৯২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ। লংগদু বাজারের দিন, চারদিকে চলছে জমজমাট বাজার। একজন পাহাড়ি কাঁচা তরকারির খুপড়ি নিয়ে বাজারের দিকে হেঁটে আসছে। বাজারে প্রবেশ করার পর একটি জুতসই জায়গার খোঁজ করছে সে। হঠাৎ করে খেয়াল করলো একজন সৈনিক এসে তার খুপড়ির মাঝে কি যেন রেখে দিচ্ছে। একটু পরে সে বুঝতে পেরে “বোমা” “বোমা” বলে চিৎকার করে উঠল। চারপাশে মানুষ জড়ো হয়ে গেল এবং সে সৈনিকটিকে হাতেনাতে ধরা হল। ধরা পড়ার পর সৈনিকটিকে শাস্তি প্রদান করল তার অফিসার। শাস্তিঃ কানে ধরে উঠাবসা!!!!!
এটি একটি ছোট ঘটনা, কিন্তু যদি নিরীহ পাহাড়িটি বুঝতে না পারতো কি রেখে দেয়া হচ্ছে তাহলে হয়তো পত্রিকায় শিরোনাম হত “সন্ত্রাসবাদী সংগঠন শান্তিবাহিনীর বোমা হামলায় নিহত ….” বা আরো অন্য কিছু। ঘটনার অন্তরালে কি হয়েছিল বা কি ঘটেছিল তা আড়ালেই থেকে যেত। উপরের উল্লেখিত ঘটনাটি কিন্তু কোন মিডিয়াতেই আসে নি কারণ বড় কোন ঘটনা নয়। কিন্তু এই ঘটনাই পরবর্তীতে হতে পারত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের আরেকটি উদাহরণ।
এবার ’৯২ এর একই মাসের ২ তারিখে যে ঘটনাটি ঘটেছিল তার বর্ণনা দেই। ঘটনাটি ঘটেছিল রাঙ্গামাটির মারিশ্যায়। মারিশ্যা থেকে রাঙ্গামাটিগামী বোটে দুইটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে দুইজন নিহত হয়, একজন হিন্দু এবং একজন পাহাড়ি। এরপর ঘটনার সঠিকতা না জেনে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে সেদিন সেটেলারের হামলায় মারা গিয়েছিল ৩০ জন পাহাড়ি। পরবর্তীতে প্রকৃত ঘটনাটিকে অন্যদিকে মোড় ঘুরানোর জন্য ভিন্নভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়েছে “যাত্রীবাহী বোটে বিস্ফোরণের জন্য শান্তিবাহিনী তথা জনসংহতি সমিতি দায়ী”। কিন্তু শান্তিবাহিনী এই ঘটনার দায়দায়িত্ব অস্বীকার করে।
মূল ঘটনাঃ
রাঙ্গামাটি থেকে আশেপাশের উপজেলায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নদীপথ। মারিশ্যাও এর ব্যতিক্রম নয়। মারিশ্যা থেকে রাঙ্গামাটি যেতে বিরতিহীন লঞ্চে সময় লাগে ৬ ঘন্টা, আর লোকাল লঞ্চে আরো সময় লাগে। বিস্ফোরণ ঘটেছিল এই লোকাল একটি লঞ্চে।
তৎকালীন সময়ে নদীপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তা বজায় রাখা হত। মারিশ্যা লঞ্চঘাটের খালি লঞ্চগুলো আর্মি-পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রাখা হত। যাত্রীদের লঞ্চে উঠার সময় লাইন করে তাদের তল্লাসী করে তোলা হত। যে লঞ্চে বিস্ফোরণ ঘটেছিল তার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। এছাড়া, প্রতিটি স্টপেজেও তল্লাসী করে যাত্রী তোলা হত।
ঘটনাস্থল দুরছড়ি ঘাট থেকে আমতলী ঘাটঃ
মারিশ্যা থেকে দুরছড়ি ঘাটে এসে পৌঁছলো লঞ্চটি। তখন আবার তল্লাসীর মাধ্যমে দুইজন নতুন যাত্রী (সঠিকভাবে জানা যায় নি, পাহাড়ি না সেটেলার) উঠেন। লঞ্চটিতে কিছু তামাকের গুঁড়ার টিন ছিল এবং পাশেই বসা ছিল অধিকাংশ সেটেলার। দুই যাত্রী সেখানে বসে পড়েন। দুরছড়ি ঘাটের পর আসে আমতলী ঘাট। সে ঘাটে ব্যক্তিদ্বয় লঞ্চ থেকে নেমে যান। এরপর লঞ্চটি আবার রওনা দেয়। রওনা দেয়ার কিছুক্ষণ পর একটি বাঁক পেরোনোর সময় লঞ্চে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী বাঘাইছড়ি উপজেলার ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সংস্থার দারোয়ান লাল মিয়া ঘটনার বর্ণনা দেন এবং তার ধারণা বিস্ফোরণটি তামাকের গুঁড়ার টিনের পাশেই ঘটেছে। বিস্ফোরণে দুই যাত্রী মারা যায়, একজন হিন্দু ও একজন পাহাড়ি। বিস্ফোরণের পর লঞ্চটি অকেজো হয়ে ডুবে যায় এবং বাকি যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠে আসে। এরপরপরই ঘটে যায় পার্বত্য ইতিহাসে আরেকটি গণহত্যার কাহিনী যার নাম “মাল্যে গণহত্যা”।
সেটেলারদের হামলাঃ
লঞ্চটি যেস্থানে বিস্ফোরিত হয়েছিল তার পাশেই ছিল মাল্যে সেটেলার গ্রাম। সেই গ্রাম থেকে সেটেলাররা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহাড়িদের আক্রমণ করে। এখানে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ১১ জন। এ ঘটনায় মোট ৩০ জন পাহাড়ি নিহত হয় যার মধ্যে মাত্র ১৪ টি লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কয়েকটি শিশুকে কাদায় নাক ডুবিয়ে মেরে ফেলা হয়। মারিশ্যা এলাকার দুইটি পাহাড়ি পরিবারের সবাই এই হামলায় মারা যায় এবং অনেকের লাশও পাওয়া যায়নি পরবর্তীতে। এই ঘটনার বর্ণনা দেন লংগদুর মানিক্যছড়ার কিশোর রাজমোহন। তার ভাষ্য- “বিস্ফোরণের পর সাঁতরিয়ে কূলে উঠতে গিয়ে যখন পাহাড়িদের আক্রান্ত হতে দেখলাম তখণ আমি কচুরিপানার ভেতর লুকিয়ে থাকি। এভাবে দুই ঘন্টা ছিলাম। ওখানেও আমার দিকে লাঠি ও পাথর ছুড়ে মারা হয়”। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই হামলা রুখে দাঁড়ানোর কোন সহযোগিতাই পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পরঃ
বিস্ফোরণটি ঘটেছিল লংগদু ও বাঘাইছড়ি থানার কাছাকাছি। কিন্তু এই দুই থানাকে অবহিত না করে নিহতদের লাশগুলো রাঙ্গামাটিতে নিয়ে আসা হয়। তখন অনেক শিশুরই নাকে, মুখে এবং গলায় কাদা লেগে থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু লাশগুলোর পোস্টমর্টেম ভালভাবেও করা হয়নি। এ বিষয়ে ডাক্তারদের সাথে কথা বলতে গেলে ডাক্তার কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ঘটনার পরপরই প্রশাসন কোনরূপ প্রমাণ ছাড়াই শান্তিবাহিনীকে দায়ী করে। ঘটনাস্থলে নিহত ১১ জন পাহাড়িসহ মোট ১৪ জনকে তারা লঞ্চ বিস্ফোরণে নিহত বলেও প্রচার করে। কিন্তু শান্তিবাহিনী দৃঢ়ভাবে এই ঘটনার দায়দায়িত্ব অস্বীকার করে। ফলে হামলার ঘটনা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়।
একটু বিশ্লেষণঃ
প্রথমেই আসা যাক হামলাকারী কে বা কারা? প্রশাসন এখানে শান্তিবাহিনীকে দায়ী করলেও তারা তা অস্বীকার করেছে। কিন্তু অতীতে শান্তিবাহিনীর পক্ষ থেকে হামলা সংঘটিত হয়েছে তার প্রতিটি দায়িত্ব তারা স্বীকার করেছে। শুধুমাত্র এই প্রথম তার ব্যতিক্রম ঘটলো।
এরপর হামলায় নিহতদের প্রসঙ্গে। প্রশাসন দাবি করেছে হামলায় ১৪ জন নিহত হয়েছে যার অধিকাংশই পাহাড়ি। তাহলে কি শান্তিবাহিনী পাহাড়িদের মারার জন্যই এ হামলা করেছিল? আর লঞ্চের যে অংশে বিস্ফোরণটি ঘটে যেখানে বসা ছিল অধিকাংশই সেটেলার। কিন্তু নিহতের সংখ্যায় দেখা গেছে অধিকাংশই পাহাড়ি। কিভাবে তা সম্ভব??
প্রথমেই বলেছি প্রতিটি লঞ্চে কঠোর তল্লাসীর মাধ্যমে যাত্রী তোলা হত। তাহলে কিভাবে আর্মি-পুলিশের চোখ, কড়া নজরদারি এড়িয়ে লঞ্চে বিস্ফোরক পদার্থ নিয়ে ওঠা সম্ভব??
আবার উক্ত ঘটনায় কিছু সেটেলারকেও আহত দেখানো হয়েছিল। তাদের চিকিৎসা করানো হয় রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে। অথচ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়িদের স্থান হয় লংগদুর প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত রাবেতা আল-ইসলাম হাসপাতালে। এই চিকিৎসা বিভাজনের মধ্যেই কি প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হয় না?????
শেষ কথাঃ
লঞ্চে বোমা হামলা কে করেছে এটা নিয়ে বির্তকের কোন সূরাহা হয়নি। কিন্তু পাহাড়িদের দল শান্তিবাহিনী উক্ত হামলা করেছে এই অজুহাত তুলে মেরে ফেলা হলো পাহাড়িদের। কারোর কোন বিচার হলো না। প্রথমেই একটি ঘটনা উল্লেখ করেছিলাম। হয়তো বিক্রেতা পাহাড়িটি যদি বোমাটি দেখতে না পেত তবে পাহাড়ের ইতিহাসে আরো একটি গণহত্যার কাহিনী যুক্ত হতো। সে যাত্রা রক্ষা পেলেও এই সাধারণ ও নিরপরাধ ৩০ জন পাহাড়ির ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিলনা। ফলে তাদের নিরস্ত্র ও অসহায় অবস্থায় মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হলো। এভাবেই অজ্ঞাত উৎস থেকে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর পাহাড়ি হত্যা যেন ফরজ হয়ে দাড়িয়েঁছে। হামলাকারীদের খুজেঁ পায়নি প্রশাসন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোরও কোন ইচ্ছে যেন তাদের নেই। তাহলে কি প্রশাসন হামলাকারীদেরই মদদ দিয়েছিল?? আর্মিদের এত তল্লাসীর পরও কিভাবে বিস্ফোরণ পদার্থ লঞ্চে পৌঁছতে পারে? তাহলে কি হামলাকারীদের সাথে আর্মিদের যোগসাজস ছিল??
অনেক প্রশ্ন রয়েছে কিন্তু উত্তর খুজেঁ পাওয়া দুস্কর। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রশাসন বা আর্মিরা কোনদিনই দেয়নি। ঘটনার সঠিক তদন্ত না করে ঢালাওভাবে শান্তিবাহিনীর উপর দায় চাপিয়ে যেন প্রশাসনই মুক্ত হতে চায় ঘটনার দায়ভার থেকে। এত উত্তরবিহীনের মাঝেও ঘটে গেল পাহাড়ের আরেকটি গণহত্যা। এ যেন শেষ নেই!! এ ইতিহাসও ধীরে ধীরে আজ বিস্মৃতির পথে চলে যাচ্ছে। হয়ে পড়ছে অন্যগুলোর মত বিস্মৃতির আরেক গণহত্যারূপে।
- অজল দেওয়ান এর ব্লগ
- নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন
- 2382 বার পঠিত
Comments
ভাই প্রথম জানলাম। আর নিন্দা জানাচ্ছি।
অপপ্রচার ভালোই শিখেছেন। পিসিপি'র উত্তরসুরী হিসেবে এর চেয়ে ভালো কিছু আশাও করিনি। ১১ জন যদি পাহাড়িই মরে, তাহলে বাঙালি মরেছিলো মাত্র ৪ জন। তাই কি? সেদিনের একটি ছবি আজও আমার সংগ্রহে আছে। শান্তিবাহিনীকে মহান বানানোর অপচেষ্টা থামান। বেসামরিক নারী ও শিশুকে মেরেছিলো, যেই জঙ্গিগোষ্ঠী, তাদের দালালিটা ছাড়ুন।
হা হা হা হা। তাহলে সত্য কি ঘটেছিল তার বর্ণনা দেন। আশা করবেন না তো, গোমর যে ফাঁস করে দিচ্ছি দিনদিন।
সত্য ঘটনার বর্ণনা চাই। আর ছবিতে যারা আছে নিহত হিন্দুর সাথে বাকি পাহাড়িদের লাশগুলো দেখিয়ে কি বুঝালেন?? মানুষ বোকার হদ্দ না যে চেহারা দেখে চিনবে না সে কি। দয়া করে আসল ঘটনা বলুন। নইলে চ্যালেঞ্জ করে লাভ নাই।
অজল দেওয়ান
'হিন্দু' মানে কী বোঝাতে চান? হিন্দুরাও কি বাঙ্গালি নয় নাকি? আপনাদের হীন মনমানসিকতা সব জায়গায় খাটলেও, এখানে খাটবে না। আর মানুষ আসলেই বোকার হদ্দ নয় যে চেহারা চিনবে না। ধন্যবাদ।
হিন্দুরা তো বাঙালি সেটাকে অস্বীকার করছি না। কিন্তু সেটেলাররা হিন্দু সেটা জানা ছিলনা। যাক এই প্রথম আপনি জানালেন যে পাহাড়ের হিন্দুরাও সেটেলার!!!
কার হীন মানসিকতা কোথায় খাটছে সেটা আপনার কমেন্ট দিয়েই প্রমাণিত হয়। নতুন করে কাউকে বলারও প্রয়োজন বোধ করছি না।
অজল দেওয়ান
হিন্দুরা সেটেলার নয়, তাই তাদের হত্যা করাটা কি জায়েজ হয়ে যায়? বরং এতে আরও প্রমাণিত হয়, পুনর্বাসিত বাঙালিরা নয় কেবল, অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও আপনাদের সহিংসতার শিকার সেখানে। এমনকি হিন্দু ও বড়ুয়াদের মতো সংখ্যালঘুরা অতীতে শান্তিবাহিনীর নৃশংসতার পাশাপাশি বর্তমানে জেএসএস ও ইউপিডিএফ'র নৃশংসতা, সন্ত্রাস, বর্বরতা ও চাঁদাবাজির শিকার।
ভাই, ছবি দেখিয়ে এরকম হাজারো প্রমাণ করা যাবে পাহাড়ের গণহত্যাগুলো। সত্য স্বীকার করতে এত ভয় লাগে কেন? আপনিই তো আপনার এক পোস্টে স্বীকার করেছিলেন পাহাড়ে নাকি ১১টা গণহত্যা হয়েছে আর সেটাকে জায়েজ করেছিলেন সেটেলারদের উপর চালানো ২টা গণহত্যার মিথ্যা ধুয়া তুলে।
আর এই গণহত্যাটি কেন স্বীকার করতে এখন ভয় পাচ্ছেন?? কতবার ডিগবাজি দিবেন একটু বলেন তো?? আপনার ডিগবাজি দেখার সময় কেন জানি ছাগলের গন্ধও পাই। কারণ, কাদের সাথে আপনার সখ্য সেটা ভালই জানা আছে।
অজল দেওয়ান
আপনার সেই পোস্টটা এতটাই মূর্খতার পরিচায়ক ছিল যে নতুন করে কোনো মন্তব্য করা ইচ্ছে বা প্রয়োজনও আমি অনুভব করিনি। সে পোস্টে আমি স্বীকার করিনি ১১টা গণহত্যা হয়েছে। আমি বলেছি আমি 'ধরে নিচ্ছি' ১১ টা গণহত্যা হয়েছে, কিন্তু বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা হয়েছে, সেসবের কথা উঠছে না কেন? গণহত্যা আপনি মুখে বললেই বা আমি 'ধরে নিলে' বা আরেকজন দাবি করলেই, হয়ে যায় না! এটার জন্য গবেষণা প্রয়োজন। এবং সমস্যা হচ্ছে, সেটার প্লট অনেক আগেই পরিবর্তিত হয়ে আছে।
এজন্যই তো গবেষণা করছি। আর করছি বলেই গায়ে লেগে যাচ্ছে এটা স্বীকার করতে বাধছে কেন?? আমার সেই পোস্টটা এতই যদি মুর্খতার পরিচায়ক হয় তবে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন না কারণ সেই সামান্য মূর্খের জন্য জবাব প্রস্তুত যে করতে পারেননি!!
ভাবতেই অবাক লাগে, কিভাবে মিথ্যা বলে বলে এখনো গলা ফাটাচ্ছেন?????
অজল দেওয়ান
'গায়ে লাগার' মতো গবেষণা আপনি করছেন, এমনটি ভাবছেন কেনো? আর মিথ্যা বলে গলা আমি ফাটাইনি। এরকম দশ জন ব্যাক্তির উক্তি তুলে দিয়ে নিজের মতো একটি বক্তব্য দাঁড় করালেই সেটাকে আর যা-ই হোক গ+এষণা বলা যায় না। আমি আমার বক্তব্য পরিষ্কার করতে সেসময়কার পত্রিকার কাটিং পর্যন্ত হাজির করেছি। প্রমাণ ছাড়া কথা বলার মতো পাত্র আমি নই। কিন্তু আমরা বোধ হয় এখানে গবেষণা নিয়ে কথা বলছি না। কথা বলছি, আমি ১১ টি 'গণহত্যা'র কথা 'স্বীকার' করেছি কি না। একবাড় বললেন, আমি স্বীকার করেছি, আরেকবার বললেন সেজন্যই আপনি 'গবেষণা' করছেন। কোনটি সত্যি?
ভাইরা সত্য কিন্তু একাধিক হয় না। আপ নাদের আলোচনায় বুঝা জাচ্ছে, কেউ কেও তথ্য লুকিয়ে ছেন।
রাইট ভ্রাতা, একই সময়ে সত্য একটাই... দুইটা নয়। তথ্য লুকানোর এখানে বিষয় নয়, এখানে বিষয় হচ্ছে সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা।
অজল দেওয়ান
হা হা! ধরতে পেরেছেন তাহলে।
গায়ে লাগার মতো গবেষণা করছি কি করছি না সেটা বিচারের দায়িত্ব তো আপনাকে দেইনি। আপনি এখানে বিচার করলেই বা কি না করলেই বা কি?? বিচার তো আর্মিরাও করেনি, দেশ করেনি। তাতেই কি সব পালটে যাবে??
প্রথমেই বলেছি সে সময়ে মিডিয়াতে কি বলেছিল?? পাহাড়ি সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছিল তারা হামলা করেছে। আপনি দয়া করে তখনকার সময়ে সাপ্তাহিক দেশ ম্যাগাজিন ঘেঁটে দেখবেন। আমার লেখাটি তাদের ইনভেস্টিগেশনের উপর লেখা।
আশা করছি আগে পড়বেন এরপর যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে আপনি যেমন পত্রিকার ছবি দিলেন আমিও দিতে পারি।
আর আপনি যদি মনে করেন আমি মিথ্যা তথ্য দিচ্ছি তাহলে আপনাকে ঘটনা বলার অনুরোধ করব।
অজল দেওয়ান
আপনি এমন গবেষণা করছেন, সেটা আমার 'গায়ে লাগছে' কি না, তার বিচারের দায়িত্ব তো আমারই, তাই না? কিন্তু বুঝতে পারছি না, সেটা বিচারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিচ্ছেন কেন। এনিওয়ে এখানে তমুক সপ্তাহিক আর অমুক ম্যগাজিনের কথা না বলে, রিজনেভল ও গ্রহণযোগ্য রেফারেন্সটা পোস্টে দিতে পারতেন। দেননি। কেন? সেটা মগজ বলবে।
আর গবেষণার জন্য দশ জনের বক্তব্যই যথেষ্ট বলে মনে করি। বিভিন্ন মানুষের কথা, বিভিন্ন প্রকাশনার কথা যদি আপনার গায়ে না লাগে তবে কিছু বলার নাই।
অজল দেওয়ান
প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক। এখনো আমরা পাহাড়ি-বাঙালি ভেদাভেদ নিয়ে মানুষ হত্যা করার দায় একে অপরের ঘাড়ে চাপাচ্ছি, কিন্তু 'মানুষ মরছে' এটা আমরা দেখতে পাইনা! আমরা আসলেই দিন দিন বর্বর থেকে বর্বরতর হয়ে যাচ্ছি।
আমরা আরও বর্বর হয়ে যাবো, যদি এতগুলো মানুষকে ঠান্ডা মাথায় খুন করার পর, সেটা নিয়ে আরও অপপ্রচার করার সুযোগ দেয়া হয়।
Post new comment