বর্তমান সরকারের দারিদ্র্যজয়ের স্বপ্ন নিয়ে নেওয়া কর্মসূচিগুলো সারাদেশেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। যোগাযোগ, অবকাঠামো, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে গত আট বছরে নেওয়া পদক্ষেপ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যেমন বেড়েছে, তেমনি জীবনযাত্রার মানও বেড়েছে। মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০০৮ সালের ৬৮৬ ডলার থেকে বেড়ে এখন ১৪৬৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ৬ শতাংশে স্থির থাকা অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করে এখন প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ২০১৯ সাল নাগাদ এটি ৮ শতাংশে উন্নীত হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন আকাশচুম্বী। এই রিজার্ভ ২০০৮ সালে ছিল ৬১৪ কোটি ডলার। এখন তিন হাজার দুশ কোটি ডলার। অথচ একসময় বাংলাদেশ তিনমাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ ধরে রাখতে হিমশিম খেয়েছিল। শিল্প ও রপ্তানি খাতে দেওয়া নানা প্রণোদনার কারণে বেড়েছে রপ্তানি আয়। ব্যাংক ঋণের সুদহারও আগের তুলনায় কমেছে। দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের জন্য জেলায় জেলায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজেও শুরু হয়েছে, যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে। পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্বস্তি আছে জনমনেও। উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক অর্থায়নের কারণে মুদ্রা সরবরাহ বাড়লেও কার্যকর কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার আর্থ-সামাজিক খাতে বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ হারে ব্যয় করছে। সরকার স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। অপুষ্টির হারও কমেছে। ফলে, শ্রমশক্তিতে যোগ হয়েছে কর্মক্ষম তারুণ্য। ২০০৫ সালে দেশে যেখানে ৪০ ভাগ মানুষ দরিদ্র ছিল সেখানে বর্তমানে এই হার ২৪ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অতিদরিদ্র্য মানুষের হার নেমে এসেছে ১২ শতাংশে নিচে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সরকার বাজেটের ১২ দশমিক ৭২ ভাগ ব্যয় করছে। দেশের দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার, ঘরে ফেরা, মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ, বিভিন্ন ধরনের ভাতা, কর্মসৃজনী প্রকল্প, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নে পৃথকভাবে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতিমধ্যে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে। কৃষি, অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতের উন্নয়নও অব্যাহত গতিতে রয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ উদ্যোগ বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে নতুন ইমেজ সৃষ্টির সুযোগ করে দিয়েছে। উন্নয়নের এই গতি ধারা অব্যাহত থাকলে স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন অবধারিত।
- মলি এর ব্লগ
- নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন
- 230 বার পঠিত
Comments
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সরকারি উন্নয়নের কোনো কমতি নেই।তারই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
Post new comment