ইদানীংকার বাঙালিদের ভেতর আবার নিজেস্ব সংস্কৃতি নামক একটা ধারণার চুলকানি শুরু হয়েছে।যেখানে সংস্কৃতির প্রধান অংশ ভাষাটাই তাদের নিজেদের দখলে নেই, সারাদিন এই ভাষা ব্যবহার করলে কম করে হলে ও ১০০ বার বিদেশি ভাষার শব্দের লিঙ্গ চুষতে হয়ে, সেখানে বাঙালি এসেছে নিজের সংস্কৃতির বড়াই করতে!!
বাঙালি সংস্কৃতি যে সব উৎসব অনুমোদন করে তার মধ্যে পহেলা বৈশাখ অন্যতম, সেটা ও তো বিদেশি মুঘল শাসক আকবরের খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে প্রবর্তিত । তাহলে নিজের সংস্কৃতি বলে কিসের গৌরব করে বাঙালি। আর আধুনিক গান, কবিতা, নাটক, গল্প সেগুলোর শুরুই তো কমবেশী বেশি ব্রিটিশদের হাতে বা সহযোগিতায়। তাহলে বাঙালি বলুক তাদের নিজেস্ব সংস্কৃতি কোনটা??খনার বচন, নবান্ন, জারি, সারি টাইপের কিছু মাটির গান --এই নিজেস্ব সংস্কৃতি কয়টি নিয়ে কি বাঙালি বাঁচতে পারবে????
এখন আসি ধর্মীয় সংস্কৃতি্র দিকে, আর্যরা ভারতে না এলে বাঙালিদের ধর্ম কি হত তা বাঙালিরা নিজেরাই জানেন না।আর্য থেকে বাঙালি হিন্দু সংস্কৃতির গোড়াপত্তন এরপর মুঘল দ্বারা আবর ইসলামী সংস্কৃতি গোড়াপত্তন, সবি বাঙালি আত্তীকরণ করে নিজেদের করে নিয়েছে।বাঙালির আদৌ কোন স্পেশাল সংস্কৃতি ছিল না,কারণ আমরা কোন মৌলিক সমৃদ্ধ জাতি কখনওই ছিলাম না,আমরা ছিলাম দাস।
আমরা আমাদের উদার মানসিকতা দ্বারা অন্যের সংস্কৃতি গ্রহণ করে নিজেদের মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি।
মোটের উপর তাই যারা বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে বৃথা আস্ফলন করছেন তারা প্রকৃত পক্ষে ঐ ধার করা মিশ্র সংস্কৃতিরই জয়গান করছেন।
আমাদের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ কারণ সেটা উদার। আমরা যুগে যুগে যেমন বিভিন্ন প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে, ঐতিহাসিক কারণে(মঙ্গল শোভাযাত্রা, এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে সংস্কৃতির আন্দোলনের অংশ) অন্যের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে নিজেদের করে নিয়েছি এবং তা অনবরত করছি এবং সেটা করেই যাব ,কারণ এটাই আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য।
তাই বাঙালি সংস্কৃতির অজুহাত দেয়া বন্ধ করুন, কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইচ্ছা না হয় দিবেন না। নতুন কে গ্রহণ করতে না পারেন চুপ করে বসে থাকবেন, কিন্তু বাঙালি সংস্কৃতি দোহাই দিয়ে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির উদারতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোন অধিকার আপনার মত বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে অসচেতন সংকীর্ণমনা অবাঙালির নেই।
- নির্বাণ রায় এর ব্লগ
- নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন
- 758 বার পঠিত
Comments
আমরা তখন ছিলাম দাস কে বলেছে আপনাকে? কোথায় পেয়েছেন আপনি?
বহিরাগত আর্য ও মুঘলরা কিন্তু বিদেশী ছিল,আর তারা আমাদের শাসন করেছেন।সুতরাং, আদিবাসী বাঙালি্রা যে দাশ/শোষিত ছিল, তা কি বুঝতে পারছেন।তার আগে যে সাহিত্য বা মুক্ত বাঙালির সাহিত্য ছিল তার খুব কম অংশই আজ টিকে আছে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
Post new comment