হলেও আজ প্রতিবাদ করতে হবে।
জরাগ্রস্থ পুরাতন পৃথিবী চেয়ে থাকে যুগে যুগে তোমাদেরই, এই কিশরদের-এই তরুণদের মুখের পানে … কত কাজ তোমাদের – ধরনীর দশদিকে ভরে কত ধুলি, কত আবর্জনা, কত পাপ, কত বেদনা – তোমরা ছাড়া কে তার প্রতিকার করবে? কে তার এলাজ করবে? তোমাদের আত্মদানে, তমাদের আয়ুর বিনিময়ে হবে তার মুক্তি। শত বিধিনিষেধের অনাচারে জিঞ্জিরে বন্দিনী এই পৃথিবী আজাদীর আশায় ফরিয়াদ করছে তোমাদের প্রাণের দরবারে, তার এ আর্জি কি বিফল হবে?
-নজরুল ইসলাম।