সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ধীরে ধীরে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মাত্র তেতাল্লিশ বছর পর দক্ষিণ এশিয়ার এই ক্ষুদ্র কিন্তু সম্ভবনাময় দেশটি রাজনীতি, অর্থনীতি, বাণিজ্য, কৃষি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যতটুকু সাফল্য লাভ করেছে; তা প্রকৃত অর্থেই প্রশংসনীয়। স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও সামাজিক অবস্থানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর তুলনায় খুব বেশি পিছিয়ে নেই। কিন্তু এ সবই ম্লান হয়ে যায় যখন নজরে আসে দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ধীরে ধীরে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মাত্র তেতাল্লিশ বছর পর দক্ষিণ এশিয়ার এই ক্ষুদ্র কিন্তু সম্ভবনাময় দেশটি রাজনীতি, অর্থনীতি, বাণিজ্য, কৃষি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যতটুকু সাফল্য লাভ করেছে; তা প্রকৃত অর্থেই প্রশংসনীয়। স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও সামাজিক অবস্থানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর তুলনায় খুব বেশি পিছিয়ে নেই। কিন্তু এ সবই ম্লান হয়ে যায় যখন নজরে আসে দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা।
আধুনিক বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার তুলনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট পিছিয়ে। বিশ্লেষকদের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, শিক্ষা ব্যবস্থার এই অবনতির পেছনে সব থেকে বড় দুটি কারণ হচ্ছে : শিক্ষা বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দুর্বলতা। আর এই দুটির সুযোগ নিয়ে সবথেকে বড় ক্ষতিটি করছে তথাকথিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো। কিছুদিন পূর্বে দেশের একটি প্রখ্যাত দৈনিক পত্রিকায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বিষয়ক একটি অনুসন্ধানমূলক ও বিশ্লেষনধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখান থেকে দেশের স্বনামধন্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর নানারকম অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা উঠে আসে। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে লেখালেখি হলে সরকার ও প্রশাসন বিষয়টিকে আমলে নেন। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাশ্চাত্য ও আধুনিক শিক্ষার নামে অলি-গলিতে তৈরি হওয়া এই সকল স্কুলগুলোর অধিকাংশ রেজিষ্ট্রেশনবিহীন। গুটিকয়েক স্কুল সরকারী অনুমোদন প্রাপ্ত। কিন্তু কোন রকমের সরকারী নীতিমালা না থাকায় এই সকল স্কুল নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী সেশন ফী, ভর্তি ও বেতন বাবদ বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধুমাত্র রাজধানীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ভর্তি বাবদ পঞ্চাশ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা এবং মাসিক ছয় থেকে বার হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন ধার্য করে। যেখানে বাংলা মাধম্যের স্কুলগুলোতে এককালীন ভর্তির সুবিধা থাকে সেখানে এই স্কুলগুলোতে ফী-বছর বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে ভর্তি হতে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বর্ধিত সরকারী মূসকের হিসাব দেখিয়ে এই টাকার অঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ এখানেই ক্ষান্ত হয়নি । রাজধানীসহ দেশের মধ্যম মানের কিছু স্কুল আরও নিচে নেমে এসেছে। এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিস ও বিভিন্ন ওয়ার্ক সিট দেয়ার নামে প্রত্যেক ছাত্রের কাছ থেকে দামী কাগজ, আঠা, বিভিন্ন রঙ্গের কলম, স্কেল, পেন্সিল, স্ট্র্যাপলার প্রভৃতি উপকরণ নেয় নতুবা সমপরিমাণ অর্থ আদায় করে। এই সকল স্কুলগুলোর পাঠ্যক্রমও মান-সম্মত নয়। পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থার সিলেবাস অনুকরণের নামে তারা নিজস্ব পছন্দের বই ও পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পড়ায়। এখানেও সরকারী বা শিক্ষা বোর্ডের কোন রকম নিয়ম মানা হয় না। এসবের পাশাপাশি কিছু স্কুল আবার নিজস্ব কোচিং এর ব্যবস্থা রাখে যেখানে বেতনের বাইরে বাড়তি টাকার বিনিময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়তে বাধ্য করা হয়। এছাড়া অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ শিক্ষক ও ভাষা চর্চার ল্যাবের অভাবের মতো সমস্যা তো আছেই।
বর্ধিত বেতন ও এই সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে কিছু অভিবাবকবৃন্দ আপত্তি বা অভিযোগ জানালে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিসি বা ছাড়পত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়ার মতো ঘটনার কথাও শোনা যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষের এই সকল অসততার ও শিক্ষা বাণিজ্যের ব্যাপারে সকলেই অবগত; কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কেউই মুখ খুলতে সাহস পান না। আইনি কোন ব্যবস্থা নেয়ারও উপায় নেই কারণ অধিকাংশ স্কুলই কোন না কোন প্রভাবশালী ব্যাক্তি বা বিভিন্ন দলীয় নেতাদের মালিকানাধীন। তবে শিক্ষা ব্যবস্থার এই অবনতি যখন গণমাধ্যম ও বিশ্লেষক মহলে বিশেষ আলোচিত হলে সরকার এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার উদ্দ্যোগ নেয়। চলতি বছরের ২০শে এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সরকারি নীতিমালা প্রণয়ন ও মনিটরিং সেল গঠন করার জন্য সরকার উদ্দেশ্যে একটি রুল জারি করা হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা, আইন, স্বরাষ্ট্র এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহপরিচালকসহ ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষাদানকারী এমন ২৩টি বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সাথে স্কুলগুলোতে পুনঃভর্তি বা সেশন চার্জ আদায়ের উপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়। কিন্তু তাতেও কোন আশানুরুপ ফল পাওয়া যায় নি। বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ খুব দ্রুতই এই ধরনের শিক্ষা বাণিজ্য, অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারী পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করলেও খোদ সরকার বা তার মন্ত্রী পরিষদ থেকে এখনও তেমন কোন আশার বাণী শোনান হয়নি।
আধুনিক বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে চলার জন্য উন্নত শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। দেশের সার্বিক উন্নতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই সঠিক ও পরিকল্পিত শিক্ষার প্রয়োজন আছে। কিন্তু ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো এই ক্ষেত্রে যে ধরনের ভূমিকা রাখছে তাতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধই করা হচ্ছে না বরং মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জাতীয়তাবোধের অবমাননা করার মতোন গুরুতর অপরাধও হচ্ছে। এ দুর্বস্থা থেকে যদি এখনই বেরিয়ে আসা না যায় তবে অচিরেই দেশের পরিণতি অত্যন্ত করুণ হবে।
একদেশে ত্রিমুখী শিক্ষা
একদেশে ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা হাস্যকর।
ত্রিমুখী শিক্ষব্যবস্থা মানে ?
ত্রিমুখী শিক্ষব্যবস্থা মানে ?
স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও সামাজিক
আপনার এ মন্তব্য পড়ার পর আমি পুরো লেখাটা পড়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। এ বাক্যটা পড়ে মনে হয়েছে, আপনি গড়পড়তা কথা কথা বলছেন, বিষয়ের গভীরে যাচ্ছেন না এবং মানুষের জীবনের চেয়ে পরিসংখ্যানকে বেশি বুঝেছেন। বাস্তবতা খুবই বিপরীত।
আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্কট এবং উন্নত বিশ্বের সঙ্গে এর ফারাক সম্পর্কে ধারনা পেতে এই লেখাটা দেখতে পারেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থার মৌলিক সঙ্কটের জায়গাগুলো হচ্ছে এই খাতে আমাদের প্রধান দুই সাসটেইনেবল পিলার হচ্ছে রেল ও নৌপথ। এই দুটোর দৈন্যদশার অর্থ হচ্ছে আমরা গাড়ি ও রাস্তার ওপর নির্ভরশীল। যা আমাদের অঞ্চলের প্রধান মাধ্যম আগে কখনোই ছিল না। এই স্বল্প আলাপেই যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্কটটা বুঝতে পারার কথা!
আর সামাজিক অবস্থানের প্রশ্নটা তো আপনি নিজেও দেখতে পাচ্ছেন। নারীরা কিভাবে সব জেনেও সোউদি যাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছে। বাদ বাকিদেরও খুব সহজে দেখা যায়।
আমার এই আলাপের উদ্দেশ্য হলো, আপনাকে সহযোগিতা করা। একজন পাঠক হিসেবে আমি আপনার কাছে দাবি করব সঠিক মতামত। আর সঠিক মতামত কখনো সঠিক বিশ্লেষণ ছাড়া তোইরী হতে পারে না। আশা করি, মনোযোগী হবেন, গভীরে যাবেন।
আনিস রায়হান ভাই, আমি এখানে
আনিস রায়হান ভাই, আমি এখানে গড়পড়তার কথাই বলতে চেয়েছি । কারণ এই পয়েন্টগুলো নিয়ে আসলে এখানে আলোচনা করার সুযোগ নেই । আমার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে দেশের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও দুর্নিতীসমূহ । আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ 😀 । আমি আপনার লেখাটি দেখছি ।
মাথায় ডুকছে না, কি লিখবো-তবে
মাথায় ডুকছে না, কি লিখবো-তবে আনিস ভাইয়ের লেখার ধরন আকর্ষনীয়। মল্লিক দা’ও ভালো লেখেছেন-শতর্ক হওয়া জরুরী নয়তো আমার মতো নিম্নআয়ের লোকদের ছেলেমেয়ে শিক্ষায় খরচ বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে।
শিক্ষাকে দিন দিন বাণিজ্যে
শিক্ষাকে দিন দিন বাণিজ্যে পরিণত করার যে ষড়যন্ত্র চলছে তার সব থেকে বড় ভুক্তভুগী হবে সীমিত আয়ের মানুষজন সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই । ধন্যবাদ অতৃপ্ত নয়ন ভাই ।