“অন্যের বিশ্বাসকে আঘাত করা খুব খারাপ, প্রত্যেকেরই উচিত অপরের বিশ্বাসকে সম্মান দেখানো”। খুব মজার একটা কথা। সুশীলরা প্রায়ই এই ধরনের বুলি কপচান। শুনলেই হাসি পায়। আবার কিছু বিরক্তিকর ধার্মিক সুশীল চোখে পড়ে যারা এই কথার সাথে একটা এক্সটেনশনও জুড়ে দেন। “ধর্মের দোহায় দিয়ে মানুষ হত্যা যতখানি অপরাধ, বিজ্ঞানের দোহায় দিয়ে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত করাও তার চাইতে কম অপরাধ নয়”।
“অন্যের বিশ্বাসকে আঘাত করা খুব খারাপ, প্রত্যেকেরই উচিত অপরের বিশ্বাসকে সম্মান দেখানো”। খুব মজার একটা কথা। সুশীলরা প্রায়ই এই ধরনের বুলি কপচান। শুনলেই হাসি পায়। আবার কিছু বিরক্তিকর ধার্মিক সুশীল চোখে পড়ে যারা এই কথার সাথে একটা এক্সটেনশনও জুড়ে দেন। “ধর্মের দোহায় দিয়ে মানুষ হত্যা যতখানি অপরাধ, বিজ্ঞানের দোহায় দিয়ে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত করাও তার চাইতে কম অপরাধ নয়”।
আপনি যদি এই ধরনের সুশীল হয়ে থাকেন তবে কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে আপনি বাধ্য। প্রশ্নগুলো খুব কঠিন নয় কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্নগুলোর উত্তরও আপনার জানা। ছোটবেলাতেই তোতাপাখির মত মুখস্থ করেছেন। তবুও আরও একবার প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনাকে দিতে হবে।
প্রশ্ন ১: সৌরজগৎ এর কেন্দ্রে কি? পৃথিবী না সূর্য?
প্রশ্ন ২:পৃথিবীর আকার কেমন? গোলাকার না সমতল?
প্রশ্ন ৩:পৃথিবী কি স্থির না গতিশীল?
উত্তর গুলো যথাক্রমে পৃথিবী, সমতল এবং স্থির। এই উত্তর মানতে আপত্তি আছে? যদি আপনি বলেন আপত্তি আছে, আসলে উত্তর গুলো হবে সূর্য, গোলাকার এবং গতিশীল তবে কিন্তু আপনি অন্য আরেকজনের বিশ্বাসকে আঘাত করছেন। কারণ কেউ কেউ বিশ্বাস করে সৌরজগৎ এর কেন্দ্র পৃথিবী, সমতল এবং স্থির। আপনি হয়ত বলবেন তাতে কি, বিজ্ঞান খুব শক্ত ভাবেই প্রমাণ করেছে পৃথিবী গোলাকার এবং সৌরজগৎ এর কেন্দ্র সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। কিন্তু একটু পেছনে ফিরে তাকান। ব্রুনো, কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও- এই নামগুলো কি পরিচিত মনে হচ্ছে? এদের সম্পর্কে কি কিছু জানেন। আশা করি জানেন। ব্রুনোকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল, কোপার্নিকাস এবং গ্যালিলিওর উপর চালানো হয়েছিল অমানবিক নির্যাতন। কারণ ছিল শুধুমাত্র ভিন্নমত পোষণ করে সেই সময়ের সমাজের মানুষদের বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া। সেই ভিন্নমতটি কি জানেন তো? ভিন্নমতটি ছিল- “পৃথিবী সৌরজগৎ এর একটি গ্রহ মাত্র এবং এটিও অন্য গ্রহগুলোর ন্যায় সুর্যের চারিদিকে ঘুরছে”
উনারা যদি আপনাদের বিশ্বাস থিউরি অনুযায়ী অন্যের বিশ্বাসে আঘাত না দিতেন তাহলে কি ঘটত একটু বলুন তো?
পৃথিবীর ঘুর্নণ যদিও বন্ধ হত না কিন্তু সভ্যতার ঘুর্নণ ঠিকই বন্ধ হয়ে যেত।
আপনারা অনেক পিচ্ছিল পদার্থের তৈরি। এবার হয়ত বলবেন সবই ঠিক আছে কিন্তু গালাগালি করতে হবে কেন? কটাক্ষ করার কি প্রয়োজন?
আপনি যখন দেখবেন আমার দাদা ৬ বছরের একটা শিশুকে বিয়ে করে নিয়ে আসল, নিজের পুত্রবধূকে বিয়ে করে বসল এবং আমি ও আপনার আশেপাশের সবাইকে সেটা সঠিক কাজ বলে মেনে নিতে দেখলেন তখন আপনি কি করবেন? নাকি আপনি তখনও আমার দাদাকে সম্মান দেখাবেন? আমার দাদার কাজটিকে সম্মান দেখাবেন?
আপনি যখন দেখবেন একজন রেপিস্টকে সবাই বাহবা দিচ্ছে, সবাই তার গুণ কীর্তন করছে, সে বুক ফুলিয়ে আপনার সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে তখন আপনি কি করবেন? সেই রেপিস্টকে সম্মান দেখাবেন?
ধর্মীয় বিশ্বাস জিনিসটা কচু
ধর্মীয় বিশ্বাস জিনিসটা কচু পাতার পানির মত। কু-বিশ্বাসকে আঘাতের পর আঘাত করতে হয়। না হয় সেটা ডালপালা বিস্তার করবে।
ধর্মানুভুতিতে আঘাত একটা
ধর্মানুভুতিতে আঘাত একটা আপেক্ষিক বিষয়। যিনি ধর্ম পালন করেন তার পক্ষেই সবচেয়ে বেশী ধর্মানুভুতিতে আঘাত দেওয়া সম্ভব। যিনি পালন করেন না, তার পক্ষে এটা সম্ভব নয়।
এক ধর্মে গান-বাজনা হারাম, অন্য ধর্মে গান বাজনা ছাড়া ধর্মীয় অনুষ্ঠানই হয় না। এক ধর্মে গরুকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করা হয়, অন্য ধর্মে সেই গরুকে ধরে-বেঁধে জবাই করে খাওয়া হয়। এক ধর্মে মুর্তি পূজাই একমাত্র আরাধনা, অন্য ধর্মে মুর্তি পূজাকে হারাম করা হয়েছে। সুতরাং ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের বিষয়টা খুবই আপেক্ষিক। ধর্ম পালন করা মানেই অন্যের ধর্মানুভুতিতে আঘাত দেওয়া; এটার ব্যতিক্রম করা অসম্ভব ও অবাস্তব। কারণ ধর্মীয় আচার-আচরণগুলি পরস্পর বিরোধী। -মনোদৈহিক (উপন্যাস), লেখক- নাজমুল হাসান, অন্বেষা প্রকাশন।
পোস্টে কয়েকটি বানান ভুল চোখে পড়ায় শুদ্ধরূপসহ উল্লেখ করে দিলাম। সহজভাবে নেবেন আশাকরি। আমিও এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা পেতে চাই।
গুরুত্বপূর্ন>গুরুত্বপূর্ণ
মুখস্ত>মুখস্থ
কারন>কারণ (ব্যতিক্রম ছাড়া ঋ, র, ষ, ক্ষ, গ এর পরে ণ বসে)
সুর্যের>সূর্যের
ঘুর্নন>ঘূর্ণন
কিন্ত>কিন্তু
ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেওয়ার
ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য
শুভেচ্ছা